কৃষ্ণনাথ কলেজের সংস্কৃত বিভাগ তার স্নাতকোত্তর শাখার গ্রন্থাগারটি সংস্কৃতজ্ঞ মদনমোহন তর্কালঙ্কারের নামে উৎসর্গ করল। কলেজে শনিবার অনুষ্ঠানের আয়োজনও করে সংস্কৃত বিভাগ। মদনমোহন তর্কালঙ্কারের নামে উৎসর্গীকৃত ওই গ্রন্থগার কক্ষের দ্বারোদ্ঘাটন করেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য করুণাসিন্ধু দাশ।
‘পাখি সব করে রব/ রাতি পোহাইলো/ কাননে কুসুম কলি/ সকলই ফুটিল...’ কবিতার রচয়িতা মদনমোহন তর্কালঙ্কারের জন্ম ১৮১৭ সালে। বিদ্যাসাগরের সহপাঠী মদনমোহন নারীশিক্ষার পাশাপাশি বিধবা বিবাহ প্রবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন। বেথুন স্কুল প্রতিষ্ঠায় সহযোগী ছিলেন তিনি।
কৃষ্ণনাথ কলেজের অনুষ্ঠানে ‘ঊনবিংশ শতকের বাংলার নারী শিক্ষা’ বিষয়ক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। অংশ নেন উপাচার্য করুণাসিদ্ধুবাবু ও রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত ডিন নির্মল দাশ। এছাড়াও কৃষ্ণনাথ কলেজের সংস্কৃত বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিভাগীয় প্রধান কেদারেশ্বর চক্রবর্তী বক্তব্য রাখেন। |
অনুষ্ঠানে মদনমোহন তর্কালঙ্কারের জীবনী নিয়ে আলোচনায় বহরমপুর কলেজের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মৃণালকান্তি চক্রবর্তী বলেন, “১৮৫৭ সালে প্রথম বিধবা বিবাহ হয়। ওই বিয়ের পাত্র শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্ন এবং পাত্রী ছিলেন কালীমতি। তাঁদের দুজনের সন্ধান ও যোগাযোগ করিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে মদনমোহন তর্কালঙ্কার ছিলেন অন্যতম।”
কলেজের সংস্কৃত বিভাগীয় প্রধান অমল ভট্টাচার্য বলেন, “বিদ্যাসাগর মহাশয়ের অনেক আগে মদনমোহন তর্কালঙ্কার ১৪টি সংস্কৃত বই সম্পাদনা করেন। সংস্কৃত ভাষা, নারী শিক্ষা, বিধবা বিবাহ এবং আমাদের কলেজ প্রতিষ্ঠায় তাঁর অবদানের কথা স্মরণে রেখে মদনমোহন তর্কালঙ্কারের নামে গ্রন্থাগারটির নাম রাখা হয়েছে।”
১৮৫৩ সালে তৎকালীন বহরমপুর কলেজ অধুনা কৃষ্ণনাথ কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্যোক্তা ও অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তিনি। মদনমোহন তর্কালঙ্কার ১৮৫০ সালে জজ পণ্ডিত রূপে বহরমপুরে আসেন। এর পরে ১৮৫৫ সালে পদোন্নতি হয়ে তিনি বহরমপুরের ডেপুটি কালেক্টর হন। সেই সময়ে তিনি বহরমপুর কলেজ অধুনা কৃষ্ণনাথ কলেজ গড়ার ব্যাপারে উদ্যোগী হন। এর পরে ১৮৫৭ সালে তিনি কান্দির ডেপুটি কালেক্টর পদে যোগ দেন। |