কোথাও খেজুর পাতার মূর্তি, কোথাও আবার মাদুরের মণ্ডপ। শিল্পশহরের বিশ্বকর্মা পুজোয় এ বার থিমের রমরমা।
শনিবার বিকেল থেকেই মানুষের ঢল হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে। ছোট-বড় সব মিলিয়ে শ’পাঁচেক পুজো হচ্ছে এ বার হলদিয়ায়। জাকজমক, আড়ম্বর, আলোর রোশনাই ছাপিয়ে গিয়েছে গত কয়েক বছরের পুজোকে। কয়েক লক্ষ টাকা দিয়ে তৈরি হয়েছে মণ্ডপ, মূর্তি। পেট্রোকেমিক্যালসে যেমন দামী কাঁচামাল পলিমার দিয়ে তৈরি হয়েছে মূর্তি। ইন্ডিয়ান অয়েলে আবার দু’টি পুজো। একটি কর্মচারী, অন্যটি ঠিকাদার-কর্মচারিদের। পুজো কমিটির কর্তা দেবজ্যোতি ঘোষ জানান, প্রায় দু’লক্ষ টাকা দিয়ে প্যাগোডার আদলে তৈরি হয়েছে মণ্ডপ। তবে এ বার শিল্পশহরের পুজোয় রয়েছে বৈচিত্র্য। সিটি সেন্টারে দক্ষিণের চিনি সংশোধনাগার ‘শ্রী রেনুকা সুগারের’ বিশ্বকর্মা যেমন পরিবেশ বান্ধব। নারকেলের ছোবড়া, পাতা-সহ গাছের বিভিন্ন জিনিস দিয়ে মূর্তি তৈরি হয়েছে। কয়েক হাজার খেজুর পাতা দিয়ে তৈরি হয়েছে এক্সাইড ইন্ডিয়ার মূর্তি। বৌদ্ধ গুম্ফার আদলে চটের মণ্ডপ। হলদিয়া ট্যাঙ্কার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের পুজোয় ব্যবহার করা হয়েছে মাদুর। গোটা মণ্ডপে মাদুর কাঠির কাজ চোখে পড়বে। পাশাপাশি মার্কাস অয়েল ও ধানসিরি পেট্রোকেম, হিন্দুস্থান ইউনিলিভার, টাটা কেমিক্যালসের মণ্ডপ ও মূর্তি চোখ ধাঁধানো। |
এ দিকে, এ বছর বৃষ্টিতে সে ভাবে মূর্তি তৈরি করতে পারেননি হলদিয়ার মৃৎশিল্পীরা। প্রতিমা শিল্পী নন্দ জানা, তপন প্রামাণিকেরা বলেন, “যা তৈরি করেছি সব বিক্রি হবে কি না তা নিয়ে রীতিমতো আশঙ্কায় ছিলাম। তবে বিক্রি ভালই হয়েছে।” শনি ও রবিবার দু’দিনে শহরের প্রায় ১৮টি পুজোর উদ্বোধন করেছেন সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, “এ বার ভাল প্যাকেজ পাওয়ায় শ্রমিকেরা বেশ খুশি। বিভিন্ন কারখানায় বেতন বৃদ্ধি পেয়েছে। পেট্রোকেমে ১০ শতাংশ, হুগলি মেট কোকে ১৯ শতাংশ, ধানসেরি ও এক্সাইডে শ্রমিকেরা প্রায় ২০ শতাংশ হারে বোনাস পাচ্ছেন।”
হলদিয়া বন্দরের গেটেও এ বার একাধিক পুজো হয়েছে। গ্রাম এবং শহরের কয়েক হাজার মানুষ এসেছেন আপাত নিষিদ্ধ হলদিয়া বন্দরে। ধীরে ধীরে বন্দরমুখী মানুষের লাইন লম্বা হয়েছে। শনিবার পেট্রোকেমিক্যালসে পুজোর উদ্বোধন করেন শুভেন্দুবাবু। ছিলেন বিধায়ক শিউলি সাহা এবং পেট্রোকেমের আধিকারিক সুকুমার মিত্র। অনুষ্ঠানে শুভেন্দুবাবু বলেন, “পেট্রোকেমের অর্থনেতিক সমস্যার জট কেটেছে। সম্প্রসারিত হবে হলদিয়া পেট্রোকেম। তখন সর্বাগ্রে গুরুত্ব দেওয়া হবে উদ্বাস্তু জমিহারাদের।” |