পুজোর দিন পনেরো বাকি, আর টি-টোয়েন্টির ঢাকে পড়ল কাঠি।
আবার চার-ছয়ের ফুলঝুরি। মাঠ জুড়ে মেহফিল। ডিজে-র জগঝম্প। চিয়ারলিডারের নাচ। শাহরুখের মুখ। কেকেআর নামছে। আইপিএলের বদলে এ বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ...।
শুনতে যতই গালভরা শোনাক, উত্তেজনার ছিটেফোঁটাও কিন্তু রবিবার হায়দরাবাদে নেই। দুপুরের দিকে নাইটরা প্র্যাক্টিসে নামার পর যে সব কচিকাঁচা মুখগুলো উঁকিঝুঁকি মারছিল, তারা সবাই বিনিপয়সার দর্শক। টিকিট কেটে ম্যাচ দেখার কোনও গল্প নেই। অর্ধেক লোক জানেনই না, চ্যাম্পয়িন্স লিগ বলে কোনও টুর্নামেন্টের কোয়ালিফায়ার শুরু হচ্ছে। উল্টে অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন, এটা বুঝি দ্বিতীয় আইপিএল হতে যাচ্ছে। চুয়াল্লিশ হাজার দর্শকাসনের স্টেডিয়ামে টিকিট বিক্রি এ পর্যন্ত মেরেকেটে সাত হাজার। যার মধ্যে পাঁচ হাজারই কমপ্লিমেন্টারি! বরং লোকে অনেক বেশি আলোচনায় ডুবে আজহার-পুত্রের মৃত্যু নিয়ে। আয়াজউদ্দিন চলে যাওয়ার দু’দিন পরেও আফশোস যাচ্ছে না নিজামের শহরের।
হায়দরাবাদ ক্রিকেট সংস্থার কর্তাদের ধারণা ছিল, সোমবার শাহরুখ এলে কিছু লোক হবে। কিন্তু ঘটনা হচ্ছে, সোমবার অকল্যান্ড এসেস-এর বিরুদ্ধে নাইটদের উদ্বোধনী ম্যাচে কিং খান আসছেন না। তিনি কাজে আটকে পড়েছেন। এই কেকেআর আইপিএলের মতো হৃষ্টপুষ্ট টিম নয় যে, টিম মালিক না এলেও মাঠ ভরিয়ে দেবে। গৌতম গম্ভীর, ইয়ন মর্গ্যান ‘মাইনাস’-এর দলে। কোয়ালিফাইং পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচের আগে হাজিরা দিতে পারছেন না ব্র্যাড হাডিনও। মনোজ তিওয়ারির এ দিন রাতে ঢুকে পড়ার কথা ছিল। কিন্তু বিমান-বিভ্রাটে পড়ে তাঁর আসতে-আসতে মঙ্গলবার সকাল। তবু নাকি জেটল্যাগ সামলে তিনি খেলবেন। টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে তেমনই জানানো হল। যা শোনা যাচ্ছে তাতে, সোমবার নাইটদের ভিনদেশি তারা বলতে কালিস, ব্রেট লি, সাকিব আল হাসান এবং রায়ান টেন ডাশকাটে। সঙ্গে দেশজ নক্ষত্র ইউসুফ পাঠান।
তবু নাইটদের এই ভাঙাচোরা দলই যতটুকু যা মনোবল চ্যাম্পিয়ন্স লিগ কর্তাদের। উপ্পলে উপস্থিত এমন এক কর্তার বক্তব্য, মুম্বইয়ের হয়ে সচিন তেন্ডুলকরের নামা অনিশ্চিত। চেন্নাইয়ের হয়ে ধোনি নামবেন, কিন্তু ইংল্যান্ড সফরের পর তাঁরও টিআরপি কিছুটা কমেছে। পড়ে আছে শুধু কিং খানের কেকেআর। যারা জিততে থাকলে ঘুমিয়ে থাকা টুর্নামেন্ট জাগতেও পারে। এবং নাইটদের নাকি গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়া কঠিন কিছু নয়।
প্রতিপক্ষের যা হাল, তাতে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন না হওয়াটাই কঠিন। অকল্যান্ড টিমে চেনা ক্রিকেটার হাতে গোনা। মার্টিন গাপ্টিল, লুই ভিনসেন্ট, কাইল মিলস, ডারেল টাফি। অধিনায়ক গ্যারেথ হপকিন্স। খেলেছেন সাকুল্যে চারটি টেস্ট, পঁচিশটা ওয়ান ডে। বয়স পঁয়ত্রিশ!
এই হল নাইটদের উদ্বোধনী ম্যাচের বিপক্ষ। সঙ্গে দোসর কিম্ভুত নিয়ম। কোয়ালিফায়ারের অন্য গ্রুপ থেকে দল উঠবে একটা। নাইটদের গ্রুপ থেকে দু’টো!
ভরসা কোথায় এর পরেও আর সন্দেহ থাকে কী? |