প্রয়াগ ইউনাইটেড ১ (জোসিমার)
চিরাগ ইউনাইটেড ০
|
থর থর করে চার পাশ কাঁপছে। নড়ছে প্রেস বক্স। দুলছে ল্যাপটপ। ম্যাচ শেষ হওয়ার মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই হঠাৎ আতঙ্কের ছায়া নেমে এল যুবভারতীতে। ভূমিকম্পর জন্য ততক্ষণে জড়সড় হয়ে এক কোণে জটলা বেঁধে দাঁড়িয়ে পড়েছে সবাই। ভয়ে।
মাঠের বাইরের কুড়ি সেকেন্ডের সেই কম্পন মাঠের ভিতরে নব্বই মিনিট অনুভব করল চিরাগ ইউনাইটেড কেরল। প্রয়াগের আতঙ্কে রবিবার ফেডারেশন কাপের ম্যাচে ঠিক একই ভাবে জড়সড় হয়ে নিজেদের ছোট বক্সের সামনে জটলা বেধে দাঁড়িয়ে ছিলেন চিরাগ ফুটবলাররা। গোটা নব্বই মিনিট। ভ্যাবাচ্যাকা, দিশাহীন অবস্থা। কেউ জানেন না, কার ভূমিকা কী। অ্যালান ডায়াস-মনজিৎ সিংহদের নড়াচড়ার ওপর যেন অদৃশ্য নিষেধাজ্ঞার বোর্ড ঝুলছে। সেন্টার লাইন পেরোনের সাহস পর্যন্ত জোগাতে পারছেন না তাঁরা। রক্ষণ জমজমাট করতে করতেই শেষ বাঁশি পড়ে গেল। ম্যাচের পর চিরাগের কোচ কুন্নিকৃষ্ণন বলছিলেন, “এই গরমে খেলা যায় না। দলে আরও বিদেশি ফুটবলার লাগবে। না হলে জেতা যাবে না।” |
নায়ক জোসিমারকে অভিনন্দন ইয়াকুবুর। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস। |
চিরাগ হতাশ করলেও মর্যাদার লড়াইয়ে সসম্মানে উত্তীর্ণ প্রয়াগ ইউনাইটেড। প্রথম ম্যাচেই তারা চোখে আঙুল দিয়ে বুঝিয়ে দিল, প্রয়াগের ধারে কাছে ঘেঁষার ক্ষমতা নেই চিরাগের। গতি, বল কন্ট্রোল থেকে শুরু করে বুদ্ধিদীপ্ত ফুটবল, পাসিং- সব বিভাগেই এগিয়ে সঞ্জয় সেনের দল। অর্থাৎ দু’টো দলের তুলনাই অপ্রাসঙ্গিক। ফেডারেশন কাপের মতো জাতীয় টুর্নামেন্টে খেলার জন্য এখনও পুরোপুরি প্রস্তুত নয় চিরাগ। ফুটবলারদের মধ্যে তালমিলের মারাত্মক অভাব। সাত জন মিলে ডিফেন্স করছেন, কিন্তু একটা বল ক্লিয়ার করার ক্ষমতা নেই। সারি সারি সেই পায়ের জঙ্গলের ফাঁক দিয়েই অনায়াসে গোল করে বেরিয়ে গেলেন জোসিমার। যদিও ব্রজিলিয়ানের গোলে অবদান বেশি কেইন ভিনসেন্টের ফ্রি কিকের। চিরাগে এক মাত্র চোখ টানলেন গোলকিপার শরৎ। দুর্দান্ত কিছু গোল বাঁচালেন তিনি। কিন্তু এতে কোনও সন্দেহ নেই, কুন্নিকে এখনও প্রচুর খাটতে হবে।
চিরাগকে হারিয়ে প্রয়াগ নিজেদের সফর শুরু করলেও চিন্তার কালো মেঘ ঘুর ঘুর করছে তাদের মাথার ওপরেও। এই ম্যাচ অন্তত পাঁচ গোলে জিততে পারতেন লালকমলরা। কিন্তু গোল নষ্টের ঘনঘটায় এক গোলেই থেমে গেল প্রয়াগের চাকা। তিনটে সুযোগ নষ্ট করলেন একা ভিনসেন্টই। খালি মাঠে হোঁচট খেলেন। অকারণে হামাগুড়ি দিলেন। প্রয়াগ কোচ সঞ্জয় অবশ্য বললেন, “সবে এসেছে। কৃত্রিম ঘাসে খেলার অভিজ্ঞতা নেই। মানিয়ে নিতে একটু সময় লাগবে।” কিন্তু হাতে যে বেশি সময় নেই! মর্যাদার ম্যাচ জেতার জন্য প্রয়াগ ফুটবলারদের দু’লক্ষ টাকার পুরস্কার দিলেন কর্তারা। কোচ এবং সাপোর্ট স্টাফদেরও পঞ্চাশ হাজার টাকা দেওয়া হয়।
পরের ম্যাচে এক গোলে পিছিয়ে থেকেও এয়ার ইন্ডিয়াকে ২-১ হারাল স্পোর্টিং ক্লুব দ্য গোয়া। |