আফজল গুরুকে এই প্রশ্নটি আজও কুরে খায়,সংসদ ভবনের সামনে গাড়িতে রাখা বোমাটা কেন ফাটল না।
সংসদ হামলার ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডাজ্ঞাপ্রাপ্ত আসামির সঙ্গে প্রায় দেড় বছর ধরে কথা বলে গিয়েছেন তিহাড় জেলের সুপারিন্টেন্ডেন্ট মনোজ দ্বিবেদী। প্রায় ২০০ ঘণ্টার সেই কথোপকথন ছ’টি পরিচ্ছেদে লিখেও ফেলেছেন মনোজ। ইচ্ছা ছিল, বই হিসেবে প্রকাশ করবেন। কিন্তু অনুমতি মেলেনি। কিন্তু সংসদ হামলার সমস্ত খুঁটিনাটি-সহ আফজলের জীবন সম্পর্কে বহু তথ্য উঠে এসেছে সেই লেখায়। কী ভাবে বিস্ফোরক জোগাড় হয়েছিল, দিল্লিতে থাকার ব্যবস্থা কী ভাবে হয়েছিল, সংসদ ভবনের বিশদ তথ্য জড়ো করার কাজে কী ভাবে বিদেশিদের ব্যবহার করা হয়েছিল, বিস্তারিত জানিয়েছে আফজল।
কেন সংসদে বিস্ফোরণ ঘটাতে চেয়েছিল আফজলরা? আফজল মনোজকে জানিয়েছে বিস্ফোরণটা ঘটলে জম্মু-কাশ্মীর সমস্যা আন্তর্জাতিক সমস্যা হিসেবে স্বীকৃতি পেত। তখন সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসার সুযোগ তৈরি হত। তখন কাদের মধ্যস্থ হিসেবে চাওয়া হবে, তা-ও ভেবে রেখেছিল তারা। মনোজ জানাচ্ছেন, “আফজলরা অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসী ছিল যে, বোমাটা ফাটবেই। বিস্ফোরক বোঝাই গাড়িটা পাছে চুরি হয়ে যায়, সেই জন্য আগের রাতে গাড়িটা ওরা এক জন কর্তব্যরত পুলিশের চোখের সামনে রেখে দিয়েছিল। আশ্চর্যের ব্যাপার হল, পুলিশ কর্মীরা কেউই গাড়িটা পরীক্ষা করে দেখেননি।”
২০০৯-এর মার্চ থেকে ২০১০-এর ডিসেম্বর পর্যন্ত আফজলের সঙ্গে কথা বলেছিলেন মনোজ। একটা সময় শৈশবের কথা বলেছে আফজল। কী ভাবে পাকিস্তানে গিয়েছিল, কেমন প্রশিক্ষণ হয়েছিল, সে সব জানিয়েছে। মনোজ বলেন, “আফজল কিন্তু বুঝতে পেরেছিল, ওদের ব্যবহার করা হচ্ছে। তখন ও সব কিছু ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চাইছিল। এক বছর ডাক্তারি পড়েছিল, সরকারি চাকরির পরীক্ষাও দিয়েছিল।”
স্বাভাবিক জীবনে ফেরা আর হয়নি আফজলের। তিহাড় জেলেই ফাঁসির জন্য দিন গুনছে সে।
|