তিন দিন ধরে বৃষ্টি চলছিলই। তার উপরে ভূমিকম্পের ধাক্কায় রীতিমতো বেহাল অবস্থা হয়েছে সিকিমের। এ রাজ্যে মৃতদের মধ্যে রয়েছেন ২ জন সেনা জওয়ানও। সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর সিকিমে দু’জন জওয়ান মারা গিয়েছেন। সেনার দু’তিনটি গাড়ির এখনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। সেগুলির মধ্যে একটি জওয়ান ভর্তি বাসও রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেনার কয়েকটি ভবনও।
পরিস্থিতি সামলাতে সিকিমে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ময়দানে নেমেছে ভারত-তিব্বত সীমান্ত পুলিশ (আইটিবিপি)। উত্তর সিকিমের বিভিন্ন এলাকা থেকে রবিবার ১৫০ জন স্থানীয় বাসিন্দা ও ১৫ জন বিদেশি পর্যটককে উদ্ধার করে সিকিমে নিজেদের ব্যাটালিয়ন হেডকোয়ার্টারে নিয়ে এসেছে আইটিবিপি। পেগং এলাকায় এখনও তল্লাশি ও উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন ৪০০ আইটিবিপি কর্মী ও চারটি চিকিৎসক দলের সদস্যেরা। ভূমিকম্পে আইটিবিপির দু’টি ভবন ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। তবে তাতে কোনও প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি। বিধ্বস্ত ওই রাজ্যের পরিস্থিতি সামাল দিতে পশ্চিমবঙ্গ ও অসম থেকে ৩০০ জন বিএসএফ কর্মী ও চিকিৎসক দল পাঠাচ্ছে কেন্দ্র। পাঠানো হচ্ছে বায়ুসেনার পাঁচটি বিমানও। উদ্ধারকার্যে সেনাবাহিনীর সাহায্য চেয়েছিল রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই সে কাজ শুরু করেছে সেনা। দিল্লি ও কলকাতা থেকে সিকিম গিয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। ওই বাহিনীকে সাহায্য করছে সেনা।
প্রথম কম্পনের আধ ঘন্টার মধ্যে পর পর তিনটি ‘আফটারশক’ (ভূকম্প-পরবর্তী কম্পন) অনুভূত হয় সিকিমে। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, খোদ গ্যাংটকে বাড়ি ভেঙে পড়ে অন্তত ১৮ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৩ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। গ্যাংটকের একটি সিনেমা হলের দেওয়াল থেকে পাথর খসে পড়ে আহত হয়েছেন এক মহিলা। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। ফাটল দেখা দিয়েছে বহু বাড়িতে। ধস নেমে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে গ্যাংটক-নানাং সড়ক। একই হাল পানিহাউস এলাকায় ৩১ নং জাতীয় সড়কের। জল ও বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বাসিন্দারা। দুর্ভোগের সঙ্গে যন্ত্রণা বাড়িয়েছে আতঙ্ক। ভূমিকম্পের সময়ে বাড়ি ছেড়ে পালজোড় স্টেডিয়ামের মতো খোলা জায়গায় আশ্রয় নিতে রওনা দেন বহু মানুষ। বিধানসভা ভবনে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে অনেককে। |