রানি শিরোমণির স্মৃতি-বিজড়িত কর্ণগড়কে পূর্ণাঙ্গ পর্যটন-কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে উদ্যোগী হয়েছে মেদিনীপুর-খড়্গপুর উন্নয়ন পর্ষদ (এমকেডিএ)। তৈরি হয়েছে পরিকল্পনা। কী ভাবে এই পরিকল্পনা রূপায়ণ করা যায়, তা দেখতে এলাকা পরিদর্শন করলেন এমকেডিএ’র কর্তারা। এলাকা ঘুরে দেখার পাশাপাশি তাঁরা গ্রামবাসীদের সঙ্গেও কথা বলেন। শোনেন তাঁদের মতামত। এমকেডিএ’র এই উদ্যোগে কর্ণগড়ে এখন খুশির হাওয়া। গ্রামবাসীদের বক্তব্য, শুধু পরিকল্পনা করেই থেমে থাকলে হবে না। যত দ্রুত সম্ভব কাজ শুরু করা উচিত। এই এলাকায় ইকো-ট্যুরিজম পার্ক হলে অনেকেই আসবেন। ফলে, গ্রামের আর্থ-সামাজিক অবস্থাও দ্রুত পাল্টাবে। দ্রুত কাজ শুরুর ব্যাপারে আশাবাদী উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা মেদিনীপুরের বিধায়ক মৃগেন মাইতিও। তাঁর কথায়, “পরিকল্পনা তৈরি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলেই কাজে এগোনো হবে।”
শুধু রাস্তা, কালভার্ট তৈরিতে সীমাবদ্ধ না-থেকে আয় বাড়াতে এ বার নিজস্ব সম্পদ তৈরিতেই বেশি জোর দেবে এমকেডিএ। পর্ষদ সূত্রে খবর, সেই মতো সম্পদ বাড়ানোর একটি পরিকল্পনাও তৈরি করা হয়েছে। এমকেডিএ কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যা, শহর ও তার আশপাশের এলাকায় উন্নয়নের কাজ অব্যাহত রাখতে গেলে আরও অর্থ প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের ক্ষমতা সীমিত। তাই নিজস্ব সম্পদ তৈরিতে জোর দেওয়া হচ্ছে। সম্পদ বাড়লে স্বাভাবিক ভাবেই উন্নয়ন-কাজ আরও গতি পাবে। এ ক্ষেত্রে পিপিপি মডেলে (সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব) কাজ করতেও অসুবিধা নেই। |
রানি শিরোমণির স্মৃতি-জড়িত কর্ণগড়কে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা দু’মাস আগেই নেয় এমকেডিএ। এ ক্ষেত্রে প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে এক কোটি টাকা। কাজ শুরুর আগে সবদিক খতিয়ে দেখতেই শনিবার দুপুরে কর্ণগড়ে আসেন এমকেডিএ’র কর্তারা। মা মহামায়া-র মন্দির ও তার চারপাশ ঘুরে দেখেন তাঁরা। প্রচুর গ্রামবাসী জড়ো হয়েছিলেন। তাঁদের সঙ্গেও কথা হয়। এলাকা ঘুরে দেখার পর পর্ষদের এক আধিকারিক বলেন, “এখানে পার্ক তৈরি করা হবে। একটি পুকুর রয়েছে। এর চারপাশ সাজানোরও পরিকল্পনা রয়েছে।” পাশাপাশি তাঁর বক্তব্য, “এখানে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠলে স্থানীয়দের একাংশ স্বনির্ভর হতে পারবেন। কারণ, ব্যবসার নানা সুযোগ তৈরি হবে।” সূত্রের খবর, এ জন্য এখানে একটি বাজার তৈরির কথাও ভাবা হচ্ছে। গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলে এই প্রকল্প নিয়ে এগোনোর ব্যাপারে আশাবাদী এমকেডিএ’র চেয়ারম্যান। তাঁর কথায়, “এলাকার মানুষের সঙ্গে আবার কথা বলব। প্রকল্পের জন্য কিছু জমিও প্রয়োজন।”
ইতিমধ্যেই জেলার পর্যটন-মানচিত্রে জুড়ে গিয়েছে মন্দিরময় পাথরার নাম। এমকেডিএ’র উদ্যোগে সেখানে এ বার জুড়তে চলেছে কর্ণগড়। তবে পরিকল্পনা আর রূপায়ণ, ভিন্ন ব্যাপার। তাই আপাতত অপেক্ষাই। |