নিজস্ব সংবাদদাতা • সাঁইথিয়া |
সাঁইথিয়া রেললাইনের পূর্ব-পশ্চিমে চলে গিয়েছে শহরে ঢোকার একমাত্র রাস্তা। আর উত্তর-দক্ষিণে চলে যাওয়া রেল লাইনের উপরে একটি সেতু রয়েছে। যার সঙ্গে সাঁইথিয়া শহরে ঢোকার একমাত্র রাস্তার যোগও রয়েছে। এক দিকে যেমন রাস্তা সংস্কার না হওয়ায় স্কুল-কলেজ পড়ুয়া, সাধারণ বাসিন্দাদের চলাফেরা করতে সমস্যা হয়। তেমনি ওই রেলসেতু সঙ্কীর্ণ হওয়ায় দু’দিক থেকে গাড়ি ঢুকে গেলে যানজট তৈরি হয়। পুর কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, শহরের ওই রাস্তাটি পূর্ত (সড়ক) দফতরের। বার বার বলা হলেও ওই দফতর কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। তবে রাস্তাটি যার অধীনে হোক না কেন ভুগতে হচ্ছে সাধারণ মানুষ থেকে স্কুলপড়ুয়া সকলকেই।
ইটেগড়িয়া হাইস্কুলের শিক্ষক কৌশিক দাস বলেন, “সাঁইথিয়া থেকে মোটরবাইকে করে স্কুলে যাতায়াত করি। রাস্তার এমন অবস্থা কখনও দেখিনি। এমনিতে যানজটের কারণে মাঝে মধ্যে দীর্ঘক্ষণ থমকে যেতে হয়। তার উপরে খানাখন্দে ভরা রাস্তা দিয়ে যেতে আরও সমস্যা হয়।” তাঁর কথায়, “একেবারে সিউড়ির দিক থেকে শহরে ঢুকতে সন্ধানী মোড়, মোহনবাগান মোড়, পোস্ট অফিসের সামনে রাস্তা এমন বেহাল হেঁটেও চলাফেরা করা দায়।” সাঁইথিয়া হাইস্কুলের শিক্ষক পঙ্কজ মণ্ডল বলেন, “রেলসেতুর পূর্ব দিকের রাস্তা আরও ভয়াবহ। থানা, হাসপাতাল, হাইস্কুলএ সব প্রতিষ্ঠানের সামনের রাস্তার অবস্থা কী রকম বলে বোঝানো যাবে না।” একই বক্তব্য সাঁইথিয়া সেন্ট অ্যান্ড্রুজ স্কুলের শিক্ষিকা নাসু মনসুরিরও। তিনি বলেন, “বাচ্চাদের সঙ্গে আমি স্কুলে গাড়িতেই যাই। স্কুল থেকে বাড়ি না ফেরা পর্যন্ত আতঙ্কে থাকি। চালকেরা গাড়ি ধীরে চালান বলে রক্ষা।” |
স্কুলগাড়ির চালক অনিল চৌধুরীর সংক্ষিপ্ত জবাব, “রাস্তার অবস্থা আগে থেকেই খারাপ ছিল। বর্ষায় আরও বেহাল হয়ে পড়েছে। ঝুঁকি নিয়ে আমাদের গাড়ি চালাতে হয়।” সাঁইথিয়া বাস মালিক কল্যাণ সমিতির সহ-সম্পাদক পতিতপাবন দে, বাস চালক সোনা দাসদের ক্ষোভ, “রাস্তা বেহালের জন্য প্রতিদিনই গাড়ির পিছনে হাজার হাজার টাকা খরচ হচ্ছে।” এই অবস্থায় অবিলম্বে রাস্তা সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষিকা, পথচলতি মানুষ থেকে সকলেই। এ ব্যাপারে তাঁরা প্রশাসনের উদাসীনতাকে দায়ী করেছেন। শহরের রাস্তা সংস্কারের দাবিও জানিয়েছে সব রাজনৈতিক দল।
পুরপ্রধান বীরেন্দ্রকুমার পারখ বলেন, “সত্যিই রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। উদাসীনতার অভিযোগ ঠিক নয়। পূর্ত দফতরে দীর্ঘ দিন ধরে রাস্তা সংস্কারের ব্যাপারে জানিয়ে আসছি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।” তিনি জানান, বাসিন্দাদের কথা ভেবে ইট-রোলার চালিয়ে গর্ত ভরাটের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পূর্ত দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সুব্রত দাস বলেন, “পশ্চিমের শুরু থেকে রেলসেতু পর্যন্ত রাস্তা আমাদের। রাস্তা সংস্কারের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। সেতু থেকে পূর্ব প্রান্ত পর্যন্ত পূর্ত দফতরের (সড়ক)-এর অধীন।”
ওই দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার জাহ্নবী কোনারের দাবি, “চৌহাট্টা পর্যন্ত আমাদের রাস্তা। রাস্তার কাজ অনেক দিন আগেই শুরু হয়েছিল। আর্থিক সঙ্কটের কারণে কাজ করা যায়নি। বর্ষার পরে ফের শুরু করা হবে।” জেলাশাসক জগদীশ মিনা বলেন, “রাস্তার খারাপ অবস্থার বিষয়টি নজরে আছে।” তিনি জানান, আজ সোমবার, পূর্ত দফতরের সঙ্গে আলোচনায় বসা হবে।
|