স্কুল ও মাদ্রাসা পরিচালন সমিতির অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনে বড় সাফল্য পেল তৃণমূল কংগ্রেস। রবিবার কোচবিহার জেলার তিনটি হাই স্কুল এবং একটি মাদ্রাসা মিলিয়ে মোট চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নির্বাচন হয়। রাতে ফল প্রকাশের পরে দেখা যায় চারটি প্রতিষ্ঠানে ২৪টি আসনের মধ্যে ১৯টি তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থীরা দখল করেছেন। কংগ্রেস ও সিপিএম সমর্থিত প্রার্থীদের দখলে গিয়েছে মাত্র ২টি করে আসন। ফরওয়ার্ড ব্লক সমর্থিতরা পেয়েছেন ১টি আসন। কোচবিহার জেলা বামফ্রন্ট নেতা তথা বিধায়ক উদয়ন গুহ বলেন, “বামেদের দখলে থাকা বিধানসভা এলাকার তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নির্বাচন হয়েছে। কর্মীদের একাংশ আত্মতুষ্টিতে থাকায় ফল খারাপ হয়েছে।” চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দিনহাটার চৌধুরীহাট হাই স্কুল ও কোচবিহার সদরের চিলকিরহাট সফিয়াবাদ মাদ্রাসা বামেদের দখলে ছিল। ওই দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালন সমিতি তৃণমূল সমর্থিতরা ছিনিয়ে নেয়। তুফানগঞ্জ মুগাভোগ হাই স্কুলের পরিচালন সমিতি দখলে রেখেছে তৃণমূল। কোচবিহার শহরের রামভোলা হাই স্কুলের পরিচালন সমিতি বামেদের দখলে থাকলেও কংগ্রেস ও তৃণমূলের ‘অফিসিয়াল গোষ্ঠী’ সমর্থিত জোট প্রার্থীরা ৩টি আসন দখল করেন। বাম সমর্থিতরা জিতেছে ৩টি আসনে। তৃণমূল জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “নয়া সরকারের প্রতি অভিভাবকদের পূর্ণ আস্থার জন্য নির্বাচনে ওই ফল হয়েছে। কংগ্রেসের একাংশ রামভোলা হাই স্কুলে প্রার্থী দিয়ে ভোট ভাগাভাগির সুযোগ করে না-দিলে বামেরা মুছে যেত।” কোচবিহারের জেলা কংগ্রেস সভাপতি শ্যামল চৌধুরী বলেন, “যেখানে সম্ভব হয়েছে জোট করে লড়াই করেছি। চিলকিরহাট মাদ্রাসায় তৃণমূল সমর্থিতরা বিরোধী প্যানেলের প্রার্থীদের ভয় দেখিয়েছে। তবে রামভোলা হাই স্কুলে জোট ৬টি আসনেই জিতত। বাম সমর্থিতরা কেন ৩টি আসন পেল সেটা মানুষ ভাল বলতে পারবে।” দল ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, তুফানগঞ্জের মুগাভোগ হাই স্কুল, চিলকিরহাট মাদ্রাসা নির্বাচনে একক লড়াইয়ে নামেন তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থীরা। মুগাভোগ হাই স্কুলে ৬টি আসনে কংগ্রেস সমর্থিতদের পরাজিত করে তৃণমূল সমর্থিতরা। চিলকিরহাট মাদ্রাসা নির্বাচনে কংগ্রেস সহ অন্য দলকে হারিয়ে ৬টি করে আসন ছিনিয়ে নেয় তৃণমূল সমর্থিতরা। দিনহাটার চৌধুরীহাট হাই স্কুলে জোট করে তৃণমূল ৫টি এবং কংগ্রেস ১টি আসন দখল করে। কোচবিহার শহরের রামভোলা হাই স্কুলে শাসক দলের দুই জোট সঙ্গীর ‘অফিসিয়াল গোষ্ঠীর’ প্রার্থীদের মধ্যে তৃণমূল সমর্থিত ২, কংগ্রেস সমর্থিত ১ জন ছাড়াও সিপিএম সমর্থিত ২ ও ফরওয়ার্ড ব্লক সমর্থিত ১ জন জয়লাভ করে। স্কুলে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে ছিল কংগ্রেস-তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বের বিরোধী শিবির। ওই গোষ্ঠীর নেতা যুব কংগ্রেস সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেন, “আমরা প্রকৃত কংগ্রেসী। আমাদের সঙ্গে তৃণমূল জোট করলে বাম সমর্থিত প্রার্থীরা একটি আসনও পেত না।” |