তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ
দলীয় সমর্থককে পাড়ায় না মেশার ‘ফতোয়া’
গ্রামে গোলমাল বেধেছিল একটি পারিবারিক বিবাদকে কেন্দ্র করে। তার জেরে দলীয় সমর্থক একটি পরিবারকে পাড়ায় মিশতে না দেওয়ার ফতোয়া জারির অভিযোগ উঠল স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার থেকে আরামবাগের নৈসরাইয়ের গুপ্তপাড়ার বাসিন্দা, প্রীতিকা কোঙার নামে ওই দলীয় সমর্থককে পুকুর ঘাটে, মন্দিরে বা প্রতিবেশীদের বাড়ি যেতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। শুক্রবার এ ব্যাপারে প্রীতিকাদেবী আরামবাগ থানায় স্থানীয় তৃণমূল নেতা দীপক গুপ্ত-সহ সাত দলীয় সমর্থকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সোমবার একই অভিযোগ জানান মহকুমাশাসক অরিন্দম নিয়োগীকে। মাস ছয়েক আগে পারিবারিক বিবাদকে কেন্দ্র করে প্রীতিকাদেবীরা দীপকবাবু-সহ ১১ জন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকের বিরুদ্ধে বাড়িতে হামলার লিখিত অভিযোগ করেছিলেন থানায়। তাঁদের দাবি, সেই অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করতেই এই পরিস্থিতি করা হয়েছে।
মহকুমাশাসক বলেন, “অভিযোগের তদন্ত করে শীঘ্রই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” পুলিশ জানায়, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে। আরামবাগের তৃণমূল বিধায়ক কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা বলেন, “নিতান্তই পাড়াগত ঝগড়াকে কেন্দ্র করে এমন ঘটনা ঘটতে পারে। বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বাঁশ ফেলে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে পুকুরে যাওয়ার রাস্তা। ছবি: মোহন দাস।
প্রীতিকাদেবীর স্বামী লক্ষ্মীনারায়ণবাবু সেনাকর্মী। তিনি কর্মসূত্রে অসমে থাকেন। অসুস্থ শ্বশুর-শাশুড়ি এবং স্কুলপড়ুয়া ছেলেকে নিয়ে গুপ্তপাড়ায় থাকেন প্রীতিকাদেবী। মাস ছয়েক আগে বাড়ি তৈরি করা নিয়ে লক্ষ্মীনারায়ণবাবুর সঙ্গে তাঁর জেঠতুতো ভাই প্রশান্তবাবুর বিবাদ বাধে। তাতে জড়িয়ে পড়েন দীপকবাবু ও পাড়ার কয়েক জন তৃণমূল কর্মী-সমর্থক। তাঁরা প্রশান্তবাবুর পক্ষ নেন। প্রীতিকাদেবীর কথায়, “জুনের গোড়া থেকে মাঝেমধ্যেই ওরা এসে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছিল। এ মাসের গোড়ায় ওদের বলে দিই, মামলা তুলব না। তার পরেই বৃহস্পতিবার থেকে দীপকবাবুর নেতৃত্বে আমাদের পাড়ায় মিশতে না দেওয়ার ফতোয়া জারি করা হল।”
পুকুরের যে ঘাটটি প্রীতিকাদেবী ব্যবহার করেন, সোমবার সেখানে গিয়ে দেখা গেল, বাঁশের বেড়া ও আগাছা দিয়ে রাস্তা আটকানো। প্রীতিকাদেবী বলেন, “স্কুলে যাতায়াতের পথে ওরা ছেলেকেও হুমকি দিচ্ছে। আত্মীয়দেরও বলে দিয়েছে, আমরা গেলে যেন তাড়িয়ে দেওয়া হয়। প্রতিবেশীরাও আমাদের বাড়ি আসছেন না।”
তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে দীপকবাবু বলেন, “পুকুর ও মন্দির আমাদের পরিবারিক সম্পত্তি। প্রতিবেশীরা মিলিত ভাবেই ওই পরিবারটির সঙ্গে না মেশার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ওই মহিলার স্বামী সেনাকর্মী বলে নানা ভাবে ওঁরা পাড়ায় ভয় দেখানোর চেষ্টা করেন। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছেন। আমরা চাই, মহিলা নিজেকে সংশোধন করুন।”
স্থানীয় বাসিন্দা, অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক শ্যাম গুপ্তের দাবি, “আগে প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে বাড়িতে হামলার মিথ্যা অভিযোগ তুলেছিলেন ওই মহিলা। এটা না করার জন্য আমি ওই মহিলাকে বুঝিয়েছিলাম। তিনি দুর্ব্যবহার করেন। এখন মহিলার বিরুদ্ধ পক্ষকে বোঝাচ্ছি।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই পাড়ার এক মহিলা বলেন, “আমাদের বলা হয়েছে, ওই পরিবারের সঙ্গে সংস্রব রাখা চলবে না। কেউ ওদের সঙ্গে মিশলে তাঁরও একই দশা হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.