শহরের বারোয়ারি পুজোয় রাস্তা কিংবা পার্কের জমি ব্যবহারে এ বার কঠোর নিয়ন্ত্রণ চাইছে পুরসভা। সোমবার পুরভবনে অনুষ্ঠিত ‘পুজো প্রস্তুতি’ বৈঠকে পুর-কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বৈঠক শেষে মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “প্রশাসনের নির্দিষ্ট করা জায়গার বাইরে অতিরিক্ত জমি এ বার বারোয়ারি পুজোর অনুষ্ঠানে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। পুজোর দিনগুলিতে শহরের শৃঙ্খলা এবং যাতায়াতে নাগরিক স্বাচ্ছন্দ্য বজায় রাখতেই এই ব্যবস্থা।” একই সঙ্গে তিনি জানান, সদ্য কলকাতা পুলিশের আওতায় আসা যাদবপুর, বেহালা, মেটিয়াবুরুজ-সহ পুরসভার ৪৮টি ওয়ার্ডের ১৭টি থানা এলাকার যান-শাসনে পুলিশকে সব রকম ভাবে সহযোগিতা করা হবে।
মেয়র জানান, শহরের অনেক রাস্তার পাশে এবং পার্কে প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে বারোয়ারি পুজো হচ্ছে। প্রতিটি বারোয়ারি পুজোর উদ্যোক্তাদেরই নির্দিষ্ট পরিমাণ জায়গা ব্যবহারের জন্য প্রশাসনের অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু দেখা গিয়েছে, বহু ক্ষেত্রেই নির্দিষ্ট জায়গার বাইরে অতিরিক্ত জমি দখল করে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ বার তা করতে দেওয়া হবে না। প্রশাসনের নির্দিষ্ট করা জায়গার মধ্যেই অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে হবে। পুরসভার এই নির্দেশ অগ্রাহ্য করলে সংশ্লিষ্ট পুজো কমিটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুজোর দিনগুলিতে বিশেষ ভাবে নজর দেওয়া হচ্ছে পানীয় জল সরবরাহ, নিকাশি এবং পুর-বিদ্যুৎ বিভাগের কাজে। দুর্ঘটনা এবং দুর্যোগ মোকাবিলায় দমকল এবং পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার দায়িত্ব থাকছে পুরসভার বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগের উপরে। পুরসভার প্রতিটি বরো এলাকায় থাকবে পুরসভার মেডিক্যাল টিম। খোলা রাখা হবে পুরসভার স্বাস্থ্য-ক্লিনিকগুলিও। পুজোর দিনগুলিতে ২৪ ঘণ্টা পুর-কন্ট্রোল রুম খোলা থাকবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
পুর-প্রশাসনের সঙ্গে এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা পুলিশ, দমকল, সিইএসসি-সহ আরও কয়েকটি সংস্থার প্রতিনিধিরা।
পুরসভার মেয়র পারিষদ (নিকাশি) রাজীব দেব জানিয়েছেন, পুজোয় বৃষ্টি হতে পারে ধরে নিয়েই আগাম প্রস্তুতির কাজ ইতিমধ্যেই শুরু করা হয়েছে। শহরের সমস্ত রাস্তার গালিপিট সাফাই চলছে। কোনও কারণে নিকাশি নর্দমায় জল আটকে গেলে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে মজুত রাখা হয়েছে এমটি আর, জেটিং মেশিন-সহ আরও কিছু নিকাশির আধুনিক সরঞ্জাম, যা দিয়ে খুব তাড়াতাড়ি নালা সাফাই করা যাবে। এ ছাড়া, জমা জল দ্রুত নামাতে ম্যানহোলের ঢাকনা খুলে দেওয়ার জন্য প্রতিটি বরো কমিটির দফতরে পর্যায়ক্রমে ২৪ ঘণ্টা থাকবেন মোট ১১৪ জন নিকাশি কর্মী।
পুর-প্রশাসনের কর্তারা জানান, শহরে পুরসভার ৪৮টি পাম্পিং স্টেশনের প্রতিটি পাম্পে নিয়মিত নজরদারি চলছে। বিশেষ করে পাম্পিং স্টেশনের বিদ্যুতের লাইন নিয়মিত পরীক্ষা করা হচ্ছে। পাম্পিং স্টেশনের এলাকাভুক্ত নয়, এমন জায়গার জমা জলে দ্রুত নিকাশির জন্য তৈরি রাখা হয়েছে ২৬৪টি পোর্টেবল পাম্প সেট।
|