নিরাপত্তার খাতিরে কলকাতা হাইকোর্ট এবং বিধানসভা ভবন চত্বর থেকে গাড়ির ‘ভিড়’ সরাতে চাইছে কলকাতা পুলিশ।
সোমবার বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান মুখোপাধ্যায়ের ঘরে হাইকোর্ট এবং বিধানসভার নিরাপত্তা নিয়ে কলকাতা পুলিশ, হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল এবং আইনজীবীদের প্রতিনিধিরা বৈঠক করেন। লালবাজার সূত্রে খবর, দিল্লি হাইকোর্ট চত্বরে সাম্প্রতিক বিস্ফোরণের পরিপ্রেক্ষিতে আইনজীবীদের প্রতিনিধিদের পুলিশকর্তারা জানিয়ে দিয়েছেন, হাইকোর্ট এবং বিধানসভা ভবনের ৩০ মিটারের মধ্যে অত্যধিক গাড়ি রাখা হলে তা নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে পারে। কলকাতার পুলিশ কমিশনার রঞ্জিতকুমার পচনন্দা হাইকোর্টের আইনজীবীদের কাছে গাড়ি রাখার কয়েকটি বিকল্প প্রস্তাবও পেশ করেছেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে অসীম রায়-সহ হাইকোর্টের তিন বিচারপতি, রেজিস্ট্রার জেনারেল ও আইনজীবীদের প্রতিনিধিরা আজ মঙ্গলবার হাইকোর্ট এবং বিধানসভা ভবন চত্বর ঘুরে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবেন।
বিধানসভার অধ্যক্ষ এ দিন জানান, পুলিশ কমিশনার বৈঠকে জানিয়েছেন, হাইকোর্ট এবং বিধানসভা এলাকায় খুব বেশি হলে ৪৫০টি গাড়ি রাখা যেতে পারে। কিন্তু বর্তমানে ১২০০টি গাড়ি প্রতিদিন ওই দুই চত্বরে দাঁড়িয়ে থাকে। পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে, হাইকোর্টে আগুন লাগার মতো কোনও ঘটনা ঘটলে গাড়ির ভিড়ে দমকলের গাড়িও সেখানে পৌঁছতে পারবে না। তাই নিরাপত্তার কারণেই গাড়ির ভিড় সরিয়ে দেওয়া জরুরি।
|
হাইকোর্ট চত্বরে গাড়ি তল্লাশি পুলিশের। —ফাইল চিত্র |
অধ্যক্ষ বলেন, “নিরাপত্তার প্রয়োজন কেবল হাইকোর্টেরই নয়, বিধানসভা ভবনেরও রয়েছে। নানা প্রয়োজনে হাইকোর্টে যাঁরা গাড়ি নিয়ে আসেন, তাঁরা অনেক ক্ষেত্রে বিধানসভার সীমানা-প্রাচীরের গা ঘেঁষে গাড়ি পার্ক করেন। বিধানসভা ভবনের পক্ষে তা নিরাপদ নয়।” অধ্যক্ষ জানিয়েছেন, পুলিশের পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, হাইকোর্ট চত্বরে ৪৫০টি গাড়ি থাকতে পারে, বাকি গাড়ি মহাকরণের বিপরীতের পার্কোম্যাটে, পলাশি রোডে এবং স্ট্র্যান্ড রোডের আশপাশে রাখা যেতে পারে।
হাইকোর্ট সূত্রে খবর, পুলিশের প্রস্তাব নিয়ে আইনজীবীদের সংগঠনগুলি আলোচনা করবে এবং শীঘ্রই বিধানসভার অধ্যক্ষ এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে তাদের মতামত জানাবে।
এ দিন অধ্যক্ষের ঘরে বৈঠকে হাজির ছিলেন বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার সোনালি গুহ, আরএসপি-র সদস্য তথা প্রাক্তন সেচমন্ত্রী সুভাষ নস্কর, শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল, কলকাতা পুলিশ কমিশনার-সহ অন্য কর্তারা।
সুভাষবাবু বলেন, “বিধানসভা ভবনের নিরাপত্তার প্রশ্নে ঐকমত্য হয়েছে। আমি অধ্যক্ষকে অনুরোধ করেছি, সমস্যার সমাধানে যেন বেশি সময় না লাগে তা নিশ্চিত করতে।” |