তৎপর পুলিশকর্তারা
লেক পুলিশের ‘দুর্ব্যবহার’ জানিয়ে চিঠি মুখ্যমন্ত্রীকে
ঢাকুরিয়া ব্রিজে পুলিশের হাতে ‘নিগৃহীত’ হওয়ার অভিজ্ঞতার কথা এ বার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরে চিঠি লিখে জানালেন রাজীব সাহা। সোমবার বিকেলে মহাকরণে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে (সিএমও) ওই চিঠি দেন গাঙ্গুলিবাগানের বাসিন্দা রাজীববাবু। চিঠির একটি প্রতিলিপি তিনি দিয়েছেন পরিকল্পনা ও উন্নয়ন মন্ত্রী মণীশ গুপ্তকেও। রাজীববাবু তাঁরই বিধানসভা কেন্দ্রের বাসিন্দা।
অভিযোগটি নিয়ে এ দিন নড়েচড়ে বসেছেন কলকাতা পুলিশের পদস্থ আধিকারিকেরা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজীববাবুর অভিযোগের ব্যাপারে কথা বলতে ডেপুটি কমিশনার (এসইডি) বাসব দাশগুপ্তকে নিজের ঘরে ডেকে পাঠান কলকাতার পুলিশ কমিশনার রঞ্জিতকুমার পচনন্দা। রাজীববাবুর অভিযোগ খতিয়ে দেখে ডিসি-কে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতেও বলেছেন তিনি। যে পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে রাজীববাবুর অভিযোগ, ঘটনার রাতে তাঁদের ভূমিকা ঠিক কেমন ছিল, তার তদন্ত শুরু হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠি কলকাতা পুলিশের ওয়েবসাইট মারফত তিনি কমিশনারকেও ই-মেল করেছেন বলে জানিয়েছেন রাজীববাবু। তিনি বলেন, “মণীশবাবু আমার কথা গুরুত্ব দিয়ে শুনেছেন। কমিশনারের সঙ্গে ফোনেও কথা বলেন তিনি।”
মহাকরণের অলিন্দে রাজীব। সোমবার। —নিজস্ব চিত্র
গত শুক্রবার রাতে ঢাকুরিয়া ব্রিজে দুর্ঘটনার পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত কয়েক জন পুলিশকর্মী তাঁর ও তাঁর স্ত্রী কাকলিদেবীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ করেছেন রাজীববাবু। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়েই সাদা-কালো চেক শার্ট পরা এক ব্যক্তি তাঁকে চড় ও ধাক্কা মারেন। ওই ব্যক্তির হাতে লাঠি থাকায় তাঁকে পুলিশকর্মী বলেই উল্লেখ করেছেন রাজীববাবু। অভিযোগ, ওই ব্যক্তি তাঁর ঘাড় ধরে বলেন, “চল চল, ফুটে যা! একদম দাঁড়াবি না। কোনও নাটক করবি না।” সেই সঙ্গে সুরজিৎ ভট্টাচার্য নামে লেক থানার এক সাব-ইনস্পেক্টর ‘তুই’ সম্বোধন করে তাঁর স্ত্রীর সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ রাজীববাবুর। অভিযোগ, সুরজিৎবাবু বলেন, “তোকে কেন সাহায্য করব? তুই কি পুলিশ?” শুধু তা-ই নয়, বিষয়টি জানাতে লেক থানায় যাওয়ার পরে চেক শার্ট পরা ওই পুলিশকর্মী সেখানেও কাকলিদেবীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ। চিঠিতে রাজীববাবু লিখেছেন, ওই পুলিশকর্মী কাকলিদেবীকে বলেন, “তোরা এখানে? ওহ্ তোরা অভিযোগ করতে এসেছিস? বেশ, কর কর। আমি এ রকমই। তাই তো চোর-ডাকাত ঠান্ডা থাকে! আর অভিযোগ করলে কী হবে, বড়জোর বদলি হব। তোকেও আমার দরজা অবধি টেনে আনব।” চিঠিতে রাজীববাবু লিখেছেন, থানায় তাঁর কথা প্রথম গুরুত্ব দিয়ে শোনেন মণিশঙ্কর মজুমদার নামে এক এস-আই। লিখিত অভিযোগ দেওয়ার কথাও বলেন তিনিই।
এ দিকে, সোমবার রাত পর্যন্ত চেক শার্ট পরা ওই পুলিশকর্মীকে শনাক্ত করা গিয়েছে কি না, সে ব্যাপারে সুস্পষ্ট তথ্য দিতে পারেনি পুলিশ। শুধু তা-ই নয়, লাল টি-শার্ট ও কালো প্যান্ট পরা যে ব্যক্তি রাজীববাবুকে গাড়ি থামাতে বলেছিলেন, তাঁর ব্যাপারেও নির্দিষ্ট তথ্য নেই পুলিশের কাছে। তবে প্রাথমিক তদন্তের পরে অনুমান, ওই দু’জনই পুলিশকর্মী। প্রশ্ন উঠেছে, রাজীববাবু ওই পুলিশকর্মীদের শারীরিক বিবরণ স্পষ্ট জানালেও ঘটনার তিন দিন পরেও কেন শনাক্ত করা গেল না অভিযুক্তদের। পুলিশের সাফাই, তাঁরা লেক থানার পুলিশকর্মী, না ট্রাফিক গার্ডের কর্মী, সে ব্যাপারে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কিন্তু ঘটনার রাতে ওই জায়গায় কাদের ডিউটি ছিল, তা জানলেই ছবিটা স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার কথা। সে কাজ করতে এতটা সময় লাগার কথা নয় বলেই মত পুলিশের একাংশের। ডিসি (এসইডি) বাসব দাশগুপ্ত বলেন, “রাজীববাবু ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগে সেখানে দু’টি দুর্ঘটনায় তিন জন জখম হন। পুলিশ তা নিয়ে ব্যস্ত ছিল। এর মধ্যে রাজীববাবুর গাড়িকে ম্যাটাডর ধাক্কা মারে। তিনি ম্যাটাডরচালকের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন। তা নিয়ে পুলিশের সঙ্গে তাঁর কথা কাটাকাটি হয়। এক অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার রাজীববাবুর অভিযোগ খতিয়ে দেখছেন।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.