আমি তখন নবম শ্রেণি, আমি তখন শাড়ি...।
সেই নবম শ্রেণির আশপাশেই শাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ শুরু। তারপর থেকে সেই যোগ ক্রমশ নিবিড় হয়। আজকের ব্যস্ত জীবনে শাড়ির চল তুলনায় কমলেও উৎসব পার্বণে কিন্তু শাড়িই পড়েন অধিকাংশ মহিলা। কিন্তু কী শাড়ি কিনবেন, কোন শাড়ির কত দাম, কোথায় মিলবে পছন্দসই শাড়ি তা নিয়ে দোলাচলে ভুগতে হয় তাঁদের। সে’সবেরই হদিশ দেওয়ার একটা চেষ্টা রইল এখানে।
বেনাচিতির বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা গিয়েছে তাঁত, বেনারসি, ইক্কত, ব্যাঙ্গালোর সিল্ক, কাঞ্জিভরম, সিফন, পিওর সিল্ক, গাদোয়াল, তসর ছাড়া আরও নানা শাড়ি বাজার ছেয়ে ফেলেছে। হাতের কাজ করা আধুনিক স্টাইলের শাড়িও এ বার এসেছে দেদার। বড় দোকান তো আছেই। পসরা সাজিয়েছে ছোট দোকানগুলিও। এই সব দোকানে যেমন ৫০০ টাকা মূল্যের শাড়ি পাওয়া যাচ্ছে তেমনই দেড়-দু’হাজার টাকা দামের শাড়িও রয়েছে। আবার সারা বছরে একটি দামি শাড়ি কেনার খদ্দেরেরও অভাব নেই। তাঁদের কথা মাথায় রেখে দোকান মালিকেরা চার বা পাঁচ হাজার টাকার শাড়িও রেখেছেন। জারদৌসি, সিফন, সিল্কের উপর হ্যান্ড প্রিন্ট জাতীয় শাড়ি বিক্রি হচ্ছে প্রচুর। একই কথা জানিয়েছেন দুর্গাপুর স্টেশন বাজার, চণ্ডীদাস বাজার বা মামরা বাজারের দোকান মালিকেরাও। |
লালের সঙ্গে ঘিয়ের স্ট্রাইপ, সি-গ্রিন, নস্যি, হলুদ, হালকা নীল রঙ এ বার বাজার মাতাচ্ছে। ষোড়শী থেকে ষাটোর্ধ্ব, রঙের গতানুগতিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছেন সবাই। গত কয়েক বছর জারদৌসির মতো ভারি কাজের শাড়ির রমরমা থাকলেও এ বার কিন্তু তসর, গাদোয়াল, তাঁতের উপরে গুজরাতি ও কাঁথা স্টিচের কাজ করা শাড়ি বাজার মাতাচ্ছে। আর বাজারে এ সব শাড়ির জোগান দিচ্ছে বিভিন্ন বুটিক। দাম এক হাজার থেকে শুরু করে তিন হাজার।
শপিং মলের ছবিটা অবশ্য অন্য রকম। সিটি সেন্টারের একাধিক মল ঘুরে দেখা গিয়েছে, সাবেক নয়, বরং আধুনিক শাড়িই সেখানে বেশি বিক্রি হচ্ছে। দাম হাজার টাকার উপরে। আবার দেড়শো-দুশো টাকা মূল্যের শাড়িও বিক্রি হচ্ছে। দোকানের মালিকদের দাবি, শুধু নিম্নবিত্তরাই নয়, মধ্যবিত্ত বা উচ্চবিত্তরাও ওই কম দামের শাড়ি কিনছেন। কারণ নাকি একটাই, বাইরে থেকে দেখে বোঝার কোনও উপায় নেই, যে শাড়িগুলির দাম এত কম।
সম্প্রতি সিটি সেন্টারে একটি শপিং মলের বারান্দায় বসেছিল শাড়ির মেলা। দুর্গাপুর তো বটেই, কলকাতা থেকেও বিভিন্ন সংস্থা সেই মেলায় যোগ দেয়। খেওয়া, গিজা, কোষা, জাকার্ট বা ভাগলপুরী কটন, সেখান থেকে সবই দেদার কিনেছেন মানুষ। অষ্টমীর সকালে অঞ্জলি হোক, বা নবমীর রাত, কিংবা বিসর্জনের আগে প্রতিমা বরণনানা মুডে, নানা সাজে সাজতে তৈরি দুর্গাপুর। |