ডিওয়াইএফ কর্মী খুনে ধৃত সিপিএমের নেতা
ডিওয়াইএফ কর্মী খুনে জড়িত অভিযোগে সিপিএমের অজয়-জামুড়িয়া জোনাল সদস্য মনোজ দত্তকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
সোমবার দুপুরে জামুড়িয়া থানার সামনে থেকেই তাঁকে ধরা হয়। এর আগে রবিন কাজি হত্যা মামলায় কয়লা মাফিয়া দিনু বাউড়িকে ধরা হলেও চার্জশিট থেকে মনোজবাবুর নাম বাদ দেওয়া হয়েছিল। তবে সিপিএমের দাবি, এ বার তাঁকে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর প্রতিবাদে বিকেলে জামুড়িয়া শহরে একটি মিছিলও করা হয়।
গত ২৭ অগস্ট জামুড়িয়ার খাসকেন্দায় সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষের সময়ে গুলিতে নিহত হন ডিওয়াইএফ কর্মী ভীমরাজ তিওয়ারি। ওই ঘটনায় মোট তিনটি অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। নিহতের পরিবারের তরফে তৃণমূলের ব্লক কার্যকরী সভাপতি মুকুল বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়। তৃণমূলের তরফে পাল্টা অভিযোগে জানানো হয়, সিপিএমের লোকজনের ছোড়া গুলিতেই মৃত্যু হয়েছে ভীমরাজের। সিপিএমের জোনাল সম্পাদক গঙ্গা যাদব এবং জোনাল সদস্য মনোজ দত্তের নেতৃত্বেই গণ্ডগোল পাকানো হয়েছিল বলেও অভিযোগ করেন তৃণমূলের ব্লক যুব সভাপতি গোপীনাথ পাত্র।
পাশাপাশি, এলাকায় বিশৃঙ্খলা তৈরি ও আইন হাতে তুলে নেওয়া-সহ বেশ কিছু অভিযোগে পুলিশ নিজেই একটি মামলা দায়ের করেছিল। ঘটনার রাতেই ওই মামলার সূত্রে ৯ জন এবং নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে এক তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার পরে আর কাউকে ধরা হয়নি। কিন্তু এ দিন দুপুর ১টা নাগাদ জামুড়িয়া থানার সামনে মনোজবাবুর গাড়ি দাঁড় করিয়ে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তবে মনোজবাবুর দাবি, “রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই শাসকদল পুলিশকে দিয়ে এটা করাল। রাজ্য জুড়েই এমন হচ্ছে।”
সিপিএমের স্থানীয় জোনাল কমিটির সম্পাদক গঙ্গা যাদবের ক্ষোভ, “জামুড়িয়ার মদনতোড় থেকে একটি সভা সেরে ফিরছিল মনোজ। থানার সামনে অন্যায় ভাবে গাড়ি আটকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” তাঁর খেদ, “আমাদের যুব সংগঠনের কর্মী খুন হল, আর আমাদের নেতাকেই গ্রেফতার করা হল! নিহতের পরিবার যাদের নামে অভিযোগ করেছিলেন, তাদের কাউকে ধরা হল না।” জামুড়িয়া থানা অবশ্য দাবি করেছে, নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই এই গ্রেফতার। একই দাবি করে রাজ্যের আইনমন্ত্রী তথা তৃণমূলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) চেয়ারম্যান মলয় ঘটকও বলেন, “এর মধ্যে কোনও রাজনীতি নেই।”
পুলিশ জানায়, বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগেই তৃণমূল নেতা রবিন কাজি খুনের ঘটনায় যে দিনু বাউরিকে ধরা হয়েছিল, তাতে অভিযুক্ত ছিলেন মনোজবাবুও। তবে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ না-মেলায় পরে চার্জশিটে তাঁর নাম দেওয়া হয়নি। জামুড়িয়ার তৃণমূল নেতা সুকুমার ভট্টাচার্যের অভিযোগ, “মনোজবাবুর ছক মেনেই ভোটে রিগিং করত সিপিএম। তাঁর নির্দেশেই দিনু বাউরি বিভিন্ন বুথে দাপিয়ে বেড়াত। শিল্পতালুক থেকে বিভিন্ন কারখানায় অবৈধ কয়লা কে পাচার করবে, তা-ও উনিই ঠিক করতেন।”
সিপিএম অবশ্য এই সব অভিযোগে আমল দিতে রাজি নয়। দলের জেলা সম্পাদক অমল হালদার অবশ্য বলেন, “এ সব কথা ভিত্তিহীন। আমরা যদি শুধু রিগিং করেই জিতে এসে থাকি, তা হলে এ বার যে ভাবে ভোট হয়েছে তাতে তো আমাদের জামুড়িয়ায় হেরে যাওয়ার কথা। আমরা তো জিতেছি!” কংগ্রেসের জেলা (শিল্পাঞ্চল) কমিটির সম্পাদক তরুণ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাবি, “এখন পুলিশের উচিত, মনোজবাবুকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে রবিন কাজি খুনে তাঁর যোগ ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা।”

ফাইল চিত্র



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.