বাস মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে আইনজীবীদের গোলমালের জেরে আমজনতার ভোগান্তি চলছেই। মঙ্গলবার কোচবিহারে বাস কর্মী ও আইনজীবীদের সঙ্গে গোলমাল হয়। তাতে বাস মালিক ও কর্মীদের সংগঠন বুধবার থেকে জেলা জুড়ে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বেসরকারি বাস ধর্মঘটের ডাক দেন। তেমনই আইনজীবীরাও এ দিন আদালতে কর্মবিরতি করেন। কোচবিহার বার অ্যাসোসিয়েশনের ডাকা কর্মবিরতিতে সামিল হন শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার-সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন আদালতের আইনজীবীরা। এক দিকে নিত্যযাত্রীরা সমস্যায় পড়েন। অন্য দিকে হয়রান হন বিচারপ্রার্থীরা। ভারপ্রাপ্ত জেলাশাসক গোদালা কিরণকুমার বলেন, “আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা হচ্ছে। সন্ধ্যায় বাস মালিক ও কর্মীদের সঙ্গে এই বিষয়ে বৈঠক হয়েছে।”
এ দিন কোচবিহার বার অ্যাসোসিয়েশনের এক প্রতিনিধি দল জেলার সদ্য নিযুক্ত পুলিশ সুপার প্রণব দাসের সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপি দেয়। পুলিশ সুপার বলেন, “কর্মবিরতি প্রত্যাহারে আইনজীবীদের অনুরোধ করেছি। আইনজীবীদের অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছি।” গত মে মাসে মিনি বাসের ধাক্কায় এক আইনজীবীর মৃত্যুর পরে পুলিশ বাসটি আটকে আদালতে পাঠায়। বাসটি ছাড়ানোর জন্য বাস মালিকেরা আদালতে আবেদন জানানোর জন্য কোনও আইনজীবীকে নিয়োগ করতে পারছেন না বলে অভিযোগ। এই ব্যাপারে বাস মালিক ও কর্মীরা মঙ্গলবার জেলাশাসককে স্মারকলিপি দিয়ে ফেরার সময়ে কাছারি মোড়ে আইনজীবীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। বার অ্যাসোসিয়েশন -এর লাইব্রেরি ভাঙচুর হয় বলে অভিযোগ। দু’পক্ষের ১৫ জন তাতে জখম হন। পুলিশ ২০ জনকে ধরে।
এর পরেই বাস মালিক এবং আইনজীবীরা পৃথক ভাবে আন্দোলনে নামেন। জেলায় বাসের সমস্যা মেটাতে একশোটি অতিরিক্ত বাস নামানো হয় বলে জানিয়েছেন এনবিএসটিসি’র চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। কোচবিহার বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অশোক ঘোষ বলেন, “নিরুপায় হয়েই আমরা বুধবার আদালতে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছি। পুলিশ সুপার কর্মবিরতি তোলার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার বৈঠক করে এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে।” তাঁদের এই আন্দোলনের জেরে এ দিন বিচারপ্রার্থীদের যে সমস্যায় পড়তে হয় সেই কথাও স্বীকার করে নিয়েছেন অশোকবাবু। অন্য দিকে বাস মালিক ও কর্মীদের সমন্বয় কমিটির পক্ষে সঞ্জিত পণ্ডিত এই প্রসঙ্গে বলেছেন, “বাস যাত্রীদের ভোগান্তির জন্য আমরা ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। বাধ্য হয়েই আমাদের এই আন্দোলনে নামতে হয়েছে।” |