নেই টেকনিশিয়ান, সাত মাস ধরে বন্ধ ম্যালেরিয়া পরীক্ষা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আরামবাগ |
টেকনিশিয়ান না-থাকায় গত ফেব্রয়ারি মাস থেকে আরামবাগ ব্লকে সরকারি ভাবে ম্যালেরিয়া (ভাইভাক্স) পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা অবশ্য গ্রামে ঘুরে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে যাচ্ছেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে রিপোর্ট না পেয়ে গ্রামবাসীরা ক্ষুব্ধ হচ্ছেন। দক্ষিণ নারায়ণপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তাঁরা কয়েক দফায় বিক্ষোভও দেখান। সম্প্রতি ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে তাঁদের জানানো হয়েছে, টেকনিশিয়ান না থাকার কথা। পরীক্ষা না-হওয়ায় বহু রক্তের নমুনাও (স্লাইড) নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ, বছরে প্রতিটি ব্লকের মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশ রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে ম্যালেরিয়ার স্টেটাস রিপোর্ট তৈরি করতে হবে। তা ছাড়া, যে সব এলাকায় বেশি মানুষ জ্বরে আক্রান্ত হবেন, সেই সব এলাকাতে গিয়েও রক্তের নমুনা সংগ্রহ করতে হবে। সেই রিপোর্ট জেলা স্বাস্থ্য দফতর হয়ে রাজ্য প্রশাসনের কাছে পৌঁছয়।
আরামবাগ ব্লকে মোট ১৫টি পঞ্চায়েত। জনসংখ্যা ২ লক্ষ ৬৬ হাজার ৩১ জন। ব্লকের চারটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং ৪৬টি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের স্বাস্থ্যকর্মীরা গ্রামে ঘুরে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করেন। সেই রক্ত পরীক্ষা হয় দক্ষিণ নারায়ণপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্যাথলজি কেন্দ্রে। ব্লক স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ম্যালেরিয়া পরীক্ষার জন্য গত কয়েক মাসে মোট ৯ হাজার রক্তের নমুনা এসে ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্যাথলজি কক্ষে ডাঁই হয়ে পড়ে রয়েছে। রক্তের নমুনা সংগ্রহের পরে তা এক মাস পরীক্ষার উপযোগী থাকে।
ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অমিত দাস জানান, কিট থাকায় ফেলসিফেরাম ম্যালেরিয়া নির্ণয়ের ক্ষেত্রে অসুবিধা হচ্ছে না। সেই পরীক্ষা যে কোনও স্বাস্থ্যকর্মী করে দিতে পারছেন। সমস্যা হচ্ছে ভাইব্যাক্স ম্যালেরিয়া নির্ণয়ের ক্ষেত্রে। তাঁর কথায়, “গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে টেকনিশিয়ানের পদটি ফাঁকা। জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে সমস্যার কথা জানানো হয়েছে। ব্লক হাসপাতালের বহির্বিভাগ এবং অন্তর্বিভাগের রোগীদের জরুরি ভিত্তিতে ম্যালেরিয়া পরীক্ষা অন্য জায়গা থেকে করানো হচ্ছে। কিন্তু গ্রাম ঘুরে সংগৃহীত রক্তের নমুনা পরীক্ষা করা যাচ্ছে না।”
আরামবাগ ব্লকে ম্যালেরিয়া নির্ণয়ের ক্ষেত্রে অচলাবস্থার কথা স্বীকার করে হুগলির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক উন্মেষ বসু জানান, টেকনিশিয়ানের পদটি খালি থাকার বিষয়টি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে জানানো হয়েছে। |