যাত্রাপথেই এল অভিযোগ, তদন্তের নির্দেশ মমতার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
কালীঘাট থেকে মহাকরণে যাচ্ছিলেন ‘দিদি’। হরিশ মুখার্জি রোড ধরে। বুধবার। বেলা তখন সাড়ে ১১টা।
এসএসকেএম হাসপাতালের এক নম্বর গেটের কাছে আসতেই চালককে গাড়ি থামাতে বললেন তিনি। গেটের সামনে দাঁড়িয়ে তখন হাউহাউ করে কাঁদছেন মুদিয়ালির চন্দ্র মণ্ডল লেনের বাসিন্দা দুই ভাই সিদ্ধার্থ সাধুখাঁ ও পার্থসারথি সাধুখাঁ। তাঁরা ‘দিদি’র পূর্বপরিচিত। তাঁদের সামনে গিয়ে কী হয়েছে জানতে চাইলেন ‘দিদি’। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রীও। কিছুক্ষণ আগেই পার্থ-সিদ্ধার্থের বাবা সুনীলকুমার সাধুখাঁ (৭৯) হাসপাতালে মারা গিয়েছেন। দিদিকে দেখেই তাঁরা অভিযোগ উগরে দিলেন। তাঁদের অভিযোগ, হাসপাতালে ‘চিকিৎসার গাফিলতিতেই’ বাবা মারা গিয়েছেন।
তাঁদের সান্ত্বনা দিয়ে ‘দিদি’ গাড়ি থেকেই ফোনে অভিযোগের বিষয়ে খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিলেন চিকিৎসক বিধায়ক ও রাজ্য বিধানসভার স্বাস্থ্য বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সদস্য নির্মল মাজিকে। বিকেলের মধ্যেই মহাকরণে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে নির্মল রিপোর্টও জমা দেন। পরে নির্মল বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগের তদন্ত করার কথা বলেছেন।” তবে এসএসকেএম হাসপাতালের সুপার প্রভাস চক্রবর্তী এ দিন কলকাতার বাইরে ছিলেন। ফোনে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, “আমি কলকাতার বাইরে। বিষয়টি নিয়ে আমি কিছু জানি না। আমার সঙ্গে কেউ যোগাযোগও করেনি।’’
সুনীলবাবুকে গত ২৫ অগস্ট এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সিদ্ধার্থবাবু জানান, তাঁদের বাবার মাথায় রক্ত জমাট বেঁধে গিয়েছিল। হাসপাতালে ভর্তির আগে প্রায় চার ঘন্টা তাঁকে ইর্মাজেন্সিতে ফেলে রাখা হয়েছিল। পরে তাঁকে হাসপাতালের নিউ ক্যাজুয়াল্টি ব্লকে ভর্তি করা হয়। সিদ্ধার্থবাবুদের অভিযোগ, “বাবার দ্রুত অস্ত্রোপচারের দরকার ছিল। কিন্তু তা নিয়ে টালবাহানা করা হয়।” ভর্তি হওয়ার চার দিন পরে সুনীলবাবুর অস্ত্রোপচার হয়। সিদ্ধার্থবাবু বলেন, “বাবার সফল অস্ত্রোপচার হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু তিনি হার্টের রোগী হওয়ায় তাঁর শ্বাসকষ্ট শুরু হয় গত কয়েকদিন ধরে। আমরা সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককে বারবার বাবার হার্টের অসুখের কথা বললেও তিনি আমল দেননি। এমনকী, ভর্তির পরে তাঁর রক্তচাপ মাপা হয়নি। ইসিজি-ও করা হয়নি। হার্টের সমস্যার জন্য আমরা বারবার চিকিৎসকদের ওষুধ দিতে বললেও কেউ আমাদের কথা কানে তোলেননি। বলতে গেলে চিকিৎসার গাফিলতিতেই বাবা মারা গেলেন।” |