উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতাল
ফিল্মের জোগান নেই, তাই বাইরেই এক্স-রে
‘ফিল্ম’ নেই। ফলে কম খরচে এক্স-রে করানোর সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। প্রায় এক মাস ধরে এই অবস্থা চলছে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে। হাসপাতালে এক্স-রে করানোর সুযোগ না-পেয়ে রোগীরা বাইরের বেসরকারি রোগনির্ণয় কেন্দ্র থেকে এক্স-রে করাতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে তাঁদের অনেক বেশি টাকা খরচ হচ্ছে। ক্ষোভ বাড়ছে রোগীদের।
সরকারি হাসপাতালে এক্স-রে করতে খরচ হয় ফিল্ম প্রতি মাত্র ৩০ টাকা। দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারীদের জন্য বিনা খরচে এক্স-রে করানো হয়। কিন্তু বেসরকারি রোগনির্ণয় কেন্দ্রগুলিতে এক্স-রে করাতে এর অনেক বেশি টাকা লাগে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এক্স রে করানোর জন্য চার রকমের ফিল্ম প্রয়োজন হয়। সব থেকে বড় ফিল্মটি হল ১৫ ইঞ্চি লম্বা ১২ ইঞ্চি চওড়া। এ ছাড়াও রয়েছে ১২ ইঞ্চি লম্বা ১০ ইঞ্চি চওড়া, ১০ ইঞ্চি লম্বা ৮ ইঞ্চি চওড়া এবং সাড়ে ৬ ইঞ্চি লম্বা সাড়ে ৮ ইঞ্চি চওড়া ফিল্ম। এই হাসপাতালে সব থেকে বেশি প্রয়োজন হয় প্রথম দু’ধরনের ফিল্ম। প্রতিটি লাগে মাসে সাড়ে ৭০০টি করে। ছোট দু’টি ফিল্ম লাগে মাসে যথাক্রমে ৩০০টি করে। কিন্তু এক মাস ধরে কোনও ফিল্মই আসছে না।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, ফিল্মের জোগান দেয় স্বাস্থ্য দফতরের অধীন জেলা মজুত ভাণ্ডার (ডিআরএস)। হাসপাতাল সুপার গৌরাঙ্গসুন্দর জানা বলেন, “আমরা ডিআরএস-কে বারবার তাগাদা দিচ্ছি। বুধবার কিছু ফিল্ম পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তাতে মাত্র দু’এক দিন চলবে। তার পরে ফের আগের পরিস্থিতি হয়ে যাবে।” এ দিন যে ফিল্ম এসেছে, তাতে শুধুমাত্র অন্তর্বিভাগের রোগীদের এক্স-রে করানো হবে বলে হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে। অথচ এক্স-র করানোর জন্য বহির্বিভাগের রোগীদের চাহিদাও কম নয়। কিন্তু তাঁদের এক্স-রে আপাতত বন্ধ থাকবে।
অস্থি বিভাগ তো বটেই সাধারণ বিভাগের রোগীদেরও এক্স-রে করানোর জন্য পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। বুকের এক্স-রে করানোর প্রয়োজন হয় অনেক বেশি। যক্ষ্মা বিভাগের রোগীদের বুকের এক্স-রে করানো আবশ্যিক। এক মাস ধরে প্রতিটি বিভাগে এক্স-রে করানো বন্ধ রয়েছে। হাসপাতালের বাইরে রয়েছে প্রচুর বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। সেখানে এখন এক্স-রে করানোর জন্য থিক থিক করছে ভিড়।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, যে দু’টি প্রতিষ্ঠান ফিল্ম সরবরাহ করে, তারা গত এক মাস ধরে ঠিকমতো জোগান দিতে পারছে না। জেলার বিভিন্ন গ্রামীণ হাসপাতাল এবং ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতেও ফিল্মের জোগান অনিয়মিত। তবে এই সব হাসপাতালে যেহেতু রোগীর চাপ তুলনায় কম, তাই পুরনো মজুত থেকেই কাজ চলছে। বাগনান গ্রামীণ হাসপাতালের সুপার তথা বাগনান ১ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ইন্দ্রনীল মিত্র বলেন, “আমার কাছে যে মজুত রয়েছে, তাতে কাজ চলে যাচ্ছে। তবে খুব শীঘ্রই ফিল্মের জোগান না এলে এক্স রে করানো যাবে না।”
উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালের অবস্থাই সবচেয়ে করুণ। এখানে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রোগী আসেন। এ ছাড়া কাছেই দক্ষিণ-পূর্ব রেলপথ এবং মুম্বই রোড থাকার দরুন দুর্ঘটনা লেগেই রয়েছে। আর দুর্ঘটনাগ্রস্তেরা ভর্তি হন এই হাসপাতালেই। এ ছাড়াও হাসপাতালের বহির্বিভাগে দৈনিক প্রায় ৭০০ রোগী আসেন চিকিৎসা করাতে। ফলেই এই হাসপাতালে এক্স-রে ফিল্মের চাহিদা খুবই বেশি। হাসপাতাল সুপারের কথায়, “প্রতি মাসে আমরা যে প্রয়োজনের তালিকা পাঠাই, সেই অনুযায়ী ফিল্ম পাঠাতে দু’এক দিন দেরি হলেই প্রবল সমস্যা তৈরি হয়। এই অবস্থায় এক মাস জোগান বন্ধ থাকলে কী পরিস্থিতি হতে পারে, তা সহজেই অনুমেয়।” জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, শীঘ্রই উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে ফের এক দফা ফিল্ম পাঠানো হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.