নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
দফতরের মন্ত্রী নির্দেশ দিয়ে যাওয়ার পরেও তিস্তা সেচ প্রকল্পের ‘স্টেটাস রিপোর্ট’ না মেলায় ক্ষুব্ধ উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব। খোদ মুখ্যমন্ত্রী তিস্তা সেচ প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ করতে উদ্যোগী। উত্তরবঙ্গবাসীর স্বার্থের কথা মাথায় রেখে তিস্তা জলবণ্টন চুক্তিতেও গররাজি হয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশ সফর বাতিল করেছেন। তিস্তা সেচ প্রকল্পের মাধ্যমে উত্তরবঙ্গে কৃষির পুনরুজ্জীবন ঘটাতে চাইছেন। সেখানে দফতরের আধিকারিকদের কোনও রকম উদাসীনতা বরদাস্ত করা হবে না বলেই জানিয়েছেন গৌতমবাবু। উদ্বেগের কথা সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া এবং তাঁর দফতরের প্রধান সচিবকে জানিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলবেন। আজ, বৃহস্পতি বার তিস্তা সেচ আধিকারিকদের নিয়ে এ ব্যাপারে তিনি বৈঠক ডেকেছেন শিলিগুড়িতে। সেচ প্রকল্পের পাশাপাশি ৩০০ কোটি টাকা খরচে তিস্তা থেকে শিলিগুড়ি শহরে পানীয় জল সরবরাহের পরিকল্পনা নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হবে। বছরের পর বছর ধরে ঝুলে থাকা তিস্তা সেচ প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ করতে উদ্যোগী জোট সরকার। গত অগস্ট মাসের শুরুতে সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া শিলিগুড়িতে দফতরের কাজকর্ম পরিদর্শন করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। দ্রুত প্রকল্পের ‘স্টেটাস রিপোর্ট’ তৈরির নির্দেশ দেন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রীকে বিষয়টি দেখতে অনুরোধ করেন। অথচ তার পরেও মাসখানেক পেরিয়ে গেলেও এখনও কাজের অগ্রগতি নিয়ে খবর না মেলায় অসন্তুষ্ট গৌতমবাবু। তিনি বলেন, “তিস্তা সেচ প্রকল্পের কাজ শেষ করে উত্তরবঙ্গের কৃষির পুনরুজ্জীবন ঘটানই মুখ্যমন্ত্রীর লক্ষ্য। ওই কাজ নিয়ে তিনি চিন্তিত। সেই মতো সেচমন্ত্রী দফতরের কাজ পরিদর্শন করে দ্রুত রিপোর্ট তৈরির জন্য নিদের্শ দিয়েছিলেন। উত্তরবঙ্গ বন্যা নিয়ন্ত্রণ কমিশনের মুখ্য বাস্তুকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। সেখান থেকে এখনও কাজের অগ্রগতি নিয়ে খবর পাইনি। মানসবাবুকে তা জানিয়ে দিচ্ছি। আধিকারিকদের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলব।”
সেচ এবং উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত প্রায় ১২০০ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে তিস্তা সেচ প্রকল্পে। ৯ লক্ষ ২২ হাজার হেক্টর জমিতে সেচের ব্যবস্থা করার কথা থাকলেও মাত্র ১৪ শতাংশ কাজ হয়েছে। প্রকল্পের কাজে ব্যপক অনিয়ম এবং দুর্নীতি নিয়েও একাধিকবার অভিযোগ উঠেছে। এ সব আর বরদাস্ত করা হবে না তা সাফ জানিয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্ননয়মন্ত্রী। তাঁর কথা, মালদহ পর্যন্ত তিস্তা সেচ প্রকল্প বিস্তার করা হবে। অন্য দিকে কোচবিহার পর্যন্ত তা নেওয়া যায় কি না সে ব্যাপারে চিন্তভাবনা চলছে।
অন্য দিকে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে তিস্তা থেকে শিলিগুড়ি শহরে পানীয় জল সরবরাহের প্রকল্প গড়ে তোলার কথা ঘোষণা করে গিয়েছেন। সেই পরিকল্পনা রিপোর্ট তৈরি করে দ্রুত জমা দেওয়ার কথা। পুরসভা, জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর, তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্পের আধিকারিকদের নিয়ে কাজ এগিয়ে নিতে তিনি উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রীকে দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছেন। |