প্রাথমিক শিক্ষকদের দু’বছরের প্রশিক্ষণ নেওয়াটা বাধ্যতামূলকই থাকছে। তবে ওই স্তরে কর্মরত শিক্ষকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৫০ শতাংশ পাওয়ার ক্ষেত্রে নিজেদের অবস্থান কিছুটা শিথিল করল ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন বা এনসিটিই।
রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়ে এনসিটিই জানিয়েছে, ২০১০ সালের ২৩ অগস্ট তাদের নির্দেশিকা জারির আগেই যাঁরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতায় যোগ দিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে উচ্চ মাধ্যমিকে নম্বর সংক্রান্ত ওই নিয়মবিধি কার্যকর হবে না। অর্থাৎ ৫০ শতাংশ নম্বর পাওয়ার জন্য তাঁদের আর নতুন করে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসতে হবে না। এনসিটিই-র এই সিদ্ধান্তে রাজ্যের প্রায় এক লক্ষ প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকা স্বস্তি পাবেন।
উচ্চ মাধ্যমিকে আবশ্যিক নম্বরের ব্যাপারে এনসিটিই-র ওই নির্দেশিকা রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতরে আসার পর থেকেই ওই শিক্ষক-শিক্ষিকারা অনিশ্চয়তায় ভুগছিলেন। স্কুলশিক্ষা দফতরের যুগ্ম অধিকর্তা মানিকচন্দ্র দোলুই বলেন, “ওই সব শিক্ষক-শিক্ষিকার কথা মাথায় রেখেই আমাদের দফতর এই নির্দেশিকার ব্যাখ্যা চেয়ে এনসিটিই-কে চিঠি দিয়েছিল। তার জবাবেই সম্প্রতি এনসিটিই তাদের ওই পরিবর্তিত সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছে।”
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় আবশ্যিক নম্বরের ক্ষেত্রে নিয়মবিধি শিথিল করার কথা জানালেও দু’বছরের বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে পুরনো অবস্থানে অনড়ই রয়েছে এনসিটিই। সে-ক্ষেত্রে এক বছরের প্রশিক্ষণ নেওয়া যে-সব শিক্ষক-শিক্ষিকা ২০০১ সালের ৩ সেপ্টেম্বরের পরে চাকরিতে যোগ দিয়েছেন, তাঁদের আরও এক বছর প্রশিক্ষণ নিতে হবে। সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছে এনসিটিই। তাদের নির্দেশ, ওই প্রশিক্ষণ নিতে হবে ২০১৫ সালের মার্চের মধ্যে। এনসিটিই-র নির্দেশিকা অনুসারে চাকরি বজায় রাখা এবং প্রধান শিক্ষকের পদে উন্নীত হওয়ার ক্ষেত্রে দু’বছরের প্রশিক্ষণ থাকা আবশ্যিক।
রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতরের উপ-অধিকর্তা অলোক সরকার বলেন, “২০০১ সালের পরে যাঁরা এক বছরের প্রশিক্ষণ নিয়ে শিক্ষকতায় যোগ দিয়েছেন, তাঁদের আরও এক বছরের প্রশিক্ষণ নিতেই হবে। তবে এনসিটিই আইন চালু হওয়ার আগে যে-সব শিক্ষক-শিক্ষিকা এক বছরের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, তাঁদের আর নতুন করে প্রশিক্ষণ নিতে হবে না।”
প্রাথমিক শিক্ষকদের বিভ্রান্তি আরও বেড়েছে কলকাতা হাইকোর্টে এক বছরের পিটিটিআই প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের দায়ের করা একটি মামলার রায়কে কেন্দ্র করে। রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতরের ব্যাখ্যা, হাইকোর্টের রায়টি ছিল চাকরিতে ঢোকার পরীক্ষা নিয়ে। সেই রায়ে বলা হয়, ১৯৯৫ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত যাঁরা বৈধ পিটিটিআই কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, চাকরিতে ঢোকার পরীক্ষায় বৈধ প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের জন্য বরাদ্দ ২২ নম্বর পাবেন তাঁরাও। এর সঙ্গে ভাতা বা পদোন্নতির কোনও সম্পর্ক নেই। |