কর্মীদের চাঙ্গা করতে বুদ্ধকে নির্বাচনী প্রচারে চায় জেলা
সিপিএমের জেলার নেতারা চান আসন্ন উপ নির্বাচনে দলের প্রার্থীদের হয়ে প্রচার করুন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তাঁদের মতে, বুদ্ধবাবু প্রচারে নামলে দলীয় কর্মীরা কিছুটা ‘চাঙ্গা’ হবেন। তাঁদের ‘মনোবল’ বাড়বে। ওই নেতাদের আরও যুক্তি, বিধানসভায় বামেদের হারের পর ধর্মতলায় তিনটি সভায় বুদ্ধবাবুই ছিলেন প্রধান বক্তা। বাম কর্মী-সমর্থকরা তাঁর বক্তৃতায় যথেষ্ট ‘সাড়া’ দিয়েছেন।
কিন্তু বুদ্ধবাবুকে প্রচারে নামানো নিয়ে আলিমুদ্দিনই দোলাচলে। কারণ, বুদ্ধবাবু প্রচার করার পরেও ভবানীপুর কেন্দ্রে সিপিএম প্রার্থী নন্দিনী মুখোপাধ্যায়ের পরাজয়ের ব্যবধান বাড়ে বা বসিরহাট উত্তরের জেতা আসন হাতছাড়া হয়, তখন দলের অন্দরে-বাইরে সমালোচনা শুরু হয়ে যাবে। এই পরিস্থিতিতে বুদ্ধবাবুকে প্রচারে নামানোর সিদ্ধান্ত জেলা বামফ্রন্টের উপরেই ছাড়ছে আলিমুদ্দিন।
জেলা নেতাদের দাবি মেনে আগামী শনিবার উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়ায় সভা করতে যাচ্ছেন বুদ্ধবাবু। সিপিএমের বর্ধিত রাজ্য কমিটির বৈঠকে জেলা নেতাদের দাবি ছিল, নিচুতলার কর্মীদের চাঙ্গা করতে বুদ্ধবাবুকে জেলা সফরে যেতে হবে। কিন্তু তিনি কি উপ নির্বাচনে প্রচারে যাবেন? জবাবে বুধবার আলিমুদ্দিনে বুদ্ধবাবু বলেন, “এখনও ঠিক হয়নি। দেখা যাক। শনিবার বিকেলে হাড়োয়া যাচ্ছি।” বামফ্রন্টের বৈঠকের পরে ফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু জানান, তিনি বা বুদ্ধবাবু উপ নির্বাচনের প্রচারে নামবেন কিনা, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে জেলা বামফ্রন্ট। দলীয় মহলে বিমানবাবু জানিয়েছেন, জেলা যদি মনে করে, তিনি বা বুদ্ধবাবু প্রচারে গেলে বামেদের সুবিধা হবে, তবেই তাঁরা প্রচারে নামবেন।
কলকাতা জেলা কমিটির একাধিক সদস্য মনে করেন, ভবানীপুরে বুদ্ধবাবু প্রচারে গেলে নিঃসন্দেহে কর্মীদের মনোবল বাড়বে। এই কেন্দ্রে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয় নিয়ে কোনও সংশয় নেই। চার মাস আগে এই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী সুব্রত বক্সি ৫০ হাজার ভোটে জিতেছিলেন। দলের একাংশ মনে করছে, নন্দিনীর ক্ষেত্রে সামান্য হলেও ব্যবধান কমতে পারে। সেক্ষেত্রে বুদ্ধবাবু প্রচারে গেলে দলেরই সুবিধা। আবার পাল্টা যুক্তিও রয়েছে। মমতা মুখ্যমন্ত্রী। ভবানীপুর তাঁর পাড়া। বিজেপি কোনও প্রার্থী দেয়নি। স্বভাবতই মমতার জয়ের ব্যবধান ৫০ হাজারও ছাড়িয়ে যেতে পারে। বুদ্ধবাবু প্রচারে নামা সত্ত্বেও তা হলে পাল্টা সমালোচনা শুরু হবে দলেই।
ভবানীপুরের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা রবীন দেব বুদ্ধবাবুকে প্রচারে আনা নিয়ে সরাসরি কোনও জবাব দেননি। তিনি বলেন, “এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। জেলায় বৈঠকের পর কোনও সিদ্ধান্ত হলে জানানো হবে।” বসিরহাট উত্তরে প্রয়াত মোস্তাফা বিন কাশেম জিতেছিলেন প্রায় চার হাজার ভোটে। সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর দল পিডিসিআই প্রার্থী পেয়েছিলেন সাত হাজার ভোট। ‘পরিবর্তনের’ জোয়ারে ওই আসন সিপিএম ধরে রাখতে পারবে কিনা, দলেই সংশয় আছে। তা সত্ত্বেও বসিরহাট-হাসনাবাদের সিপিএম নেতারা চাইছেন, বুদ্ধবাবু নির্বাচনী প্রচারে যান।
শেষ পর্যন্ত কি বুদ্ধবাবু বসিরহাটে প্রচারে যাবেন? তাঁরা কী চাইছেন? জবাবে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তথা নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত গৌতম দেব বলেন, “হাড়োয়ায় বুদ্ধ’দার সভা আছে। হাড়োয়া বসিরহাট উত্তর কেন্দ্রের লাগোয়া। রবিবার নির্বাচনী কমিটির বৈঠক। সেখানেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। যদি জেলার নেতারা মনে করেন, বুদ্ধ’দা সভা করলে ভাল হবে, তবে তাই হবে।” তবে তাঁরা চাইলেও শেষ পর্যন্ত তিনি নির্বাচনী প্রচারে যাবেন কিনা, তা ঠিক করার ভার বুদ্ধবাবুর উপরেই ছেড়ে দিতে চান সিপিএমের জেলা নেতারা।
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.