নিজেই গড়ে দিলেন কমিটি
সমন্বয় কোথায়, মন্ত্রীদের সামনে উষ্মা মমতার
ন্নয়নের কাজ দ্রুত শেষ করতে তিনি আগেই নির্দেশ দিয়েছেন। এ বার সরকারের রাজস্ব বাড়াতে আয়ের বিভিন্ন উৎস খুঁজে দেখতে মন্ত্রীদের পরামর্শ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আর এরই সঙ্গে উন্নয়ন পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করতে পর্যটন, পূর্ত, নগরোন্নয়ন ও পরিবেশ দফতরকে নিয়ে একটি ‘সমন্বয় কমিটি’ গড়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কমিটির চেয়ারম্যান হবেন নগরোন্নয়ন দফতরের সচিব এবং হিডকো-র সিএমডি দেবাশিস সেন।
গ্রামোন্নয়নে জড়িত বিভিন্ন দফতরের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মঙ্গলবার বৈঠক করেছিলেন। বুধবার নগরোন্নয়নে যুক্ত পর্যটন, পূর্ত, পরিবেশ ও নগরোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী ও সচিবদের নিয়ে বৈঠকে বসে তিনি জানতে চান তাঁদের উন্নয়ন-পরিকল্পনার কথা। এবং তার পরেই টেনে আনেন সরকারের আয়বৃদ্ধির প্রসঙ্গটি। মন্ত্রীদের উদ্দেশে তিনি প্রশ্ন ছুড়ে দেন, “সরকারের আয় বাড়ানো নিয়ে আপনারা কী ভেবেছেন?”
উত্তর কী হতে পারে, তার আঁচও দেন তিনিই। আয়বৃদ্ধির উদাহরণ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “নিউটাউনে হিডকো-র বড় বড় বাড়ি তৈরি হয়েছে। সেগুলো থেকে কর (প্রপারটি ট্যাক্স) নেওয়া হলে সরকারের আয় হতে পারে।” তাঁর দ্বিতীয় প্রস্তাব, “প্রধানত নদীর চর এলাকায় বেআইনি ভাবে বালি তোলা হচ্ছে। এখান থেকেও সরকারের আয় হতে পারে। কী ভাবে তা সম্ভব, আপনারা ভেবে দেখুন।”
তবে রাজ্য পুর দফতরের কাজে যে তিনি আদৌ সন্তুষ্ট নন, মমতা এ দিন তা পরিষ্কার বুঝিয়ে দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে বৈঠকে কার্যত উষ্মাই প্রকাশ করেছেন তিনি। মমতার মন্তব্য, “পুরসভার কাজ তো চোখে পড়ছে না! আপনাদের মধ্যে কোনও সমন্বয় নেই! কাগজে-কলমে পরিকল্পনা রাখলে হবে না। কাজ করতে হবে।” এই সময়ে কেউ কেউ তাঁদের পরিকল্পনার কথা বলতে গেলে তাঁদের এক রকম থামিয়ে দিয়েই মমতা বলেন, “পরিকল্পনা করলে কাজ হচ্ছে না কেন? কাজ তো চোখে দেখা যাচ্ছে না! আমি বাস্তবে কাজ দেখতে চাই।”
এই আলোচনাকালে দু’-এক জন সচিবকে মৃদু ভর্ৎসনাও করেন মুখ্যমন্ত্রী। এতে এক জন সচিব ‘আঘাত পেয়েছেন’ শুনে মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে পাল্টা বলেন, “কাজ না-হলে আমরা জনগণকে কী জবাব দেব? তাঁদের কাছ থেকে যে আঘাত আসবে, সেটা কী ভাবে সহ্য করব?”
হিডকো-এলাকায় বাড়ির নকশা কারা অনুমোদন করে, কোন আইনে তা করা হয়, এ দিন বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী তা জানতে চান। জানতে চান হিডকো-র পরিকাঠামোর কথাও। মঙ্গলবারের মতো এ দিনও তিনি মন্ত্রী-সচিবদের পরিষ্কার বুঝিয়ে দিয়েছেন, রাজ্যের উন্নয়ন যাতে মানুষ চোখে দেখতে পান, তেমন কাজ করতে হবে। কাগজে-কলমে উন্নয়নের তথ্য শুনতে তিনি রাজি নন। আর এ দিনও তিনি মন্ত্রীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, “উন্নয়নের কাজ দেখতে পুজোর পরেই আমি রাস্তায় নামব। নিজের চোখে পরখ করে নেব।” এ-ও বলেন, “সরেজমিনে বেরিয়ে রাস্তার কল খুলে আমি দেখে নিতে পারি, সেখান থেকে জল পাওয়া যাচ্ছে কি না।” মন্ত্রীদের প্রতি তাঁর স্পষ্ট নির্দেশ, “শুধু উন্নয়নের খতিয়ান দেবেন না। কাজের ধারাবাহিক অগ্রগতির ছবিটাও তুলে ধরবেন।” বস্তুত সরকারি বিভিন্ন দফতরে সমন্বয়ের অভাবেই যে সময়মতো কাজ শেষ করা যায় না, এ দিনের বৈঠকে মন্ত্রী-সচিবদের তা কথা বার বার মনে করিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এবং এই কারণেই গড়ে দিয়েছেন কমিটি।
এ দিনের বৈঠকে জানানো হয়, রাজ্যের ছোট-মাঝারি সাতটা শহরের পানীয় জল এবং দু’টি শহরের নিকাশি উন্নয়নে ২৩১ কোটি ২২ লক্ষ টাকা খরচ করা হবে। তার ১৮৪ কোটি ৬০ লক্ষ মিলেছে ক্ষুদ্র-মাঝারি শহর উন্নয়ন ও পরিকাঠামো তৈরির কেন্দ্রীয় প্রকল্পে। বাকিটা রাজ্য জোগাবে। উপরন্তু নিবিড় বাসস্থান উন্নয়ন প্রকল্পে রাজ্যের আশিটি শহরে তৈরি হবে ৫২ হাজার বাড়ি, যার দশ হাজার নির্মীয়মাণ। চলতি অর্থবর্ষের মধ্যে বাকিটা তৈরি করতে হবে। এই প্রকল্পেও কেন্দ্র দেবে মোট খরচের ৮০%।
নগরোন্নয়ন-সূত্রের খবর: রাজ্যের যে ৯টি শহরে পানীয় জল ও নিকাশি প্রকল্প তৈরি হবে, সেগুলো হল: ইংলিশবাজার, সাঁইথিয়া, কোচবিহার, বীরনগর, বালুরঘাট, রামজীবনপুর, রায়গঞ্জ, এগরা ও চন্দ্রকোনা। কলকাতার খালপাড় ও গোবিন্দপুর রেল-কলোনি থেকে উচ্ছেদ হওয়া পরিবারগুলোর হাতে নোনাডাঙ্গায় তৈরি আটশো ফ্ল্যাটের চাবি তুলে দেওয়া হবে ২৮ সেপ্টেম্বর। ওই তল্লাটে রাস্তা ও অন্যান্য পরিষেবা তৈরি করে দেবে কেএমডিএ।
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.