অগস্টের প্রথমার্ধে রাজ্য জুড়ে প্রবল বৃষ্টিপাত এবং বিভিন্ন নদী ছাপিয়ে জল ছড়িয়ে পড়ায় চাষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। নদিয়া এবং মুর্শিদাবাদের হেক্টরের পরে হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
নদিয়া-মুর্শিদাবাদ যুগ্ম কৃষি অধিকর্তা হরেন্দ্রকুমার ঘোষ বলেন, “নদিয়ার ১৮৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ১৩৬টি পঞ্চায়েতই কম বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মুর্শিদাবাদের ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি। আউস, আমন, পাট, ভুট্টা, শাকসব্জি-অর্থাৎ মাঠের কোনও ফসলই এই বৃষ্টিতে ক্ষতির হাত থেকে রেহাই পায়নি।” তিনি বলেন, “১৫ দিনের ওই অতিবৃষ্টির কারণে ক্ষতির পরিমাণ মুর্শিদাবাদে ৯২ কোটি ৩৯ লক্ষ টাকারও বেশি। অন্য দিকে নদিয়ায় ক্ষতির পরিমাণ ২২ কোটি ২৬ লক্ষ টাকারও বেশি।”
জেলা কৃষি দফতরের হিসেব অনুযায়ী সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নদিয়ার আমন। প্রায় ৮ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। যার আর্থিক মূল্য ১১ কোটি ৮৮ লক্ষেরও বেশি। এরপরেই আউস। সাড়ে পাঁচ হাজার হেক্টর জমির ফসল, যার মূল্য প্রায় সাড়ে সাত কোটি টাকা। তারপরে পাট। তিন হাজার হেক্টর জমিতে তিনশো কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে পাটেও।
নদিয়ার সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নবদ্বীপ ও কৃষ্ণনগর ২ ব্লক। ওই দুই ব্লকের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ যথাক্রমে সাড়ে তিন কোটি টাকা ও প্রায় চার কোটি টাকা।
জেলা কৃষি দফতর সূত্রে খবর, মুর্শিদাবাদের কান্দি মহকুমায় আমন চাষের ক্ষতির পরিমাণ ৫২ কোটি ২৭ লক্ষেরও বেশি। আউসের সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে বহরমপুর মহকুমায়। ক্ষতির পরিমাণ ১ কোটি ৫৮ লক্ষ টাকারও বেশি। শাকসব্জি চাষেও ক্ষতি হয়েছে সব থেকে বেশি এই মহকুমাতেই। ক্ষতির পরিমাণ ২৩ কোটির উপরে। লালবাগে ৮৭ হেক্টর জমিতে ৮৭০ মেট্রিক টন লঙ্কা নষ্ট হয়েছে। যার আর্থিক মূল্য এক কোটি টাকারও উপরে। পাট চাষে সর্বাধিক ক্ষতি হয়েছে জঙ্গিপুর মহকুমায়। ১২০ হেক্টর জমির পাট নষ্ট হওয়ায় ১ কোটি ৭৩ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
হরেন্দ্রনাথবাবু বলেন, “ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের চাষিদের বিকল্প ফসল চাষে সহায়তা করতে জেলা কৃষি দফতর থেকে ইতিমধ্যেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে।” তিনি বলেন, “১ সেপ্টেম্বর থেকে চাষিদের নানা ধরনের বিকল্প ফসলের বীজ সরবরাহ করছে রাজ্য সরকার। মুগ, কলাই, অড়হড়, ভুট্টা এবং তিলের বীজ চাষিকে বিতরণ করা হচ্ছে।” |