এক প্রতিবন্ধী যুবককে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে তার দিদিমা ও মামার বিরুদ্ধে। দু’জনকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। মৃতের নাম দিবাকর বিশ্বাস (১৮)। সম্পত্তির লোভে তাঁর ছেলেকে খুন করা হয়েছে বলে বুধবার মৃতের বাবা রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাঁর অভিযোগ, দিবাকরের মামা সুবল গাইন ও আয়নামতি গাইন তাঁর ছেলেকে খুন করে ঝুলিয়ে দিয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে সুবলবাবুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার ওই যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। নদিয়ার পুলিশ সুপার সব্যসাচী রমণ মিশ্র বলেন, “ওই যুবকের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মায়াপুরের হুলোর ঘাটের বাসিন্দা দিবাকর চোখে ভাল দেখতে পেতেন না। শুনতেও সমস্যা হত তাঁর। ১২ বছর ধরে তিনি মায়ের সঙ্গে মায়াপুরে মামার বাড়িতে থাকতেন। এলাকারই বিভিন্ন চায়ের দোকান ও মঠে কাজ করতেন তিনি। মাস সাতেক আগে তাঁর মা হৈমন্তী বিশ্বাস মারা যান। তার পরে সম্পত্তির লোভেই দিবাকরকে খুন করা হয়েছে বলে রবীন্দ্রনাথবাবুর অভিযোগ।
রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন “আমার সঙ্গে আমার স্ত্রীর সম্পর্ক অনেক দিন ধরেই খারাপ ছিল। ছেলে মায়ের সঙ্গে মামার বাড়িতে থাকলেও আমার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখত। আমার স্ত্রীর মায়াপুরে একটি দোকান ছিল সেই আয়ে ওদের চলত।” তাঁর অভিযোগ, “মা মারা যাওয়ার পরে ও কিছুদিন আমার কাছে ছিল। ওকে মামা আর দিদিমা মারধর করে বলে আমাকে জানিয়েছিল। এর পরে আমাকে বুঝিয়ে ওর মাসি, দিদিমা ওকে ফের মায়াপুরে নিয়ে আসে।”
রবীন্দ্রনাথবাবুর অভিযোগ, সোমবার রাতে দিবাকর তাঁকে ফোন করে মারধরের কথা জানায়। বাড়ি থেকে তাঁকে বের করে দেওয়া হলে সোমবার রাতে দিবাকর একটি মন্দিরে ছিলেন বলে জানান তিনি। মঙ্গলবার ছেলেকে নিয়ে আসবন বলে স্থির করেন তিনি। তবে যাওয়ার আগেই দিবাকর আত্মহত্যার খবর পান তিনি। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “এলাকার মানুষ যা বললেন, তার পরে আমি নিশ্চিত যে ওকে মেরে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করলেই সব জানা যাবে।” রাজমিস্ত্রি সুবলবাবু অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “আমার সঙ্গে গত ১০ দিন ধরে দিবাকরের দেখাই হয়নি। কোনও দিনই আমি ওকে মারিনি।” |