যথাযথ অনুমতি না নিয়েই কেটে ফেলা হল প্রায় পয়তাল্লিশটি ছোট বড় গাছ। বুধবার হিরাপুর থানার শ্যামডিহি গ্রামে এই নিয়ে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। খবর পেয়ে বাসিন্দাদের বিক্ষোভ সামাল দিতে ঘটনাস্থলে যান আসানসোল পুরসভার পূর্ত দফতরের মেয়র পারিষদ লক্ষ্মণ ঠাকুর। গাছ কাটার ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন তিনি। তাঁর আশ্বাস, এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বুধবার সকালে শ্যামডিহি গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, একটি মাঠের কাছে জটলা করেছেন গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, কেটে ফেলা গাছগুলির মধ্যে শিশু, শিরিষ, সেগুনের মতো মূল্যবান গাছও আছে। রাতারাতি এক সঙ্গে এত গাছ কাটায় গ্রামবাসীরা আর ধৈর্য ধরে রাখতে পারেননি। লক্ষ্মণবাবু ঘটনাস্থলে পৌঁছলে বিহিত চেয়ে বাসিন্দারা তাঁর কাছে দরবার করেন। ঘটনাস্থলেই লক্ষ্মণবাবু বলেন, “আমি শুনেছি গ্রামেরই এক বাসিন্দা এই গাছগুলি কেটেছেন। পুরসভা ঘটনার তদন্ত করবে।” লক্ষ্মণবাবু জানিয়েছেন, বন সৃজনের জন্য পুরসভার একটি দফতর আছে। প্রতি বছর কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে গাছ বিলি করা এবং গাছ লাগানো হয়। তার পরেও এ ভাবে এতগুলি বড় গাছ কেটে নেওয়ার ঘটনা খুবই উদ্বেগজনক। স্থানীয় এক বাসিন্দা দয়াময় পাল বলেন, “যে জমিতে গাছ কাটা হয়েছে তার পাশের জমিটা আমার। আমার জমিরও কয়েকটি গাছ কেটে নিয়েছে। আমি পুলিশকে সব জানিয়েছি।”
এ দিকে, এই গাছ কাটার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ গ্রামবাসীরা তুলেছেন ওই গ্রামেরই বাসিন্দা তুষার কান্তি পাল ওরফে বাপির বিরুদ্ধে। তুষারবাবু নিজেও গাছ কাটার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। তাঁর কথায়, “গাছগুলি আমিই কেটেছি। জমির চার দিকে সীমানা পাঁচিল তোলার জন্য গাছ কাটতে হয়েছে। তবে তার আগে পুরসভার বন সৃজন দফতরের মেয়র পারিষদ সোনিয়া কিস্কুর কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছি।” সোনিয়া কিস্কু অবশ্য এই কথা মানতে চাননি। তাঁর দাবি, “অসম্ভব। আমি এ রকম কোনও অনুমতি দিইনি। দেওয়ার আধিকারিকও নই।”
ঘটনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আসানসোলের মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “আমার মাধ্যমে ডিএফও-র কাছে অনুমতি চাওয়ার কথা। কিন্তু এ রকম কিছু হয়নি এ ক্ষেত্রে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে শিল্পাঞ্চলে বিভিন্ন জায়গায় ১১ লক্ষ গাছ লাগানো হচ্ছে। সেখানে গাছ কেটে নেওয়ার এই ঘটনা মানাই যায় না।” |