নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
আবাসন প্রকল্পের চুক্তি হয়েছিল বামফ্রন্ট সরকারের আমলে। হিন্দ মোটরে হিন্দুস্তান মোটরসের অব্যবহৃত জমিতে সেই আবাসন তৈরি নিয়ে রাজ্যের নতুন সরকারের সঙ্গে বিড়লা গোষ্ঠীর আইনি লড়াই শুরু হয়ে গেল। তবে বিড়লা গোষ্ঠী সরাসরি এই মামলা করেনি। মামলাটি করেছে বেঙ্গল শ্রীরাম কোম্পানি। বিড়লাদের আবাসন তৈরির ব্যাপারে ওই কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। তাদের বক্তব্য, দীর্ঘদিন আগে আবেদন করা সত্ত্বেও তারা ওই প্রকল্পের ব্যাপারে মিউটেশন করাতে পারছে না। তাই চুক্তি অনুযায়ী কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। বেড়ে যাচ্ছে প্রকল্পের খরচ।
হিন্দুস্তান মোটরসের অব্যবহৃত জমি অন্য কাজে ব্যবহার করে বর্তমান কারখানার আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণা নিয়ে বিগত বামফ্রন্ট সরকারের সঙ্গে দীর্ঘদিন আলোচনা চলেছিল। বাম সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, ওই সংস্থা যদি অব্যবহৃত জমি শিল্প-বহির্ভূত কাজে ব্যবহার করে প্রাপ্ত টাকা বর্তমান
কারখানায় বিনিয়োগ করে, তা হলে অনুমতি দেওয়া হবে। হিন্দ মোটরস ২০০৯ সালে রাজ্য সরকারের সঙ্গে এই বিষয়ে চুক্তি করে। বিড়লা
গোষ্ঠী তার পরে ওই জমি নিয়ে
চুক্তি করে বেঙ্গল শ্রীরাম কোম্পানির সঙ্গে। ঠিক হয়, শ্রীরাম ওই জমিতে আবাসন গড়বে।
রাজ্যে নতুন সরকার আসার পরে বিড়লাদের ওই জমি নিয়ে কিছু প্রশ্ন ওঠে। বাম আমলে বিড়লাদের সঙ্গে যে-চুক্তি হয়েছে, নতুন সরকার সেটি খতিয়ে দেখতে চায়। ওই চুক্তিতে কোথাও কোনও ভাবে রাজ্যের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হয়েছে কি না, সরকার তা যাচাই করছে। এই অবস্থায় এ দিন বেঙ্গল শ্রীরামের দায়ের করা মামলার শুনানি শুরু হয়। রাজ্য সরকারের পক্ষে রাজ্যের জিপি অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, মিউটেশন প্রদানকারী সংস্থার নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে হাইকোর্টে মামলা করা যায় না। তিনি বলেন, বেঙ্গল শ্রীরামের দায়ের করা মামলার যথাযথ জায়গা হল ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনালের রায়ে আবেদনকারী অসন্তুষ্ট হলে তবেই হাইকোর্টে আসতে পারেন। বাদী পক্ষের আইনজীবী সমরাদিত্য পাল বলেন, রাজ্যের তখনকার সরকার মন্ত্রিসভার বৈঠকে ওই অব্যবহৃত জমি শিল্প-বহির্ভূত কাজে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তাই এই নিষ্ক্রিয়তা সরকারের। হাইকোর্টই এর বিচারের উপযুক্ত জায়গা। দু’পক্ষের কৌঁসুলিরাই এই ধরনের বিভিন্ন মামলার উল্লেখ করে যুক্তি দেখান এবং নানান রায়ের নজির টেনে সওয়াল করেন। সমরাদিত্যবাবু বলেন, এই মামলা কেন হাইকোর্টেই হওয়া উচিত, সেই বিষয়ে তিনি সবিস্তার বক্তব্য পেশ করতে চান। বিচারপতি তপেন সেন জানান, পূজাবকাশের পরে সওয়ালের দিন জানানো হবে। |