সিঙ্গুর শুনানি
টাটাদের ‘অশান্তি’র যুক্তি ওড়ালেন কল্যাণ
সিঙ্গুর থেকে ন্যানো গাড়ি প্রকল্প গুটিয়ে নিয়ে চলে যাওয়ার পিছনে কলকাতা হাইকোর্টের কাছে রাজনৈতিক আন্দোলনকেই দায়ী করেছিল টাটা মোটরস। ওই সময় কারখানার কর্মীদের উপর আক্রমণ, হুমকি, ধর্না, রাস্তা অবরোধ-সহ নানা কারণে সিঙ্গুরের পরিস্থিতি অশান্ত ও ভীতিপ্রদ হয়ে উঠেছিল বলে বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের এজলাসে সংস্থার পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল। বুধবার, সেই অভিযোগকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন রাজ্য সরকারের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর যুক্তি, শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, প্রতিটি রাজ্যেই রাস্তা অবরোধ, শ্রমিক আন্দোলন ও রাজনৈতিক মিটিং-মিছিল হয়। সিঙ্গুরের ক্ষেত্রে টাটা মোটরসের ওই বক্তব্য অযৌক্তিক। বিচারপতিকে তিনি জানান, ২০০৮ সালে যে সময় কারখানার সামনে ধর্না, রাস্তা অবরোধের কথা বলা হয়েছে, তা হয়েছিল মাত্র ১০ দিনের জন্য। তা-ও ছিল আংশিক পথ অবরোধ। ওই সময় রাজ্য সরকারও তার দায়িত্ব পালন করেছে। কারখানার কর্মীদের নিরাপত্তার জন্য ২৮ জন ডিএসপি এবং বেশ কয়েক জন পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে সর্বক্ষণের জন্য ৬২৯ জনের মতো কনস্টেবেলকে মোতায়েন করা হয়েছিল। ইচ্ছে থাকলে টাটা মোটরস কাজ চালিয়ে যেতে পারত বলে বিচারপতির সামনে কল্যাণবাবু দাবি করেছেন।
২০০৬ সালে রাজ্য সরকার সিঙ্গুরের জমি অধিগ্রহণ করে লিজ চুক্তির ভিত্তিতে টাটা মোটরস-কে কারখানা গড়ার জন্য দেয়। হাইকোর্টে মামলার শুরুতেই টাটা মোটরস কর্তৃপক্ষ দাবি করে, ১৮০০ কোটি টাকা লগ্নি করে সিঙ্গুরে তারা কারখানা নির্মাণের কাজও প্রায় শেষ করে ফেলেছিল। পরীক্ষামূলক ভাবে শুরু হয়েছিল গাড়ি উৎপাদনও। কিন্তু লাগাতার রাজনৈতিক আন্দোলনের জেরে, ২০০৮ সালের অক্টোবর মাসে তারা প্রকল্প গুটিয়ে অন্য রাজ্যে চলে যেতে বাধ্য হয়। কারণ সিঙ্গুরের কারখানায় ওই সময় উৎপাদন চালানো সম্ভব ছিল না। আদালতের কাছে টাটা মোটরস-এর এই সওয়ালেরই ধাপে ধাপে জবাব দিয়ে চলেছে রাজ্য সরকার। কল্যাণবাবুর আগে সরকারের পক্ষ থেকে অ্যাডভোকেট জেনারেল অনিন্দ্য মিত্রও বিচারপতির কাছে দাবি করেছিলেন, সিঙ্গুর ছেড়ে চলে যাওয়ার পিছনে টাটাদের রাজনৈতিক আন্দোলনের যুক্তি অজুহাতমাত্র। ধৈর্য ধরে তারা আরও কিছু দিন অপেক্ষা করতেই পারত। কিন্তু তারা তা করেনি। কল্যাণবাবু এ দিন আরও এক ধাপ এগিয়ে বিচারপতিকে জানান, সিঙ্গুর আইনে রাজ্য সরকার যথেষ্ট খোলামেলা মনেরই পরিচয় দিয়েছে। যে সাংবিধানিক ক্ষমতা বলে রাজ্য আইন প্রণয়ন করে সিঙ্গুরের জমি ফিরিয়ে নিয়েছে, সেখানে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রসঙ্গটিই আসে না। তবুও সিঙ্গুর আইনে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলা আছে। আইন মোতাবেক টাটা মোটরস কর্তৃপক্ষ হুগলি জেলা জজের কাছে ক্ষতিপূরণ চেয়ে আবেদন করতে পারেন। জেলা জজের সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট না হলে, তাদের হাইকোর্টেরও দ্বারস্থ হওয়ার সুযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, রাজ্য সরকার সিঙ্গুরের জমি ফের জনস্বার্থে ব্যবহার করতে চায় বলেই ফিরিয়ে নিয়েছে। রাজ্য চায়, টাটা মোটরস তার প্রাপ্য ক্ষতিপূরণ বুঝে নিয়ে চলে যাক। আজ, বৃহস্পতিবার রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে জবাব দেবেন সরকারি কৌঁসুলি অশোক বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পর ফের টাটাদের আইনজীবী সমরাদিত্য পাল জবাব দেওয়া শুরু করবেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.