খুনের ঘটনায় ধৃত এক কংগ্রেস কর্মীকে লকআপে মারধরের অভিযোগ তুলে কাটোয়া বাসস্ট্যান্ডে বাস চলাচল বন্ধ করে দিল আইএনটিইউসি। সুরহক শেখ নামে ওই কংগ্রেস কর্মী বর্তমানে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি। তবে সন্ধ্যায় কয়েকটি বাস চলাচল শুরু করেছে।
বুধবার বিকেলে সুরহকের স্ত্রী হালিমা বিবি কাটোয়া এসিজেএম আদালতে পুলিশের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ দায়ের করেন। কাটোয়ার কংগ্রেস বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “অভিযুক্তকে মারধরের অধিকার পুলিশকে কেউ দেয়নি।” তবে বর্ধমানের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীরের দাবি, “লকআপে মারধর করা হয়নি। ধরার সময়ে একটু ধস্তাধস্তি হয়েছিল। তবু অভিযোগ যখন উঠেছে, খতিয়ে দেখব।”
কয়েক বছর আগে কাটোয়া বাসস্ট্যান্ডেই এক সিটু কর্মীকে খুনের অভিযোগে মঙ্গলবার রাতে হরিপুর গ্রামের বাড়ি থেকে সুরহককে ধরা হয়েছিল। এ দিন সকালে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তিনি চিকিৎসককে জানান, গ্রেফতার করার সময়ে বাড়িতেই স্ত্রীর সামনে তাঁকে মারধর করেছিল পুলিশ। বাড়ির জিনিসপত্রও ভাঙচুর করা হয়। পরে থানায় নিয়ে গিয়ে রাতভর পেটানো হয়। গোটা শরীরে দাগ, শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। অবস্থার গুরুত্ব বুঝে সুরহককে ভর্তি করে নিয়ে অক্সিজেন চালু করা হয়। এ দিন হাসপাতাল সুপারের ঘরে বসে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই চিকিৎসক বলেন, “ওঁর মুখে শোনা সমস্ত কথা লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। এখন ওঁকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। শল্য চিকিৎসকের পরামর্শ চাওয়া হচ্ছে।”
বিষয়টি জানাজানি হতেই দুপুরে কাটোয়া থেকে সমস্ত রুটের বাস বন্ধ করে দেয় আইএনটিইউসি। সমস্যায় পড়েন নিত্যযাত্রী ও সাধারণ মানুষ। সুরহক ওই বাসস্ট্যান্ডে তাঁদের সংগঠনের সহ-সভাপতি দাবি করে আইএনটিইউসি-র জেলা নেতা নারায়ণচন্দ্র সেন বলেন, “পুলিশি নির্যাতনের প্রতিবাদেই আমরা আন্দোলনে নেমেছি।” বিধায়ক বলেন, “অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা নিয়ে আমাদের কোনও বক্তব্য নেই। কিন্তু তা বলে পুলিশ এমন মারবে যে অক্সিজেন চালাতে হবে!”
সিপিএমের কাটোয়া জোনাল কমিটির সম্পাদক অঞ্জন চট্টোপাধ্যায় পাল্টা বলেন, “শাসকদের লোকজন পুলিশ-প্রশাসনের কাজে বাধা দিচ্ছে। আমাদের দাবি, তাদের কাজ করতে দেওয়া হোক।” বলেন, “খুনের ঘটনায় গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকায় সুরহক শেখকে ধরা হয়েছে। আমাদের ধারণা, সে অস্ত্র ব্যবসাতেও যুক্ত ছিল। আমরা সব দিক খতিয়ে দেখছি।” |