বলুন কম, শুনুন বেশি, কর্মীদের পরামর্শ বুদ্ধের
রাজ্যের ‘পরিবর্তিত’ রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে মানুষের বক্তব্য ধৈর্য ধরে শোনার জন্য দলের কর্মীদের পরামর্শ দিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তাঁর মতে, সিপিএমের নেতা-কর্মীদের এখন কম বলা এবং বেশি শোনার সময়। মানুষের কাছে শিক্ষা নিয়ে এবং তাঁদের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠিত করেই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে ক্ষমতাচ্যুত দলকে।
সিটুর জেলা সম্মেলন উপলক্ষে উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামে মঙ্গলবার এক কর্মিসভায় বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় দলের কর্তব্য সম্পর্কে বক্তা ছিলেন বুদ্ধবাবু। সেখানে বিগত সরকারের কিছু দোষ-ত্রুটির কথাও এসেছিল। দলীয় সূত্রের খবর, সিঙ্গুরে এক সময় যে পরিস্থিতি আর তাঁদের ‘হাতে ছিল না’, তা-ও উল্লেখ করেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। তবে তাঁর বক্তব্যে সর্বাধিক গুরুত্ব ছিল মানুষের কথা শোনার উপরেই। দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বুদ্ধবাবু বলেন, তাঁরা বলে যাবেন আর মানুষ শুনবেন এই রেওয়াজ আর চলবে না। বাড়ি বাড়ি গিয়ে এখন মানুষের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে। এখন তাঁদের বলার নয়, শোনার সময়! সন্ত্রাস-সহ পরিস্থিতি মোকাবিলা করেই দলকে ‘ঘুরে দাঁড়াতে’ হবে।
মধ্যমগ্রামের কর্মিসভায়। নিজস্ব চিত্র।
বিধানসভা নির্বাচনে পরাজিত হয়ে মুখ্যমন্ত্রিত্ব হারানোর পরে এখন থেকেই ফের জেলা-সফর শুরু হল সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য বুদ্ধবাবুর। মধ্যমগ্রামের পরে এই সপ্তাহেই শনিবার কৃষক সভার আয়োজনে একটি সভায় বক্তৃতা করতে তাঁর যাওয়ার কথা উত্তর ২৪ পরগনারই হাড়োয়ায়। শাসন সংলগ্ন যে এলাকায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমানায় প্রথম বার কৃষক ও পুলিশের বড়সড় সংঘর্ষ হয়েছিল। তার পরে হুগলির শ্রীরামপুরে গণসংগঠনেরই একটি সম্মেলনে যাওয়ার কর্মসূচি রয়েছে বুদ্ধবাবুর।
মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন দু’বছর আগে মার্কিন রাষ্ট্রদূত টিমোথি রোমারের সঙ্গে বৈঠকে বুদ্ধবাবু বলেছিলেন, নিজেদের বদলাতে না-পারলে দল ধুয়েমুছে যাবে এমনই তথ্য ফাঁস করেছিল ‘উইকিলিকস’। সেই ঘটনার পরে এ দিনই প্রথম আলিমুদ্দিনের বাইরে পা রাখলেও মধ্যমগ্রামের মঞ্চে তা নিয়ে কোনও কথা বলেননি বুদ্ধবাবু। বরং, মধ্যমগ্রাম পুরসভার নজরুল শতবার্ষিকী হলে ওই সভায় বাম নেতা-কর্মীদের উপরে শাসক দলের সন্ত্রাসের অভিযোগই ফের তুলেছেন তিনি। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর মতে, নতুন সরকার তার প্রথম ১০০ দিনে কী কাজ করেছে, সবই তাঁরা লক্ষ করেছেন। পাহাড়ের চুক্তি হয়েছে কিন্তু তা নিয়ে অনেক রকম প্রশ্ন রয়েছে। এক কালে তৃণমূল নেত্রী বলতেন, ‘মাও-ফাও’ বলে কিছু নেই। কিন্তু এখন সেই মাওবাদীদের জন্যই আত্মসমর্পণের প্যাকেজ ঘোষণা হচ্ছে আবার মাওবাদীরা নতুন করে সংগঠিতও হচ্ছে। আর এ সবের মধ্যেই হাতে পুলিশ-প্রশাসন থাকার ‘সুযোগ’ নিয়ে শাসক দলের লোকজন বিরোধীদের উপরে অত্যাচার চালাচ্ছে। তাদের উপরে শারীরিক আক্রমণ হচ্ছে, জমি থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে, অস্ত্র উদ্ধারের ‘নাটক’ চলছে! বাম নেতা-কর্মীদের একের পর এক ‘মিথ্যা মামলা’য় ফাঁসানো হচ্ছে বলেও বুদ্ধবাবু অভিযোগ করেন। দলীয় সূত্রের ব্যাখ্যায়, প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষ-সহ বিভিন্ন নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এবং মামলার কথাই বোঝাতে চেয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.