পুলিশি প্রহরা, সর্বদলীয় বৈঠক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তালা ঝোলানকোনও কিছুতেই বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজে শান্তি ফিরছে না।
মঙ্গলবার ফের এক দল ‘দুষ্কৃতী’র তান্ডবে রক্তাক্ত হল ওই কলেজ। এ দিন দুপুরে লোহার রড এবং লাঠি নিয়ে পাঁচিল টপকে আসা ওই যুবকদের বেধড়ক মারধরে গুরুতর জখম হয়েছেন ছাত্র পরিষদের ৩ সমর্থক। তাঁদের বহরমপুর নিউ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। আহতদের মধ্যে রয়েছেন কলেজের ছাত্র পরিষদের কলেজ ইউনিটের শাখা সভাপতি ইন্দ্রনীল বিশ্বাস। তাঁর মাথায় ৮টি সেলাই করতে হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি অন্য দু-জন কলেজ পরিচালন সমিতির ছাত্র প্রতিনিধি অনুপকুমার সরকার এবং ছাত্র সংসদের সাংস্কৃতিক বিভাগের সম্পাদক রাণা প্রধান।
পুলিশ-পাহারা থাকা সত্ত্বেও এ দিনের ঘটনায় ক্ষুব্ধ কলেজ অধ্যক্ষ সোমেশ রায়। তিনি বলেন, ‘‘এ দিনের ঘটনাকে দু’ দল ছাত্রের মধ্যে সংর্ঘষ বলা যাবে না। কয়েক জন ছাত্র কলেজের ভিতরে বসে ছিল। অন্য এক দল পাঁচিল টপকে কলেজে ঢুকে ওই ছাত্রদের মারধর করে। পুলিশ পাহারা থাকা সত্ত্বেও এ দিন যা ঘটল তাকে নিন্দা করার ভাষা নেই। এমন ঘটতে থাকলে কলেজ বন্ধ করে দিতে হবে, নইলে কোনও ছাত্র খুন হলে কে দেখবে!” |
এ দিনের ঘটনার বিষয়ে কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা দুপুরেই বৈঠক করেন। বুধবার কলেজের তাঁরা এক সঙ্গে অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন)-এর কাছে গিয়ে নিরাপত্তা চাইবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আন্নাপ্পা ই বলেন, “ঘটনার বিষয়ে জানতে ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ বাহিনী নিয়ে বহরমপুর থানার আই সি-কে ওই কলেজে পাঠানো হয়েছে।”
ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি হাসানুজ্জামান বাপ্পা বলেন, ‘‘এ দিন দুপুর আড়াইটে নাগাদ ওই কলেজের আমাদের সমর্থকেরা ইউনিয়ন রুমের সামনে বসে বৈঠক করছিল। এমন সময় কলেজের পাঁচিল লাগোয়া তৃণমূলের জেলা কার্যালয় থেকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি পার্থ পাল ও কলেজ ইউনিটের শাখা সভাপতি জয়ন্ত কর্মকারের নেতৃত্বে এক দল সশস্ত্র দুষ্কৃতী ঢুকে পড়ে। তারপর যথেচ্ছ মারধর করে। পুলিশের সামনে দিয়েই পালিয়েও যায় তারা।” এর পরই ছাত্র পরিষদের সমর্থকেরা টির্চাস রুমে ঢুকে ভাঙচুর করে বলে জানা গিয়েছে।
পার্থ পালের অবশ্য পাল্টা অভিযোগ, “তৃণমূল ছাত্রপরিষদের সদস্য বি এ প্রথম বর্ষের ছাত্র শুভ মণ্ডলকে ছাত্রপরিষদের নেতা ইন্দ্রনীল ও তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গরা মারধর করে। সেই ঘটনা ধামাচাপা দিতেই ছাত্রপরিষদ এ দিন আমাদের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে। এ দিনের ঘটনা নিছকই কংগ্রেসের গোষ্ঠী বিবাদ।” তবে পার্থবাবুর ওই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে ছাত্রপরিষদ। |