জেলে আর মেঝেতে কম্বল বিছিয়ে শুতে হবে না প্রাক্তন সিপিএম মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষকে। আদালত তাঁর আর্জি মেনে নিয়েছে। প্রাক্তন মন্ত্রীর জন্য বরাদ্দ হয়েছে খাট। তাঁকে দেওয়া হয়েছে মশারিও। শুধু তা-ই নয়, দু’বেলাই তাঁর জন্য বরাদ্দ হয়েছে মাছ। যদিও অন্য বন্দিরা এক বেলা মাছ পান।
গড়বেতা-৩ ব্লকের বেনাচাপড়ার কঙ্কাল-কাণ্ডে অভিযুক্ত সুশান্তবাবু গত ২০ অগস্ট থেকে আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে রয়েছেন সুশান্তবাবু। দু’রাত তিনি জেল হাসপাতালে ছিলেন। সেখান থেকে তাঁকে রাখা হয় তিন নম্বর সেল ওয়ার্ডের ন’নম্বর ঘরে। তাঁর জন্য বরাদ্দ হয় তিনটি কম্বল। একটি মেঝেতে পেতে শোয়ার জন্য। খাট-মশারি না-থাকায় রাতে তাঁর ঘুম হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন সুশান্তবাবু। খাট ও মশারি দেওয়ার জন্য তিনি জেল-কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন। সোমবার মেদিনীপুর আদালত তাঁকে খাট, মশারি ইত্যাদি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। জেলে সুশান্তবাবুকে প্রথম শ্রেণির বন্দির মর্যাদা দেওয়ার আবেদনও মঞ্জুর করেছে আদালত।
সোমবার রাত প্রায় ৯টা নাগাদ মেদিনীপুর আদালত থেকে সুশান্তবাবুকে ফিরিয়ে আনা হয় আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে। এ বার আর সেলে নয়। জেল হাসপাতালের চার নম্বর ওয়ার্ডের একটি ঘরে তাঁকে রাখা হয়েছে। সেখানে খাটের ব্যবস্থা আছে। মশারিও দেওয়া হয়েছে তাঁকে। ওই ঘরে দেওয়া হয়েছে চেয়ার ও টেবিল। মঙ্গলবার সকালে তাঁর ঘরে বেশ কয়েকটি খবরের কাগজও দেওয়া হয়েছে বলে জেল সূত্রের খবর। সুশান্তবাবুর আইনজীবী সঞ্জীব গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী সব ব্যবস্থা করা হয়েছে কি না, তাঁর কোনও সমস্যা রয়েছে কি না, তা জানতে বুধবার আমি ওই জেলে যাব।”
|
পশ্চিম মেদিনীপুরেরই পটাশপুরে কঙ্কাল-কাণ্ডে ১০ অভিযুক্ত আগাম জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে পাঁচ অভিযুক্তের আবেদন মঞ্জুর করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু অন্য পাঁচ অভিযুক্তের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছে। বিচারপতি গিরীশ গুপ্ত ও বিচারপতি রঘুনাথ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে, পাঁচ অভিযুক্তকে পুলিশি হাজতে রেখে জেরা করার প্রয়োজন আছে বলে মনে করছে তারা। মঙ্গলবার যে-পাঁচ জনের আগাম জামিন মঞ্জুর হয়েছে, তাঁরা বিনয় আদক, নিরঞ্জন সুকাই, নারু মাইতি, অমরেন্দ্রনাথ বণিক ও শ্যামাপদ পট্টনায়েক।
২০০১ সালের ১ জানুয়ারি পটাশপুরে সিপিএম এবং তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সেই সংঘর্ষে অখিল পট্টনায়েকের ছেলে ত্রিদিব পট্টনায়েক মারা যান। পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়। সম্প্রতি ওই এলাকায় কিছু কঙ্কাল উদ্ধারের পরে অখিলবাবু গত ১০ জুন নতুন এফআইআর করেন। তাঁর বক্তব্য, সংঘর্ষের পরে যাঁদের খোঁজ মেলেনি, ওই কঙ্কাল তাঁদেরই। তিনি এফআইআরে বেশ কয়েক জনের নামে অভিযোগ করেন। তার ভিত্তিতে তদন্তে নামে পুলিশ। তদন্ত শুরু হওয়ার পরেই এফআইআরে অভিযুক্তদের মধ্যে ১০ জন কলকাতা হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করেন। |