ফেডারেশন কাপে মোহনবাগানের দৌড় শুরু ১৭ সেপ্টেম্বর। পুণের গ্রুপ রাউন্ড নিয়ে অবশ্য চিন্তা-ভাবনা শুরু করে দিয়েছেন তারকারা। কেউ ভাবছেন সমর্থকদের পাশে না থাকা নিয়ে। কেউ বুক বাঁধছেন দলের তারকাদের কথা ভেবেই।
সবুজ-মেরুনের ঘরের ছেলে হোসে রামিরেজ ব্যারেটো যেমন। বলছিলেন, “আমি বড় ফুটবলারদের সঙ্গে খেলতেই পছন্দ করি। জেতার চাপ যে কোনও ক্লাবেই থাকে, সেটা থাকবে। কিন্তু বড় বড় নাম থাকার জন্য অতিরিক্ত চাপ আছে, সে রকম ভাবছি না।” সোমবারের প্রস্তুতি ম্যাচের গোলটা ব্যারেটো নিজেকেই উৎসর্গ করতে চান। “মরসুম শুরুর আগে এই গোলটা আমার উৎসাহ অনেক বাড়িয়ে দিল,” ক্লাব তাঁবু ছেড়ে যাওয়ার আগে বললেন তিনি।
আক্রমণে তাঁর সঙ্গী সুনীল ছেত্রী আবার বড় তারকার উপর দলের নির্ভরতা চান না। “তারকারা দলে আছে এটা অবশ্যই ভাল। কিন্তু আমাদের খেলতে হবে একটা দল হিসাবে। আর সবাইকেই দায়িত্ব নিতে হবে,” বললেন সুনীল। যিনি মনে করেন একটা দল হিসাবে খেলার জন্য আগে দরকার খুশির মধ্যে থাকা। বলছিলেন, “আমাদের কোচও দেখেন ফুটবলাররা খুশিতে আছে কি না। আমার সঙ্গে প্রথম আলাপ হওয়ার সময়েই কোচ জানতে চেয়েছিলেন আমি খুশি কি না।” দল হিসাবে খেলার কথা বললেও তাঁর কোচ স্টিভ ডার্বি ভরসা রাখছেন তারকাদের উপরেই। ডার্বির কথায়, “বড় ফুটবলাররা বড় ম্যাচেই সফল হয়। তারকারা থাকার জন্য জেতার চাপ তাই মোটেই বাড়ছে না। বরং টিমের ভাল খেলার সম্ভাবনা আরও জোরদার হচ্ছে।”
তারকার ছড়াছড়ি থাকা সত্ত্বেও যেখানে ব্যারেটো-সুনীলরা অতিরিক্ত চাপে থাকার কোনও কারণ দেখছেন না, সেখানে উল্টো সুর অন্য এক তারকা রহিম নবির গলায়। অনুশীলন সেরে তাঁবুতে ফেরার পথে বলছিলেন, “অনেক দিন পর মোহনবাগান এত ভাল টিম করেছে। চাপ তো থাকবেই। গতকালের প্র্যাক্টিস ম্যাচেই তো প্রায় সাত-আট হাজার লোক হয়েছিল।” নতুন নতুন তারকায় ভরা সবুজ-মেরুনের প্রথম টুর্নামেন্টের শুরুর রাউন্ড পুণের মাঠে খেলতে হবে বলে তাই অনেক স্বস্তিতে নবি। “আমার মনে হয় কলকাতায় খেলতে হবে না বলে চাপ অনেকটাই কমে যাবে। অন্তত প্রথম রাউন্ডেই চাপটা থাকছে না।”
এতে অবশ্য একমত নন ব্যারেটো থেকে সুনীল। সুনীল বললেন, “ঘরের মাঠে সমর্থকদের চিৎকারের সামনে খেলার সুবিধাই বেশি।” কোচ ডার্বির কথায়, “অল্প কয়েক জন সমর্থক থাকলে অনেক বড় ফুটবলারই ঝিমিয়ে পড়ে। তাদের পছন্দ মাঠের ধারে সমর্থকদের বিশাল ভিড়। তবে এটা নিয়ে ভেবে কোনও লাভ নেই। সূচি তৈরি তো আমার হাতে নেই।” ব্যারেটো-র ব্যক্তিগত পছন্দ ঘরের মাঠ। কিন্তু এ বারের ফেডারেশন কাপে পুণের মাঠে খেলার সুবিধা যুবভারতীর তুলনায় অনেক বেশি মনে করছেন তিনি। ব্যারেটো বলছিলেন, “যুবভারতীর কৃত্রিম মাঠে পাঁচ দিনে তিনটি ম্যাচ খেলতে হলে কষ্ট অনেক বেশি হত। সে জায়গায় পুণের ঘাসের মাঠে আমাদেরই সুবিধা হবে।”
বুধবার বিকালে ঋষীকেশ পার্কে মোহনবাগানের ‘গোল’ প্রজেক্টের উদ্বোধন। শহরের ১২ থেকে ১৮ বছরের দরিদ্র ছেলেদের ফুটবলে উৎসাহ বাড়ানোর জন্যই এই উদ্যোগ। এ দিকে ময়দানে নৈশ ফুটবল চালু করতে চান ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্র। মোহনবাগান মাঠের ফ্লাডলাইট দীর্ঘ দিন বন্ধ। মন্ত্রী কিন্তু ইস্টবেঙ্গল-মহমেডান মাঠেও ফ্লাডলাইট চালু করতে চান। যুবভারতী কী ভাবে ব্যবহার করা যায় তা নিয়ে সব পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসছেন তিনি। |