স্টেশনারি দোকান থেকে সব্জি বাজার। আসানসোল জুড়ে প্লাস্টিক প্যাকেটের ছড়াছড়ি। দেরিতে হলেও অবশেষে নিষিদ্ধ প্লাস্টিক প্যাকেটের ব্যবহার রুখতে রাস্তায় নামল প্রশাসন।
মঙ্গলবার আসানসোল বাজার এলাকায় অভিযান চালান অতিরিক্ত জেলাশাসক তথা পুর কমিশনার বিশ্বজিৎ দত্ত। সঙ্গে ছিলেন পুরসভার কয়েক জন কর্মী। কিন্তু শহরের মেয়র বা বরো চেয়ারম্যান কারওরই দেখা মেলেননি। ছিলেন না এলাকার বেশির ভাগ কাউন্সিলরও। অথচ দিন কয়েক আগে মেয়রের উপস্থিতিতেই পুরসভায় বিশেষ বৈঠক ডেকেই অভিযানের দিনক্ষণ স্থির হয়েছে। ফলে, প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে আসানসোল পুরসভার সদিচ্ছা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন শহরবাসী। |
এ দিন সকাল ৮টা নাগাদ আসানসোলের অতিরিক্ত জেলাশাসক বিশ্বজিৎ দত্ত কয়েক জন পুরকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে বাজার এলাকায় যান। প্রায় দু’ঘন্টা ধরে অভিযান চলে। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শিউপ্রসাদ বর্মন। বিশ্বজিৎবাবু বলেন, “আমরা বিশেষ করে দোকানদারদের সচেতন করেছি। ক্রেতারা চাইলেও বিক্রেতারা যেন কোনও ভাবেই প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ না দেন, সেটা কঠোর ভাবে বলেছি।”
অভিযানে তাঁর অনুপস্থিতি বিষয়ে মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “আমি ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে বিপিএলের চাল বিলির অনুষ্ঠানে ছিলাম। কিন্তু ওই এলাকার কাউন্সিলরদের অভিযানে থাকতে বলেছিলাম।” তাঁরাও কেন আসেননি, সে ব্যাপারে খোঁজ নেবেন বলে মেয়র জানিয়েছেন। পরের অভিযানগুলিতে সবাই হাজির থাকবেন বলেও তিনি আশ্বাস দেন।
মঙ্গলবার বাজার অঞ্চলের ১৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে অভিযান শুরু হয়। ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর উমা শরাফের দাবি, “আমি তো এই অভিযানের কথা জানতামই না। আমাকে কেউ খবর দেননি।” মেয়র অবশ্য দাবি করেছেন, সবাইকেই খবর দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় বরো চেয়ারম্যান দয়াময় রায় আবার বলেন, “পারিবারিক সমস্যার কারণে আমি যেতে পারিনি। তবে আমার পরিবর্তে সেখানে অন্য কাউকে দায়িত্বও দিইনি।”
শহরের মেয়র বা কাউন্সিলারেরা অভিযানে না যাওয়ায় অনেকেই কিন্তু এখনও বিষয়টিকে হালকা করে দেখছেন। এ দিন পুর কমিশনার অভিযান চালিয়ে ফিরে যেতেই ফের যথেচ্ছ প্লাস্টিকের ব্যবহার শুরু হয়ে যায়। ক্রেতারাও যেমন প্লাস্টিক চেয়ে নিয়েছেন, বিক্রেতারাও অকাতরে বিলি করেছেন। তবে মেয়র জানান, এ বার থেকে ধারাবাহিক ভাবে অভিযান চলবে। প্রথম কয়েক দিন সচেতনতা বাড়ানোতে কর্মসূচি সীমাবদ্ধ রাখা হবে। তার পরেই আইন প্রয়োগ করে জরিমানা করা হবে।
কথা হল, পুর কর্তৃপক্ষ আগেও বহুবার এক-আধ দিন ‘অভিযান’ করেছেন। কিন্তু ধারাবাহিক অভিযান হয়নি। পরিস্থিতির কতটা ‘পরিবর্তন’ হয়েছে, তার প্রমাণ মিলবে আগামী কয়েক দিনেই। |