সিঙ্গুরের জমি টাটাদের কাছ থেকে অধিগ্রহণ করা হয়নি, রাজ্য তার নিজের মালিকানা স্বত্ব ফিরিয়ে নিয়েছে বলে মঙ্গলবার ফের কলকাতা হাইকোর্টে দাবি করলেন সরকার পক্ষের আইনজীবী শক্তিনাথ মুখোপাধ্যায়।
এর আগে রাজ্য সরকারের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল অনিন্দ্য মিত্রও আদালতে দাবি করেছিলেন, আইন প্রণয়ন করে সিঙ্গুরের জমি অধিগ্রহণ করা নেওয়া হয়েছে বলে যে অভিযোগ করা হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। ওই জমির মালিক রাজ্য সরকারই। গাড়ি কারখানা তৈরির জন্য সিঙ্গুরের জমি চাষিদের কাছ থেকে অধিগ্রহণ করে টাটা মোটরস-কে লিজ চুক্তির মাধ্যমে কেবলমাত্র ভোগস্বত্ব দেওয়া হয়েছিল। অধিগৃহীত কোনও জমি ফের অধিগ্রহণ করা যায় না বলেই যুক্তি দিয়েছিলেন অনিন্দ্যবাবু।
হাইকোর্টে সিঙ্গুর মামলার গোড়া থেকেই টাটা মোটরস অভিযোগ করে এসেছে, তাদের সঙ্গে লিজ চুক্তি খারিজ না করেই আইনবলে জমি অধিগ্রহণ করে নিয়েছে রাজ্য সরকার। এমনকী, ওই জমি যে অধিগ্রহণ করা হচ্ছে, তা-ও টাটা মোটরস কর্তৃপক্ষকে আগাম বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়নি। এই অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ বেআইনি এবং অসাংবিধানিক বলে বারবার বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের এজলাসে আবেদন জানান টাটা মোটরস-এর আইনজীবী সমরাদিত্য পাল। পরবর্তী কালে বিচারপতিও রাজ্য সরকারের কাছে বেশ কয়েক বার জানতে চান, ৯০ বছরের চুক্তিতে যে জমি টাটা মোটরস-কে কারখানা গড়ার জন্য দেওয়া হয়েছিল, তা কী করে ফের অধিগ্রহণ করে নেওয়া হল।
শক্তিনাথবাবু এ দিন বিচারপতিকে আইনের বিভিন্ন ধারার ব্যাখ্যা দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, কোন অধিকারে রাজ্য সরকার সাংবিধানিক পথেই সিঙ্গুরের জমি ফিরিয়ে নিয়েছে। তাঁর যুক্তি, টাটা মোটরস-কে জমি দেওয়া হয়েছিল কারখানা গড়ার জন্য। সংস্থার সঙ্গে রাজ্যের যে চুক্তি হয়েছিল, তাতে তিন বছরের মধ্যে সেখানে প্রকল্প গড়ার কাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু সেই সময়সীমার মধ্যে সিঙ্গুরে কারখানা তো হয়ইনি, বরং সংস্থা কর্তৃপক্ষই পরে রাজ্যকে চিঠি লিখে সিঙ্গুর থেকে কারখানা গুটিয়ে নিয়ে চলে যাওয়ার কথা জানায়। এই অবস্থায় রাজ্য সরকার সিঙ্গুরের ওই জমি ফেলে না রেখে, জনস্বার্থেই ফের নিজের অধিকার নিজের হাতে ফিরিয়ে নিয়েছে। |