রাতের শ্রীরামপুর
সন্ধ্যা নামলেই গঙ্গাপাড়ে জমজমাট নেশার আড্ডা
দৃশ্য ১ অল্ডিন হাউস। গঙ্গার ধারে শ্রীরামপুর কলেজের প্রথম ভবনটির এখন জরাজীর্ণ দশা। এক সময়ে যুবকেরা এখানে পড়তে আসতেন। এখন যুবকেরা আসেন মদ খেতে। সকাল থেকে সংখ্যাটা কম থাকে। কিন্তু সন্ধ্যা যত রাতের দিকে গড়ায়, তত নেশাগ্রস্তদের ভিড় বাড়তে থাকে। দলে দলে ভাগ হয়ে তাঁরা আসর জমায়। পাশের ঝোপে ঢাকা আর এক জীর্ণ সৌধ হেনরি মার্টিনস্ প্যাগোডার ধারেও দেখা যায় একই দৃশ্য। নির্জন জায়গাটায় পুলিশের নজর পড়ে না বললেই চলে।
দৃশ্য ২ কলেজ ঘাট। এখানে দিনের বেশির ভাগ সময়টা স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদেরই রমরমা। তবে সন্ধ্যা নামলেই উচ্ছৃঙ্খল যুবকদের হাতে হাতে ঘোরে মদের গ্লাস। মহকুমাশাসকের বাংলোর পিছন দিকের ঘাটের ছবিও একই রকম। এখানে পুলিশ ততটা ব্যবস্থা নেয় না বলে অভিযোগ।
দৃশ্য ৩ শেওড়াফুলি স্টেশনের ওভারব্রিজ। এখানে রোজই সন্ধ্যা থেকে জাঁকিয়ে বসে আঠার নেশা। পাঁউরুটিতে আঠা মাখিয়ে শুঁকতে বিভোর পনেরো থেকে মাঝবয়সী। যাঁরা এই নেশা করেন, তাঁদের বেশির ভাগই ঝুপড়িবাসী। নিত্যযাত্রীদের যাতায়াত করতে অসুবিধা হয়।
শ্রীরামপুর, শেওড়াফুলি বা বৈদ্যবাটি রেল স্টেশনের আশপাশে সন্ধে থেকে রাত পর্যন্ত রমরমিয়ে চলে চোলাই-গাঁজার ঠেক। রাজপথের দখল নেয় মাতালরা। একই অবস্থা দিল্লি রোডের ধারেও। অন্ধকার যত গাঢ় হয়, ততই যেন এলাকা বাড়তে থাকে নেশাগ্রস্তদের। বৈদ্যবাটির নিমাইতীর্থ ঘাটের আশপাশেও গাঁজার আসর চলতে থাকে মাঝরাত পর্যন্ত। মাঝেমধ্যে পরিস্থিতি ঘোরালোও হয়ে ওঠে। শ্রীরামপুর-বৈদ্যবাটির দিল্লি রোডের ধারে কয়েকটি পানশালাতে দুষ্কৃতীদের আনাগোনা চলে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
কিন্তু চোলাইয়ের ভাটিগুলির বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা নেয় না কেন?
সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, বহু ক্ষেত্রেই এক শ্রেণির পুলিশকর্মীর সঙ্গে যোগসাজশে চোলাইয়ের কারবার চলে। ওই পুলিশকর্মীরা নিয়মিত ‘তোলা’ আদায় করে মদের ঠেক বা জুয়ার বোর্ড থেকে। তাই ঠেকের সংখ্যা কমার বদলে বাড়তে থাকে।
তবে, শ্রীরামপুর শহরে দুষ্কৃতীমূলক কাজকর্ম অনেকটাই এখন নিয়ন্ত্রণে। রাতে শহরের নানা প্রান্তে পুলিশের টহল চলে। বেশ কিছু দুষ্কৃতীকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ শহরের দুষ্কৃতীমূলক কার্যকলাপ অনেকটাই বাগে আনলেও স্টেশন লাগোয়া বাজার চত্বরে ইভটিজারদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে বলে অভিযোগ অনেক মহিলারই। তাঁদের বক্তব্য, ভিড়ের সুযোগে যুবকেরা মোবাইলে তরুণীদের ছবি তুলে নিচ্ছে। প্রায়ই কটূক্তিও শুনতে হচ্ছে। ‘কাজ’ সেরেই ওই যুবকেরা ভিড়ে মিশে যাচ্ছে। ফলে, সহজে তাদের ধরাও যাচ্ছে না। অস্বস্তি বাড়ছে ওই তরুণী এবং তাঁর সঙ্গে থাকা অভিভাবকদের।
হুগলির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিল্পাঞ্চল) অমিতাভ বর্মা বলেন, “পুলিশ এলাকার সার্বিক শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে সচেষ্ট। মদের বিরুদ্ধে পুলিশি অভিযান চলছে।’’



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.