গাছ বিক্রিতে দুর্নীতির অভিযোগে গোঘাট-২ ব্লকের সিপিএম পরিচালিত বদনগঞ্জ-ফলুই ২ নম্বর পঞ্চায়েত ঘেরাও করল তৃণমূল। মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় তৃণমূল নেতা অনুপ ঘোষ এবং বিকাশ চানকের নেতৃত্বে শ’খানেক তৃণমূল কর্মী-সমর্থক পঞ্চায়েত অফিসে আসেন। ঘেরাও চলে আধ ঘণ্টা। পঞ্চায়েত প্রধানকে চাপ দিয়ে লিখিত ভাবে দুর্নীতি স্বীকার করিয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তৃণমূল অবশ্য এই অভিযোগ মানেনি।
পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৭ সাল থেকে চলতি বছরের বিধানসভা ভোটের আগে পর্যন্ত গাছ বিক্রি করে ৫০ লক্ষ টাকা মিলেছে। সেই টাকার হিসাব চেয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল তৃণমূল। বিকাশবাবু বলেন, “খাতায়-কলমে পঞ্চায়েত তহবিলে গাছ বিক্রি করে ৫০ লক্ষ টাকা পাওয়ার হিসাব রয়েছে। কিন্তু পঞ্চায়েতের তহবিলে রয়েছে ৩০ লক্ষ টাকা। বাকি ২০ লক্ষ টাকার হদিস নেই। আমরা জানতে পেরেছি, গাছ-ক্রেতারা পঞ্চায়েতের সুপারিশ অনুযায়ী, স্থানীয় এক সিপিএম নেতার হাতে টাকা দিয়েছেন। ওই সিপিএম নেতা পুরো টাকা পঞ্চায়েতকে দেননি।” তাঁর দাবি, “কোনও জোর করা হয়নি। পঞ্চায়েত প্রধানকে দুর্নীতির কথা লিখিত ভাবে স্বীকার করতে বলা হয়। তিনি তা মেনে নেন। বিষয়টি বিডিওকে জানানো হবে।”
প্রধান সিপিএমের শ্যামলী মণ্ডল তৃণমূল নেতাদের লিখে দেন, ‘গত ২ সেপ্টেম্বর গাছ বিক্রি সংক্রান্ত পঞ্চায়েত থেকে যে হিসাব দেওয়া হয়েছে, সেই হিসাবের কিছু টাকা বেআইনি ভাবে খরচ করা হয়েছে’।
এই বক্তব্য অবশ্য তাঁকে দিয়ে জোর করে লিখিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে শ্যামলীদেবীর দাবি। তিনি বলেন, “টেন্ডার অনুযায়ীই গাছ বিক্রি করা হয়েছে। কিছু টাকা অফিসে জমা পড়েনি। সেই টাকা পানীয় জলের কল সারানোর মতো জরুরি কিছু উন্নয়ন খাতে খরচ হয়েছে। কিন্তু তৃণমূল তা মানতে চাইছে না। ওরা জোর করায় অশান্তি এড়াতে আমি বেআইনি খরচের কথা লিখে দিই।”
প্রসঙ্গত, সমাজভিত্তিক বনসৃজন প্রকল্পের গাছ বিক্রি করতে হলে পঞ্চায়েতকে টেন্ডার ডাকতে হয়। সর্বোচ্চ যিনি দর দেন, তাঁকেই গাছ কাটার বরাত দেওয়া হয়। ওই টাকা সরাসরি পঞ্চায়েত তহবিলে জমা পড়বে। সেই টাকায় কোনও গ্রামোন্নয়নের কাজ করাতে হলে গ্রামোন্নয়ন কমিটির মাধ্যমে তা করাতে হবে, এটাই নিয়ম। |