|
|
|
|
বাবা ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’, তদন্ত চেয়ে ছেলের চিঠি জেলাশাসককে |
অত্রি মিত্র • পটনা |
দীর্ঘদিন ধরে দেখে আসছেন সরকারি চাকুরে বাবার অবৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জন। বাবাকে ওই কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য একাধিকবার অনুরোধও করেছেন। ফল হয়নি। কিন্তু চোখের সামনে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অণ্ণা হজারের আন্দোলন দেখে চুপ করে বসে থাকতে পারেননি যুবকপুত্র। জেলাশাসকের কাছে চিঠি পাঠিয়ে আর্জি জানিয়েছেন, “আমার বাবা দুর্নীতিগ্রস্ত। অবৈধ উপায়ে অনেক টাকা ও সম্পত্তি করেছেন। ছেলে হয়েও এ ব্যাপারে তদন্ত করার অনুরোধ করছি।”
সত্যনিষ্ঠ এই যুবকের নাম অজয় কুমার রাম। বাড়ি বিহারের বৈশালী জেলার সদর শহর হাজিপুরে। অজয় কোনও রাখঢাক না রেখেই অকপটে জানান, বাবা রামচন্দ্র রাম সরকারি চাকরির সুবাদে বাঁ হাতে বহু টাকা কামিয়েছেন। রামচন্দ্র জেলার সরবরাহকারী অফিসার (ডিস্ট্রিক্ট সাপ্লাই অফিসার) ছিলেন। বৈশালীর জেলাশাসক প্রেম সিংহ মিনাকে চিঠি লিখে অজয় জানিয়েছেন, তাঁর বাবা চাকরিতে থাকার সময়ে প্রচুর অর্থ বেআইনি উপায়ে উপার্জন করেছেন। অবিলম্বে তার তদন্ত হোক। কোথায় কোথায়, কী ভাবে তাঁর বাবা আয়-বহির্ভূত অর্থ উপার্জন করেছেন, তার বিস্তারিত বিবরণও দিয়েছেন। তদন্ত হলে জেলা প্রশাসনকে সমস্ত রকম সাহায্য করারও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
অজয় বলেন, “অণ্ণার আন্দোলন আমার চোখ খুলে দিয়েছে। বাবার বেআইনি ভাবে অর্জিত সম্পত্তি কিছুতেই ভোগ করতে পারব না। এটা আমার আত্মসম্মানে আঘাত করছে। তাই আমি জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি, বাবা আমার মা ও ভাইয়ের নামে প্রচুর বেআইনি সম্পত্তি করেছেন। আমি চাই, জেলা প্রশাসন এ নিয়ে তদন্ত করুক।” ইতিমধ্যেই অজয় বাবার সঙ্গে না-থাকার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন। এই যুবক বলেন, “আমি অনেক বার বারণ করেছি। কিন্তু উনি কথাই শোনেননি। বাধ্য হয়েই এখন আলাদা থাকি।”
জেলাশাসক প্রেম সিংহ মিনাকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “প্রতিদিনই আমার কাছে ভূরি ভূরি অভিযোগ জমা পড়ে। এটাও হয়তো সে ভাবেই এসেছে। এখনও চিঠিটা হাতে পাইনি। তবে পেলে উপযুক্ত তদন্তের ব্যবস্থা করব।” জেলাশাসকের মন্তব্য, “এ ভাবে যদি পরিবারের সদস্যেরাই দুর্নীতি ধরিয়ে দিতে শুরু করেন, তা হলে অচিরেই দেশে দুর্নীতি কমবে।” তবে বাবা যদি ছেলের উপরে চাপ সৃষ্টি করেন? তাতেও যে তিনি পিছু হঠবেন না, তা সাফ জানান অজয়। অণ্ণাভক্ত ছেলের কথায়, “দেশের আগে কোনও কিছুই নয়। দেশ জুড়ে দুর্নীতি-বিরোধী লড়াই শুরু হয়েছে। আমিও তার এক জন সৈনিক। সেই কারণে, ঘরের মধ্যেই দুর্নীতিকে আমি কখনওই প্রশ্রয় দিতে পারব না।” |
|
|
|
|
|