|
|
|
|
লোকায়ুক্ত শুনানি আজ |
গুজরাতে নির্বাচনের আগে জমি ছাড়তে নারাজ কংগ্রেস |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
রাজ্য সরকারকে পাশ কাটিয়ে গুজরাতে লোকায়ুক্ত নিয়োগ করার প্রতিবাদে আজ নিয়ে টানা চার দিন সংসদ অচল করে রাখল বিজেপি। কঠোর অবস্থান নিয়ে চলছে কংগ্রেসও। আগামী বছর গুজরাতে বিধানসভা ভোট। তার আগে এ ব্যাপারে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়তে নারাজ রাজ্য কংগ্রেস নেতৃত্ব। বরং লোকায়ুক্ত নিয়োগের বিরুদ্ধে নরেন্দ্র মোদী সরকার যে মামলা করেছে, তার রায়ের অপেক্ষায় রয়েছে দল ও কেন্দ্রীয় সরকার। কাল ওই মামলার শুনানি রয়েছে।
গুজরাত প্রশ্নে সংসদ টানা অচল থাকায় বিজেপি-র প্রবীণ নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণী আজ লোকসভার নেতা প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। বিজেপি সূত্রের মতে, চলতি বাদল অধিবেশন শেষের আগেই মনমোহন সরকারের উপর চাপ বাড়িয়ে লোকায়ুক্ত পদ থেকে আর এ মেটাকে সরাতে চায় দল। সরকারকেও বিজেপি নেতৃত্ব জানান, রাজ্যপাল কমলা বেনিওয়ালের অপসারণের দাবি তোলা হলেও দল তাতে খুব একটা আগ্রহী নয়। বরং লোকায়ুক্ত পদ থেকে মেটাকে যদি সরিয়ে দেওয়া হয় কিংবা তিনি নিজে যদি পদত্যাগ করেন, তা হলেই অচলাবস্থা কাটতে পারে সংসদের।
কিন্তু কংগ্রেস নরম হতে নারাজ। প্রণব-আডবাণী বৈঠকে পরই কংগ্রেস মুখপাত্র অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, “দ্বিচারিতা করছে বিজেপি। এক দিকে কঠোর লোকায়ুক্ত গঠনের জন্য বক্তৃতা দিচ্ছে। অন্য দিকে চাইছে গুজরাতে লোকায়ুক্ত নরেন্দ্র মোদীর হাতের পুতুল হোক।” এই প্রসঙ্গে সিঙ্ঘভি উল্লেখ করেন, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির সুপারিশ মেনে ১৯৮৭ সাল থেকে গুজরাতে লোকায়ুক্ত নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। কিন্ত এখন মোদী সরকার চাইছে মুখ্যমন্ত্রীর ‘পছন্দসই’ লোকায়ুক্ত নিয়োগ করা হোক। এমনকী, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি লোকায়ুক্ত পদে প্রাক্তন বিচারপতি আর এ মেটাকে নিয়োগের সুপারিশ করলে মুখ্যমন্ত্রী তা নিয়েও প্রশ্ন তুলে তাঁকে চিঠি দেন। জবাবে প্রধান বিচারপতি জানান, আর এ মেটা যোগ্য ব্যক্তি। এর পর লোকায়ুক্ত আইনেই সংশোধন আনতে তৎপর হন মোদী। তবে মোদী সরকার যখন আদালতে গিয়েছে, সেখানেই ফয়সালা হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেন সিঙ্ঘভি। এ দিন গুজরাত লোকায়ুক্ত প্রসঙ্গে কথা বলতে রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাটিলের সঙ্গে দেখা করেছেন কংগ্রেস সাংসদরা।
বিজেপি নেতৃত্ব জানেন, লোকায়ুক্ত নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজ্যপাল আইন ভাঙেননি। তবে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করার ‘সাংবিধানিক দায়িত্ব’ও পালন করেননি বলে মনে করে বিজেপি। এরই মধ্যে বিজেপি-র এক শীর্ষস্থানীয় নেতা দাবি করেন, “প্রধানমন্ত্রী, প্রণব মুখোপাধ্যায় এমনকী, চিদম্বরমের মতো নেতারা ঘরোয়া স্তরে তাঁদের আশ্বাস দিচ্ছেন, লোকায়ুক্ত পরিবর্তন করা হবে। কারণ, এই নিয়োগের প্রক্রিয়া ঠিক হয়নি। লোকায়ুক্ত আইন মানলেও রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করে নেওয়াও জরুরি ছিল।” গুজরাতের কংগ্রেস নেতা অর্জুন মোড়ওয়ারিয়া দাবি উড়িয়ে বলেন, “বিজেপি মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে। কংগ্রেসের কোনও নেতাই তাঁদের বলেননি যে কেন্দ্র লোকায়ুক্ত বদলের কথা ভাবছে। বরং কেন্দ্র আদালতের রায়ের অপেক্ষায় রয়েছে। কংগ্রেস আদালতের রায়ের উপরে ভিত্তি করে কৌশল স্থির করার কথা ভাবলেও লোকায়ুক্ত প্রশ্নে লড়াই জেতার জন্য বিজেপি কিন্তু রাজনৈতিক পথই বেছেছে। বিজেপি নেতারা মনে করছেন, তাঁরা যে-হেতু সরকারকে বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতা করছেন, তাই মসৃণ ভাবে সংসদ চালানোর স্বার্থে সরকারও গুজরাত প্রসঙ্গে তাঁদের মতকে গুরুত্ব দেবে। নয়তো আর্থিক সংস্কারে বা কোনও সঙ্কটে সরকারের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হবে না তাঁদের পক্ষে। |
|
|
|
|
|