এত দিন নিজের মূর্তি গড়ে বা টাকার মালা গলায় ঝুলিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতী। এ বার বিতর্কে তাঁর চটি!
ফিলিপিন্সের একনায়ক ফার্দিনান্দ মার্কোসের বিধবা স্ত্রী ইমেলডা মার্কোসের চটি-প্রীতির কথা সকলেরই জানা। ধুলো-ময়লা থেকে পা বাঁচাতে তাঁর নাকি চটি রয়েছে হাজার জোড়া! কিন্তু মায়াবতীও যে তাঁর চেয়ে কম যান না, তা কে জানত? ‘দলিত কি মসিহা’-র এই চটি প্রেমের কথাই ফাঁস করে দিয়েছে উইকিলিকস। সেই নিয়ে রীতিমতো বাগযুদ্ধ শুরু হয়েছে মায়াবতী ও উইকি-কর্তা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের মধ্যে।
২০০৮-এর অক্টোবরের একটি মার্কিন কেব্ল বার্তা ফাঁস করে উইকিলিকিস জানিয়েছে, পছন্দের চটি আনার জন্য নিজের খালি বিমানকে মুম্বইয়ে পাঠাতেন মায়াবতী! নিরাপত্তা নিয়ে মায়াবতীর খুঁতখুঁতানি ‘পাগলামির’ পর্যায়ে পৌঁছেছে বলেও উইকিলিকস বার্তায় মন্তব্য করা হয়েছে। বার্তায় লখনউয়ের সাংবাদিকদের উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, “মায়াবতীর ন’জন রাঁধুনি। তাঁদের মধ্যে দু’জন রান্না করেন এবং বাকিরা তাঁদের উপর নজর রাখেন। রান্না করা খাবার চেখে দেখার জন্যও দু’জনকে রেখেছেন বহেনজি। নিজের নিরাপত্তা সুরক্ষিত করতে তিনি বাড়ি থেকে কার্যালয় পর্যন্ত একটি আলাদা রাস্তাও বানিয়েছেন।’’ |
স্বাভাবিক ভাবেই উইকি-কর্তা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের উপর বেজায় চটেছেন মায়াবতী। সমস্ত খবরকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “অ্যাসাঞ্জের দেশের সরকারকে অনুরোধ জানাচ্ছি, অ্যাসাঞ্জকে পাগলা গারদে পাঠানো হোক। যদি সেখানে একান্তই জায়গা না থাকে, তা হলে আমরা আগরা মানসিক হাসপাতালে রাখতে পারি।” পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় আ্যসাঞ্জও বলেন, “মায়াবতী আমাকে নেওয়ার জন্য লন্ডনে বিমান পাঠান। পাগলাগারদে নয়, ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় পেলে আমি খুশিই হব। তার বদলে মায়াবতীর জন্য আমি দামি ব্রিটিশ জুতোও নিয়ে যাব!”
জুতো-কাণ্ডে বিজেপি নেতা মুক্তার আব্বাস নকভিকেও নাম না করে এক হাত নিয়েছেন মায়া। তিনি বলেন, “এক বিজেপি নেতা বিমানে করে এই জুতো আনার কথা বলেছেন। মুম্বই থেকে জুতো আনার জন্য কখন বিমান পাঠানো হয়েছিল, তা আমি জানি না। সব দেখে তো মনে হচ্ছে, ওই বিজেপি নেতা আর উইকিলিকিস প্রধান ওই বিমানে একসঙ্গে গিয়েছিলেন!”
উইকির খবর নিয়ে সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মায়াবতী। তাঁর অভিযোগ, সরকারের কোনও প্রতিনিধির সঙ্গে কথা না বলে ‘একতরফা’ ভাবে খবর ছাপা হয়েছে। অ্যাসাঞ্জের দাবি, “মায়াবতীর বিরুদ্ধে এই সব অভিযোগ এনেছেন মার্কিন কূটনীতিকরা। মায়াবতী চাইলে মার্কিন বিদেশসচিব হিলারি ক্লিন্টনের সঙ্গে কথা বলতে পারেন। কিন্তু আমার পরামর্শ মায়াবতী নিজের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চান।” উইকি-বার্তায় এও বলা হয়েছে যে, খোদ
মায়াবতীর ক্যাবিনেট সচিব শশাঙ্কশেখর সিংহ এবং বহুজন সমাজ পার্টির জাতীয় সাধারণ সম্পাদক সতীশচন্দ্র মিশ্রই উইকিলিকসে এই সব কথা ফাঁস করে দিয়েছেন। শশাঙ্ক এবং সতীশ দু’জনেই অবশ্য সেটা অস্বীকার করেছেন। তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন মায়াবতী। এই রিপোর্টের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন সতীশ। |