|
|
|
|
ঠাকুরপুকুর |
ব্যবসায়ী দম্পতিকে বেঁধে রেখে ডাকাতি |
নিজস্ব সংবাদদাতা |
শুধু পুলিশের উর্দির রং বদলালেই যে পরিস্থিতির উন্নতি হয় না, তার প্রমাণ পেলেন ঠাকুরপুকুর থানার ঘোষপাড়া এলাকার মানুষ। রাজ্য পুলিশের হাত থেকে কলকাতা পুলিশের হাতে আসার এক সপ্তাহের মধ্যেই মঙ্গলবার স্থানীয় এক স্বর্ণব্যবসায়ীর বাড়িতে ঢুকে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে লুঠপাট চালিয়ে পালায় পাঁচ দুষ্কৃতী। এক জনের সঙ্গে ছিল রিভলভারও। জোকা এলাকার ঘোষপাড়ায় এ দিন ভোর চারটে নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ অবশ্য দুষ্কৃতীদের কাউকে আটক করতে পারেনি।
প্রাথমিক তদন্তের পরে জানা গিয়েছে, নগদ দেড় লক্ষ টাকা ও বেশ কিছু গয়না লুঠ করে চম্পট দিয়েছে দুষ্কৃতীরা। ঘটনার তদন্তে নেমেছে কলকাতা পুলিশের ডাকাতি-দমন শাখা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দোতলা ওই বাংলোয় বছর পনেরো ধরে থাকেন স্বর্ণব্যবসায়ী মোহন সাবনানি। সঙ্গে থাকেন স্ত্রী মীরাদেবী ও মেয়ে সন্ধ্যা। নিউ মার্কেট এলাকায় মোহনবাবুর একটি দোকান রয়েছে। বাড়ির চারধারে প্রায় ১২ ফুট পাঁচিল। তার উপরে কাঁটাতারের জাল। |
|
ডাকাতির পরে তদন্তে পুলিশ। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র। |
মোহনবাবু পুলিশকে জানিয়েছেন, রাতে একতলার একটি ঘরে শুয়েছিলেন সন্ধ্যা। দোতলায় তিনি ও মীরাদেবী। পরিচারিকা ছিলেন বাংলো লাগোয়া ছোট একটি ঘরে। কুকুরটি রাতে ছাড়াই থাকে। এ দিন ভোরে আচমকাই বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে যায় মোহনবাবুর। দেখেন, ঘরের ভিতরে পাঁচ জন অজ্ঞাতপরিচয় লোক ঢুকে পড়েছে। এক জনের হাতে রিভলভার। মোহনবাবুর কথায়, “কিছু বোঝার আগেই আমার ও স্ত্রী-র দিকে তেড়ে আসে রিভলভার হাতে লোকটা। আমাদের হাত বেঁধে দেয় দু’জন।” তাঁর মাথায় লোহার রড দিয়ে আঘাত করা হয়েছে বলেও পুলিশকে জানিয়েছেন ওই ব্যবসায়ী।
এ দিকে, ততক্ষণে ভয়ে অন্য দু’জনের হাতে আলমারির চাবি তুলে দিয়েছেন মীরাদেবী। আলমারি খুলে তাণ্ডব চালিয়ে কিছুক্ষণ পরে পালিয়েযায় ওই দুষ্কৃতীরা।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, প্রথমে একতলার কাচের দরজাটি ভেঙেছিল দুষ্কৃতীরা। হাত গলিয়ে দরজার ‘লক’ খুলে দোতলায় উঠেছিল। দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যাওয়ার পরে মোহনবাবু প্রথমে ‘১০০ ডায়ালে’ ও তার পরে স্থানীয় থানায় ফোন করেছিলেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় পুলিশ।
এ দিন ঘটনাস্থলে যান যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ দমন) দময়ন্তী সেন-সহ গোয়েন্দা অফিসারেরা। পুলিশ জানায়, দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যাওয়ার পরে হাতের বাঁধন খুলেছিলেন ওই দম্পতি। তদন্তকারীদের অনুমান, পালানোর সময়ে দুষ্কৃতীরা বাড়ির পিছনের পাঁচিল টপকেছিল। কারণ, ওই পাঁচিলের কাঁটাতারের উপরে একটি তোয়ালে মিলেছে।
গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, গ্রে-হাউন্ড কুকুরটি ঝিমিয়েছিল। ঘটনার সময়ে সে কেন চিৎকার করেনি, তা ভাবাচ্ছে তাঁদের। ওই বাংলোয় মাস দেড়েক যাবৎ একটি টিভি সিরিয়ালের শু্যটিং চলছে। সকাল ন’টা থেকে রাত ন’টা পর্যন্ত শু্যটিং চলে। মোহনবাবুর বাড়িতে আরও এক পরিচারিকা ও মালি কাজ করেন। তাঁরা অবশ্য দিনের বেলায় আসেন। যুগ্ম কমিশনার বলেন, “কত টাকার গয়না লুঠ হয়েছে, তা স্পষ্ট করে বলতে পারেননি ওই দম্পতি। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” |
|
|
|
|
|