গঙ্গাতীরে নয়া নির্মাণে বাধা
প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে প্রাপ্তি শুধু বিবেচনার আশ্বাস
লকাতাকে লন্ডন করে তোলা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিশ্রুতি। আর সেই উদ্যোগের প্রথম ধাপেই বাধার দেওয়াল তুলেছে সেনাবাহিনী। ফোর্ট উইলিয়ামের ফৌজি কর্তারা জানিয়ে দিয়েছেন তাঁদের এক্তিয়ারে থাকা ময়দানে নতুন কোনও নির্মাণের অনুমতি দেওয়া যাবে না। মুখ্যমন্ত্রীর ‘স্বপ্নের প্রকল্প’ বাস্তবায়িত করতে তাই মঙ্গলবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনির কাছে দরবার করলেন তৃণমূলের পাঁচ শীর্ষনেতা। বৈঠক শেষে তৃণমূলের নেতারা জানান, প্রতিরক্ষামন্ত্রী তাঁদের জানিয়েছেন এ বিষয়ে কলকাতাস্থিত ইস্টার্ন কম্যান্ডের রিপোর্ট চাইবেন তিনি। তার পরেই একসঙ্গে বসে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।
তক্তাঘাট থেকে কাশীপুরের পরামাণিক ঘাট পর্যন্ত গঙ্গার পাড় ধরে ১০ কিলোমিটার এলাকা সৌন্দর্যায়নের পরিকল্পনা নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রাথমিক পর্যায়ে বাবুঘাট থেকে উত্তরে এক কিলোমিটার পর্যন্ত গঙ্গাতীরের সৌন্দর্যায়ন হবে। এ কাজে রাজ্য ও পুরসভা ইতিমধ্যেই প্রায় ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। গত ২ অগস্ট প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক সূচনাও করেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে প্রিন্সেপ ঘাট থেকে মিলেনিয়াম পার্ক পর্যন্ত অংশটি নিয়ে। সেটি সেনার আওতায় থাকা ময়দানের ‘ব্লু জোন’ অংশ। যে অংশে নতুন নির্মাণ হতে দিতে নারাজ সেনা তথা প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। পরিকল্পনা অনুযায়ী, গঙ্গাপাড় বরাবর ১৫ থেকে ২০ ফুট চওড়া পায়ে হাঁটার পথ তৈরি হওয়ার কথা। সবুজায়নের সঙ্গে বিশ্রাম ও বিনোদনের ব্যবস্থাও হওয়ার কথা। নতুন নির্মাণ ছাড়া এ সব সম্ভব নয়।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনির সঙ্গে বৈঠকে (ডান দিক থেকে) শোভন চট্টোপাধ্যায়,
দীনেশ ত্রিবেদী, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, মুকুল রায় ও সৌগত রায়। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সৌগত রায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল নেতারা এ দিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে বিষয়টি বুঝিয়ে বলেন। তৃণমূলের আরও তিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী, মুকুল রায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ওই বৈঠকে যোগ দিতে দিল্লি গিয়েছিলেন কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ও। মন্ত্রীকে তাঁরা বলেন, কলকাতার মানুষ এই প্রকল্পে দারুণ উৎসাহী। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের পাঠিয়েছেন। তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় আসার আগেই পুরসভা, বন্দর, রেল ও রাইট্স-এর মধ্যে সমঝোতা হয়েছিল। তবে রাজ্য বা পুরসভা বিতর্ক চায় না। সৌগতবাবু বলেন, “অ্যান্টনি আশ্বাস দিয়েছেন, তিনি ইস্টার্ন কম্যান্ডের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল বিক্রম সিংহের থেকে বিস্তারিত রিপোর্ট চাইবেন। সেই রিপোর্ট নিয়ে দিল্লিতে আলোচনা হবে। সেখানে রাজ্য ও পুর-প্রতিনিধিরাও থাকবেন।” বৈঠকে রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী অ্যান্টনিকে জানান, জোকা থেকে বিবাদী বাগ পর্যন্ত মেট্রো প্রকল্পেও সমস্যা দেখা দিচ্ছে। ওই লাইনের একটি অংশ ময়দান দিয়ে যাবে। সেখানেও সেনা কাজ করতে দিচ্ছে না। মাটি পরীক্ষার অনুমতিও দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ জানান রেলমন্ত্রী। অ্যান্টনি আশ্বাস দেন তিনি বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করবেন।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, ময়দানের বেশির ভাগটা জুড়ে রয়েছে ফোর্ট উইলিয়াম। সামরিক পরিভাষায় এটি ‘গ্রিন জোন’, যেখানে সাধারণের প্রবেশাধিকার নেই। এ ছাড়া, হাইকোটর্র্ ও বিধানসভার এলাকা ‘ইয়েলো জোন’ ও ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের এলাকা ‘রেড জোন’ বলে চিহ্নিত। এর বাইরে ময়দানের খোলা সবুজ অংশটিই ‘ব্লু জোন’। এখানে স্থায়ী নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হয় না। তবে সৌন্দর্যায়নের বিষয়ে আপত্তি থাকার কথা নয়। কিন্তু শিলিগুড়ির সুকনায় সেনার জমি অন্য সংস্থাকে ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া নিয়ে সেনার কয়েক জন উচ্চপদস্থ অফিসারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় এ বিষয়ে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে। এ দিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীও সে কথা তৃণমূলের প্রতিনিধিদের জানিয়েছেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.