সফর শুরু করার পরে দু’দেশের কূটনৈতিক আদানপ্রদান যত এগোচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের কাছে একটি বিষয় তত স্পষ্ট হচ্ছে। তা হল, তাঁর এই সফরে তিস্তা চুক্তি না হওয়ার জন্য শুধু পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একতরফা দায়ী করাটা অনুচিত। এই চুক্তি নিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ার কারণ হিসেবে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশঙ্কর মেননের দৌত্যের ব্যর্থতাকেই দায়ী করছে কূটনৈতিক মহল। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের তরফেও তেমনই ইঙ্গিত দেওয়া হচ্ছে।
শিবশঙ্কর মেননের দিকে এ ভাবে আঙুল উঠছে কেন? বিশদে তার ব্যাখ্যাও দিচ্ছে সংশ্লিষ্ট মহল। জুলাই মাসে মার্কিন বিদেশসচিব হিলারি ক্লিন্টন যখন দিল্লি আসেন, তখন তাঁর প্রাথমিক সফরসূচিতে কলকাতা ছিল। মেনন কার্যত হস্তক্ষেপ করে হিলারিকে কলকাতার বদলে চেন্নাইয়ে নিয়ে যান। এতে অসন্তুষ্ট হন মমতা। পরে মমতার সঙ্গে মেননের রসায়ন যে ঠিক মতো কাজ করেনি, তার প্রেক্ষাপট হিসেবে এই ঘটনার উল্লেখ করা হচ্ছে। |
বিদেশসচিব অথবা তার আগে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত পদে থাকাকালীন এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে, যাতে দূত হিসেবে মেননের ব্যর্থতা স্পষ্ট হয়েছে বলেই মত অনেকের। ভারত-মার্কিন পরমাণু চুক্তির প্রক্রিয়া নিয়ে তখন তুমুল জলঘোলা চলছে। বাম-বিজেপি চুক্তির বিরোধিতায় সরব হয়েছিল। তখন শিবশঙ্কর মেননকে পাঠানো হয় আডবাণীর কাছে। রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, আডবাণীর সঙ্গে মেননের বৈঠকের পরে পরিস্থিতির উন্নতি তো হয়ইনি, বরং তা ঘোরালো হয়ে ওঠে। মেননের উন্নাসিক আচরণ নিয়ে প্রশ্নও ওঠে। পরবর্তী কালে মিশরের শর্ম অল শেখ-এ পাকিস্তানের সঙ্গে যৌথ বিবৃতিতে বালুচিস্তানের উল্লেখ নিয়েও তুমুল সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল প্রধানমন্ত্রীকে। এবং ঘটনা এই যে, ওই বিবৃতিটির খসড়া তৈরি করেছিলেন মেনন-ই।
পনেরো বছর আগে যখন ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে গঙ্গা-চুক্তি সই হয়, তখন সাউথ ব্লকে বাংলাদেশ বিষয়ক যুগ্মসচিব ছিলেন আজকের বিদেশসচিব রঞ্জন মাথাই। সেই সময় এক দিকে যেমন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার দেব মুখোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে গিয়েছিলেন, তেমনই মাথাইও বহু বার বৈঠক করেছেন জ্যোতিবাবুর সঙ্গে। মাথাইয়ের কথায়, “সে সময় জ্যোতি বসুর সঙ্গে যে কত বার দেখা করেছি, তার ইয়ত্তা নেই। আমরা দু’জনে নৌকা করে গঙ্গাতেও ঘুরেছি। নদীর নাব্যতা পরিদর্শন করা হয়েছে।” আজকের মতো তখনও প্রশ্ন উঠেছিল, চুক্তির ফলে রাজ্যের স্বার্থ বিঘ্নিত হবে কি না। তখন বিক্রম সরকার ছিলেন পোর্ট ট্রাস্ট-এর চেয়ারম্যান। গঙ্গার জলের অসম বণ্টন হচ্ছে, এই অভিযোগে তিনিও চুক্তির বিরোধিতা করেন। কিন্তু, কেন্দ্র সফল ভাবে এই চুক্তিটির প্রয়োজনীয়তার কথা রাজ্যকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছিল। বিদেশ মন্ত্রকের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, “সে সময় আমরা অনেকটা তেল পুড়িয়েছিলাম। এ বারে রাজ্যকে বোঝাতে অপেক্ষাকৃত ভাবে তেমন প্রয়াস হয়নি।” ঢাকা সফরের আগে তিস্তা জটিলতা নিয়ে রেলমন্ত্রী দিনেশ ত্রিবেদীর সঙ্গে আলোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি স্থির করেছেন, ঢাকা সফর সেরে দেশে ফিরে এই বিষয়ে এক জন দূত নিয়োগ করবেন। যাঁর কাজ হবে, তিস্তা চুক্তি নিয়ে মমতার সঙ্গে আলোচনা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। কে এই দায়িত্ব পাবেন, তা এখনও স্থির হয়নি।
|
কেঁপে উঠল সুমাত্রার মাটি। তখনও ঘুম থেকে ওঠেনি স্থানীয় মানুষ। আচমকা ঘরবাড়ি কেঁপে উঠতেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খালি করে দেওয়া হয় হোটেল, হাসপাতাল। বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় অন্যত্র। রিখ্টার স্কেলে ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল ৬.৬। মার্কিন ভূতত্ত্ববিদেরা জানিয়েছেন, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল মেডান থেকে ৬০ মাইলে দূরে, মাটির ৬২ মাইল গভীরে। |