ছোটবেলায় পথ দুর্ঘটনায় ডান পা হারিয়েছেন। কিন্তু তাতেও হার মানেননি মালদহের নালাগোলা গ্রামের বাসিন্দা দুলাল সরকার। প্রতি বছরই রেবিয়ে পড়েন সামাজিক সচেতনতার প্রচারে। ঘুরে বেড়ান সারা দেশে।
এ বার স্কুলছুটদের স্কুলে ভর্তির জন্য প্রচারে নেমেছেন। সাইকেলের বোর্ডে লেখা রয়েছে, “গো টু স্কুল চাইল্ড অ্যান্ড বি এডুকেটেড।” সিকিমের গ্যান্টক থেকে ঘুরে যাবেন কলকাতায়। তার আগে ঘুরেছেন দার্জিলিং, উত্তর দিনাজপুর, মুর্শিদাবাদ ও নদিয়ায়। মঙ্গলবার তিনি বর্ধমানে এসে দেখা করলেন অতিরিক্ত জেলাশাসকের সঙ্গে। দুলালবাবুর যাত্রাপথের পরের ঠিকানা বীরভূম, পুরুলিয়া। |
স্কুলছুটদের ফেরাতে প্রচারে দুলাল। নিজস্ব চিত্র। |
গত বছর তাঁর এই সচেতনতা অভিযানের স্লোগান ছিল,‘গাছ বাঁচাও। পরিবেশের ভারসাম্যে রক্ষা কর।’ এর জন্য তিনি বিভিন্ন জেলার বনবিভাগ থেকে সংগ্রহ করতেন গাছের চারা। সেগুলি বিলি করতেন স্কুলে, ক্লাবে।
পেশায় গৃহশিক্ষক দুলালবাবুকে আশ্রয় নিতে হচ্ছে স্কুলে, ক্লাবে, বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে। খিদে পেলে পথচলতি মানুষের কাছে টাকা চেয়ে নিজের পেট ভরিয়েছেন। এই ভাবেই ঘুরছেন নানা জেলায়। নানা জায়গায় ছাত্রছাত্রীদের কাছে জানতে চেয়েছেন, লেখাপড়ায় তাদের কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না। সমস্যার কথা জানতে পারলেই তৃতীয় শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের ক্লাসও নিচ্ছেন মাধ্যমিক উত্তীর্ণ দুলালবাবু।
দুলালবাবুর কথায়, “আমার মনে হয়েছে, দেশের অনেক শিশুই এখনও স্কুলে যায় না। অভাবের কারণে তারা ক্রমেই স্কুলছুট হয়ে পড়ছে।” আর স্কুলে গিয়ে বলছেন, “তোমরা মন দিয়ে পড়াশোনা কর। স্কুল যেন কোনও মতেই ছেড়ো না। সমস্যা হলে কথা বল এলাকার বিশিষ্টদের সঙ্গে। তাহলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।”
বলছেন ‘চরৈবেতি’-- এগিয়ে চলো, এগিয়ে চলো। |