কোলিয়ারির উৎপাদন চালু করার দাবিতে ইসিএলের সোদপুর এরিয়ার চিনাকুড়ি ৯-১০ নম্বর খনি কার্যালয়ের সামনে মঙ্গলবার থেকে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেছে ছ’টি শ্রমিক সংগঠনের উদ্যোগে গঠিত জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি। উৎপাদন শুরুর ব্যাপারে খনি কর্তৃপক্ষের তরফে আশ্বাস না পেলে এই বিক্ষোভ চলবে বলে দাবি শ্রমিক নেতাদের।
ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই কোলিয়ারি নিরাপদ নয়। তাই প্রায় দু’বছর ধরে এখানে কয়লা তোলা বন্ধ রয়েছে। ভূগর্ভস্থ এই খনিটির তলায় অনেকটা এলাকা ফাঁকা রয়েছে। এই অবস্থায় কয়লা কাটার জন্য শ্রমিক নামানো যাবে না। যে কোনও সময়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ইসিএলের সোদপুর এরিয়ার জেনারেল ম্যানেজার এন কে তিওয়ারি বলেন, “আমরা খনির তলার ফাঁকা অংশ বালি দিয়ে ভরাট শুরু করেছি। মাঝে মাঝে যান্ত্রিক ত্রুটির জন্য ভরাটের কাজ বিঘ্নিত হচ্ছে। আগে সম্পূর্ণ ভরাট হোক, তার পরে উৎপাদন শুরু করা নিয়ে ভাবা হবে।” জিএম জানান, এ বিষয়ে শ্রমিক নেতাদের একাধিক বার বলা হয়েছে। সব জেনেও তাঁরা এমন বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন।
ইসিএল কর্তৃপক্ষের যুক্তি অবশ্য মানতে নারাজ শ্রমিক নেতারা। তাঁদের পাল্টা অভিযোগ, ইসিএল এই কোলিয়ারি বন্ধ করে দিতে চাইছে। তাই এমন অজুহাত দিচ্ছে। জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটির নেতা তথা আইএনটিইউসি-র সাধারণ সম্পাদক প্রজয় মোসির অভিযোগ বলেন, “কর্তৃপক্ষ ইচ্ছে করে বালি ভরাটের কাজে দেরি করছে। সেই ফাঁকে উৎপাদন বন্ধ থাকার অজুহাত দিয়ে এখানকার শ্রমিক-কর্মীদের অন্যত্র বদলি করছে। সবাইকে বদলি করে দিয়ে খনিটি বন্ধের চেষ্টায় রয়েছেন কর্তৃপক্ষ।” সিটু নেতা সুদর্শন প্রসাদের কথায়, “খনিগর্ভে এখনও প্রচুর কয়লা রয়েছে। বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে এই কয়লা তোলার জন্যই খনিটি বন্ধের চক্রান্ত শুরু হয়েছে।” এআইটিইউসি নেতা রামাশিস চৌধুরী বলেন, “বালি ভরাটের কাজে কেন দেরি হচ্ছে, কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা তার তদন্ত দাবি করেছি।”
ইসিএল সূত্রে জানা যায়, প্রায় দু’বছর ধরে উৎপাদন বন্ধ থাকায় এই খনিটিতে এপ্রিল থেকে বালি ভরাটের কাজ শুরু হয়। কয়েক দিন চলার পরে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে কাজ বন্ধ হয়েছিল। মে থেকে ফের কাজ শুরু হয়েছে। সোদপুর এরিয়ার জিএম জানান, বালি ভরাটের প্রক্রিয়া দীর্ঘমেয়াদি। খনিটি পুরোপুরি বিপদমুক্ত না করে চালু করাও সম্ভব নয়। খনিগর্ভে কয়লা মজুত থাকার প্রসঙ্গে জিএম জানান, এই খনিটিতে এখন মেরেকেটে কুড়ি হাজার টন কয়লা আছে। দৈনিক গড়ে ১০০ টন করে কয়লা তোলা হল খনির আয়ু বড় জোর ২০০ দিন। অর্থাৎ, উৎপাদন শুরু হলেও বেশি দিন তা চালু থাকবে না। |