|
|
|
|
|
|
|
হাঁস শেখাবে সাঁতার, মাছরাঙা মাছ ধরা |
প্রতিযোগিতা ছিল, এমন একটা স্কুল বানাতে হবে, যেখানে সব্বাই যাবে।
সে স্কুল কেমন হবে এবং সেখানে কী-ই বা শেখানো হবে সবই জানাচ্ছে জিনিয়াসরা।
|
আমাদের ইসকুলে থাকবে না জানলা-দরজা-দেওয়াল ঘেরা ব্ল্যাকবোর্ড। থাকবে খোলা হাওয়া, নীল আকাশ, সবুজে ঘেরা হাজার ফুলের রঙের মাঝে মানানসই প্রজাপতি আর পাখির ওড়াউড়ি। থাকবে অঢেল ফূর্তি ও আনন্দ। ধরাধরি খেলব প্রজাপতি ও মৌটুসিদের সঙ্গে। মাঝখানের পুকুরের আসমানি জলে অনিকেত সাঁতার কাটবে হাঁসের পাশে পাশে। ছোট্ট সিনেমা হলটিতে হেডস্যরের পাশে বসে শৌভিক এক দিন দেখবে ‘সোনার কেল্লা’ অথবা ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’ বা ‘হ্যারি পটার’। মাঝে মাঝে স্যরেদের সঙ্গে খেলা হবে ক্রিকেট বা ফুটবল। রীতেশ স্যরেদের কাছ থেকে শুনবে বিদেশি কিশোর গল্প গ্যালিভার্স ট্রাভেল, মার্চেন্ট অব ভেনিস।
নভো মণ্ডল।
অষ্টম শ্রেণি, বারুইপুর উচ্চ বিদ্যালয়
|
আমি ও আমার দুই বন্ধু, তিন জনে মিলে গড়ে তুলব আমাদের স্বপ্নের স্কুল ‘ডন ব্র্যাডম্যান মেমোরিয়াল হাই স্কুল’। স্কুলের পড়াশোনা মূলত ক্রিকেট-নির্ভর। বিষয়গুলি সম্পর্কে শিক্ষাদানের জন্য থাকবেন গ্যারি কার্স্টেন, জন রাইট, সুনীল গাওস্কর, কপিল দেব, আচরেকার, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, গ্লেন ম্যাকগ্রা, স্টিভ ওয়, ভিভ রিচার্ডস-এর মতন ক্রিকেট ব্যক্তিত্বরা। স্কুলের ইউনিফর্ম পরে আসার সঙ্গে সঙ্গে ক্রিকেট কিটস, ইন্টারনেটযুক্ত ল্যাপটপ আনা বাধ্যতামূলক। জায়ান্ট স্ক্রিনে ইন্ডিয়া ও সাউথ আফ্রিকার সব ক’টি ম্যাচ দেখানো হবে। সব ভারতীয় ক্রিকেটারদের জন্মদিন মর্যাদা সহকারে পালন করা হবে।
সুকন্যা চট্টোপাধ্যায়।
দশম শ্রেণি,
হোলি ফ্যামিলি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, কৃষ্ণনগর
|
আমি সমস্ত পাখিদেরকে নিয়ে একটি স্কুল খুলতে চাই। সেখানে কাকের মতো ঝাড়ুদার পাখি থেকে শুরু করে ময়ূরের মতো রানি পাখিরা একসঙ্গে শিক্ষা নেবে। তাতে ময়ূরের যেমন অহংকার থাকবে না, তেমনই কাকেরও নিজেকে কাক বলে দুঃখ হবে না। সবাই সেখানে মিলেমিশে থাকবে। আর সব পাখিরাই সেখানে কখনও শিক্ষক বা শিক্ষিকা, আবার কখনও ছাত্র বা ছাত্রী হবে। যেমন, টিয়া, ময়না, কাকাতুয়া সবাইকে গান শেখাবে, কথা বলা শেখাবে। আবার বক, মাছরাঙা অন্যদের মাছ ধরতে শেখাবে। হাঁস শেখাবে সাঁতার, হয়তো কোকিল কাককে মিষ্টি ডাক শেখাবে, আবার কাকও হয়তো সকলকে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে শেখাবে। তবে আমি থাকব স্কুলের শান্তি রক্ষার দায়িত্বে। কারণ, আমি হব পায়রা। সকল পাখিরা যাতে কিচিরমিচির করে গণ্ডগোল না করে, সেদিকে আমি নজর রাখব। আর তাই সেখানে আমি রোজ যাব। আর শীতের ছুটির আগে বিদেশি পাখিদের আমন্ত্রণ জানাব। সবাইকে নিয়ে একটি ফাংশন করব ও আমি পায়রা হয়ে দেশি-বিদেশি পাখিদের মৈত্রী গড়ে দেব। পাখিদের মধ্যে ‘বর্ণ বৈষম্য’ থাকবে না।
ঐশ্বী ঘোষ।
ষষ্ঠ শ্রেণি, ডি এ ভি পাবলিক স্কুল, ব্যারাকপুর
|
আমাদের গ্রামে একটা বড় ঝিল আছে। সেই ঝিলের পাশে যে বড় মাঠটা আছে, সেখানে তালসুপুরি গাছের সারির নীচে আমি স্কুল খুলব। আর সেই স্কুলে আমরাই টিচার। একদল বন্ধু এক দিন আমাদের পড়াবে, আর আমরা এক দিন ওদের পড়াব। পড়া না পারলে কেউ কাউকে বকবও না। কারণ, বড় হতে হতে সবাই সব কিছু শিখেই যায়। আমি স্কুলে পুরো বর্ষাকালটা ছুটি দেব। যে যা ইচ্ছে পরে আসবে, ইউনিফর্ম পরার ঝামেলা থাকবে না। আমাদের স্কুলে সাঁতার কাটা, গাছে চড়া, নৌকা চালানো, ঘর তৈরি করা আর অবশ্যই সব বাচ্চাকে রোজ একটা করে গাছ লাগানো শেখানো হবে। কারণ, প্রাকৃতিক দুর্যোগে এই সমস্ত কাজ খুব দরকার। পৃথিবীর ভবিষ্যতের ভারসাম্য রক্ষার জন্য এ এক নতুন ধরনের স্কুল। কারণ, পৃথিবীই যদি না বাঁচে, তা হলে আমরা ভূগোল, অঙ্ক, ইতিহাস শিখে কী করব? আমরা ভুল করলে টিচাররা আমাদের মেরে ভুল ঠিক করতে চান, কিন্তু ওটাও তো ভুল। তাই আমরা কাউকে মারব না। খুব খেলব, গান গাইব, ছড়া বলব। আসবে নাকি আমাদের স্কুলে?
সাহিফা মল্লিক।
তৃতীয় শ্রেণি, গুরু নানক পাবলিক স্কুল,
আলমপুর, হাওড়া
|
|
ছবি: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য |
আমার ইসকুলে সবাই যার যা ভাল লাগে সেই বিষয়ে পড়তে পারবে। জোর করে যে সব কিছু ছোটদের মাথায় ঢোকাতে কষ্ট হয়, সে সব পড়া হবে না। পড়াগুলো সুন্দর ছন্দে ছড়ার মতো বা সুর করে গানের মতো করে পড়ানো হবে। সবাই শুনেই মনে রাখতে পারবে। পড়াগুলো টিভির বড় পর্দায় ছবির আকারে বা নাটকের মতো অভিনয় করে বার বার বোঝানো হবে। সবাই ছোটখাটো খেলার জিনিস নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যে দিয়ে পড়া বুঝে নেবে। এত বইখাতা থাকবে না। কোনও পাশ, ফেল থাকবে না।
সোহম রক্ষিত।
চতুর্থ শ্রেণি, দুর্গাপুর পাবলিক স্কুল
|
যারা মানুষ না তাদের নিয়েই গড়ে তুলতে চাই ‘না-মানুষ শিক্ষানিকেতন’। সেই স্কুলে আসবে গরু, গাধা, ছাগল, নানা রকম পাখি, ব্যাঙ সবাই। গরুকে বলব, গরুর মতো হও। ছাগলকে বলব, ভাল ছাগল হওয়ার কথা। গাধাকে বলব খুব সুন্দর গাধা হতে হবে, যাতে আর কেউ গাধা বলে অবহেলা না করে। এদের সবাইকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য আমার কোনও বইপত্র লাগবে না। এদের শিক্ষা দেব গল্প বলে, ছড়া শুনিয়ে নাচ-গানের মাধ্যমে। যেমন কোকিলকে ডেকে বলব, একটা গান করো তো। কোকিল গান করবে, আর সবাই কোকিলের সুরে তাল দেব। ব্যাঙকে ডেকে বলব, তুমি গ্যাঙর গ্যাঙ করে একটু বৃষ্টি ডাকো। ব্যাঙের ডাকে বৃষ্টি নামলে আমরা সবাই মহা আনন্দে স্নান সেরে নেব। সেখানে বাধা দেওয়ার কেউ থাকবে না। কী মজাটাই না হবে তখন।
মনীষা রায়।
পঞ্চম শ্রেণি, উচ্চ বালিকা বিদ্যামন্দির (বড়িশা)
|
আমার স্বপ্নের স্কুলটা হবে ঠিক জঙ্গল আর সমুদ্রের মাঝখানে। স্কুলের পাশেই একটা ঘরে থাকবে লাল আর নীল দুটো বোতাম। নীল বোতাম টিপলে স্কুলবাড়িটা জাহাজের মতো হয়ে যাবে আর আমাদের নিয়ে সমুদ্রে ভাসতে লাগবে। আবার লাল বোতামটা টিপলে স্কুলবাড়িটা আমাদের সাঁ করে অরণ্যদেবের গাছবাড়ির মতো আকাশে উঠে যাবে। আমাদের স্কুলে প্রতিদিন খেলা, আঁকা, গল্পের বই পড়া আর দুষ্টুমি করার পিরিয়ড থাকবে। যেহেতু স্কুলের কোনও মিস-ই রাগী হবেন না, তাই দুষ্টুমি করলেও কেউ শাস্তি পাব না বা গার্জেন কল হবে না। প্রতিটি ক্লাস রুমে একটা করে ফ্রিজ আর শো-কেস থাকবে, যেখানে প্রচুর আইসক্রিম, চকলেট, পিৎজা, কাটলেট সাজানো থাকবে। আমরা যখন খুশি, যা খুশি, যত খুশি খাব। কেউ বারণ করবে না। পড়াশোনা অবশ্যই হবে, তবে ‘অঙ্ক’ বলে কোনও বিষয় থাকবে না। স্কুলে কোনও পরীক্ষা হবে না, আর যদিও বা হয়, তা হলে রেজাল্ট বেরোবে না।
মহিমানব মুখোপাধ্যায়।
চতুর্থ শ্রেণি, সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল, বর্ধমান
|
জিনিয়াস জিন্দাবাদ |
ক’দিন পরেই তো পুজো, সামনে মেগা-হুল্লোড়। নিশ্চয়ই ভেবে ফেলেছ, কোন দিন কী করবে? তার আগে, আমরা তোমাদের একখানা কাজ দিই, করবে? দুর্গা ফ্যামিলি’র সব সদস্যের বাহন পাল্টে দাও দেখি। সেই এক সিংহ আর ইঁদুর নিয়ে কত দিন চলে? এঁকে পাঠাও তোমাদের পছন্দের বাহন। বেছে নিতে পারো যে কোনও এক জন দেবতাকে। বাহন হতে পারে যা ইচ্ছে, তবে সেটা যেন দেবতার সঙ্গে মানানসই হয়। পাঠিয়ে দাও ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে।
|
খামের উপর লেখো:
সেপ্টেম্বরের জিনিয়াস জিন্দাবাদ,
রবিবারের আনন্দমেলা,
আনন্দবাজার পত্রিকা,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা ৭০০০০১ |
|
|
|
|
|
|
|