তপ্ত নয়াগ্রাম
‘শাসক’ তৃণমূলের সঙ্গে সংঘাতে ‘মাওবাদী-সংগঠন’
শাসকদল বদলেছে। আক্রমণের লক্ষ্যও তাই বদলাচ্ছে মাওবাদী ও তাদের সহযোগীরা। জঙ্গলমহলে এত দিনের ‘সিপিএম বনাম মাওবাদী’ সমীকরণ বদলে যাচ্ছে তৃণমূল-মাওবাদী সংঘাতে।
বৃহস্পতিবার রাতে ঝাড়গ্রামের নয়াগ্রাম ব্লকের বড়খাঁকড়ির বড়ডাঙা গ্রামে একদল ‘সশস্ত্র’ লোক তৃণমূল সমর্থকদের চারটি বাড়িতে হামলা চালায়। ঘণ্টাখানেক ধরে চলে ভাঙচুর, লুঠ, অগ্নিসংযোগ। গুলিও চলে বলে অভিযোগ। আক্রান্ত হন মহিলারাও। জখম এক মহিলা ও এক বৃদ্ধ-সহ ৪ জনকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করতে হয়েছে। গভীর রাতেই ৬ কিলোমিটার দূরের নাকবিন্ধি শিবির থেকে যৌথ বাহিনী বড়ডাঙায় আসে। গ্রামে বাহিনীর স্থায়ী শিবিরের দাবি তুলেছেন তৃণমূল সমর্থকেরা। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি উজ্জ্বল দত্ত-র দাবি, “মাওবাদীদের মদতপুষ্ট সংগঠন ‘অগ্রগামী কৃষক-মজুর ঐক্য’ই হামলা চালিয়েছে। প্রতিবাদে শুক্রবারই আমরা মিছিল করেছি।” সেই মিছিল থেকে আবার তাঁদের সদস্য-সমর্থকদের বাড়িতে-দোকানে ভাঙচুর-লুঠপাট চালানো হয়েছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেন ‘কৃষক-মজুর ঐক্য’র মুখপাত্র দিলসান মুর্মু। তাঁর দাবি, “অত্যাচার-বঞ্চনার বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা এলাকাবাসীর গণ-আন্দোলনকে ভাঙার জন্যই মিথ্যা মাওবাদী তকমা দেওয়া হচ্ছে আমাদের।” দিলসানদের সংগঠনের আরও কয়েক জনের বক্তব্য, “এলাকায় একাধিপত্য কায়েম করতে চাইছে শাসকদল। যে কোনও বিরোধিতাকে নির্মূল করতে পুলিশ-সিআরপি দিয়ে দমনপীড়ন চালানোর সুযোগ খুঁজছে। নিজেদের গোলমালকেও মাওবাদী-সন্ত্রাস বলে প্রচার করছে।” ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার গৌরব শর্মা জানান, বৃহস্পতিবার রাতে হামলায় জড়িত সন্দেহে রজনীকান্ত বারিক নামে এক যুবক গ্রেফতার হয়েছে।
জখম তৃণমূল সমর্থক। -নিজস্ব চিত্র
এক সময়ের ‘লালদুর্গ’ নয়াগ্রামে মাওবাদী সক্রিয়তার সূত্রেই কোণঠাসা হয় সিপিএম। উত্থান হয় তৃণমূলের। বিধানসভা ভোটের আগে পর্যন্ত তৃণমূল-সহ সিপিএম-বিরোধী শক্তিগুলির অলিখিত বোঝাপড়া ছিল। পালাবদলের পরেই ‘শাসক’ তৃণমূল ‘নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণ’ প্রতিষ্ঠায় তৎপর হয়। ‘অগ্রগামী কৃষক-মজুর ঐক্য’র মতো সংগঠন ‘জমি’ ছাড়তে রাজি হয়নি। তাই সংঘাত। পরিস্থিতি এমন যে তৃণমূল ব্লক সভাপতি উজ্জ্বল দত্ত বড়ডাঙারই নোয়াসাই গ্রামে বাড়িতে থাকতে পারছেন না। ৭ জুলাই বড়খাঁকড়ির থুরিয়া গ্রামে তৃণমূলের ব্লক সাধারণ সম্পাদক অর্ধেন্দু পাত্রের বাড়িতেও হামলা হয়েছিল। সে সময়েও অভিযোগ ওঠে কৃষক-মজুর ঐক্য’র বিরুদ্ধেই। এই সংগঠনটির লোকজনকে এর পর তৃণমূলের হুমকির মুখে পড়তে হয় বলে অভিযোগ।
বৃহস্পতিবার রাতে লালগড়ের বেলাটিকরি অঞ্চলের গোপীনাথপুরেও তৃণমূলের বিরুদ্ধে ঝাড়খণ্ডি এক ছাত্রনেতার বাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে। কমলেশ মাহাতো নামে ওই ছাত্রনেতা বিধানসভা নির্বাচনে জনগণের কমিটির নেতা ছত্রধর মাহাতোর পক্ষে প্রচার চালান। সে কারণেই হামলা বলে অভিযোগ। কমলেশ বৃহস্পতিবার রাতে বাড়িতে ছিলেন না। তাঁর ভাইকে মারধর করে হামলাকারীরা। কমলেশকে খুন করার হুমকিও দেয় বলে অভিযোগ।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.