অস্ত্র পাওয়া যেতে পারে সন্দেহে বেনাচাপড়ায় সুশান্ত ঘোষের বাড়ির পিছনের পুকুরে শুক্রবার লোক নামিয়ে তল্লাশি চালাল সিআইডি। প্রায় একই সময়ে কেশপুরে সিপিএমের ‘প্রভাবশালী’ নেতা এন্তাজ আলির বাড়িতেও অভিযান চালায় সিআইডি-র একটি দল। গড়বেতার সিপিএম নেতা শঙ্কর সাউয়ের বাড়ির পিছনের পুকুরেও তল্লাশি করা হয়। তবে কোনও জায়গা থেকেই কিছু মেলেনি।
সিআইডি-র সন্দেহ ছিল, গড়বেতা থানা এলাকার বেনাচাপড়ায় প্রাক্তন মন্ত্রীর বাড়ির পিছনে পুকুরের তলায় বস্তা ভরে অস্ত্র লুকিয়ে রাখা হয়ে থাকতে পারে। স্থানীয় চার যুবককে পুকুরে নামিয়ে তল্লাশি চালাতে বলা হয় সিআইডি-র তরফে। তাঁরা কেউই কিছু পাননি। পুকুরে কিছু বাঁশ পোঁতা থাকায় এবং তালগাছের গুঁড়ি থাকায় জাল ফেলাও সম্ভব হয়নি। বেনাচাপড়ায় সুশান্তবাবুর বাড়িতে ওই সিপিএম নেতার মা মৃন্ময়ী ঘোষ ছাড়াও সুশান্তবাবুর জেঠিমা, জেঠতুতো ভাই নিমাই ঘোষ ও তাঁর স্ত্রী এবং ছেলে থাকেন। নিমাইবাবুর ছেলে সুমন আগামী বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে। সিআইডি অফিসারেরা তার সঙ্গে কিছু ক্ষণ কথা বলেন।
কেশপুরের চড়কায় সিপিএমের জোনাল কমিটির সদস্য এন্তাজ আলির বাড়িতেও আচমকা হানা দেয় সিআইডি-র একটি দল। এন্তাজ এখন এলাকায় নেই। স্থানীয় সূত্রের দাবি, তাঁর স্ত্রী সায়রা বিবি রয়েছেন মেদিনীপুর শহরে। গ্রামের বাড়িতে এন্তাজের চার ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেন অফিসারেরা। বাড়িটিতে তল্লাশিও করা হয়। অফিসারেরা জানতে চান, এন্তাজের সঙ্গে সম্প্রতি তাঁর ভাইদের কোনও যোগাযোগ হয়েছে কি না, হয়ে থাকলে কবে হয়েছে। ওই সিপিএম নেতার ভাইদের গোয়েন্দারা বলেন, এন্তাজের সঙ্গে যোগাযোগ হলে তাঁরা যেন তাঁকে খড়্গপুরে সিআইডি-র অফিসে গিয়ে দেখা করারপরামর্শ দেন। |
কঙ্কাল-কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত, গড়বেতার বীরসিংহপুরের বাসিন্দা প্রাক্তন স্কুল শিক্ষক শঙ্কর সাউয়ের বাড়িতেও এ দিন অভিযান চালায় সিআইডি। সুশান্ত ঘোষের ‘খুবই ঘনিষ্ঠ’ এই ‘দাপুটে’ সিপিএম নেতাও বিধানসভা নির্বাচনের ফল বেরনোর পর থেকেই এলাকায় নেই। বাড়িতে তাঁর দুই ছেলে ছিলেন। বাড়িটিতে তল্লাশি চালানোর পাশাপাশি শঙ্করবাবুর ছেলেদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। শঙ্করবাবুর বাড়ির পিছনের পুকুরেও এ দিন লোক নামিয়ে দেখা হয়, সেখানে কোনও অস্ত্র লুকনো রয়েছে কি না। গড়বেতার গোলোকদেরআইমা গ্রামে ‘সুশান্ত-ঘনিষ্ঠ’ সিপিএম নেতা সুদর্শন কোলার বাড়িতেও যান সিআইডি অফিসারেরা। বাড়িতে ঢুকেই অস্ত্রের খোঁজে শুরু হয় তল্লাশি। কিছুই মেলেনি। সুদর্শনবাবুর স্ত্রী অপর্ণাদেবী সিআইডি-র অফিসারদের বলেন, “নির্বাচনের পর থেকে আমার স্বামী আর ঘরে থাকেন না। মাসখানেক আগে আমার সঙ্গে
শেষ বার ফোনে কথা হয়েছিল। সেই সময়ে উনি আসানসোলে ছিলেন।” সিআইডি-র যে দলটি এ দিন কেশপুরে গিয়েছিল তারা এন্তাজ আলি ছাড়াও সিপিএম নেতা কাসেম আলি, নুরুল ইসলাম, আরিফুল ইসলাম, শেখ আব্বাস, শেখ আরফিনের বাড়িতেও যায়। হাড়গোড়-কাণ্ডে যে ৪০ জনের নামে এফআইআর হয়েছে, তাতে ওই সিপিএম নেতাদের নাম রয়েছে। তবে কারও বাড়ি থেকেই কিছু পাওয়া যায়নি। ওই সিপিএম নেতারাও কেউ এলাকায় নেই।
অন্য দিকে, হাড়গোড়-কাণ্ডে কেশপুরের খেতুয়া থেকে মঙ্গলবার ধৃত সিপিএম নেতা কালীদাস চৌধুরীকে এ দিন মেদিনীপুর আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক ৭ দিন জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দেন। |