পূর্ব কলকাতা: লেকটাউন, বারাসাত
দুর্ভোগ
জলমগ্ন পাড়া
পরিকল্পিত নিকাশি ব্যবস্থার দরুন একটানা বৃষ্টিতে কার্যত নাজেহাল উত্তর দমদম পুরসভার বিশরপাড়া এলাকার ৩ ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় ৮ হাজার বাসিন্দা। কাউন্সিলর থেকে বাসিন্দা সকলেরই অভিযোগ, বৃষ্টির জমা জল নিকাশির জন্য জনবসতি এলাকার মধ্যে প্রধান নর্দমা ছাড়া আর কোনও পাকা নর্দমা নেই। তাই বর্ষার মরসুম শেষ হওয়ার পরেও দুর্ভোগ কাটবে না।
পুরসভা সূত্রে খবর, পরিকল্পনা অনুযায়ী এই দু’টি ওয়ার্ডের পাকা নর্দমার জল গিয়ে পড়ার কথা ফতেসা ও নোয়াই খালে। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, একে খাল দু’টির নাব্যতা কমে গিয়েছে তার উপর প্রধান নর্দমাটিকে অপরিকল্পিত ভাবে তৈরি করা হয়েছে। ফলে জমা জল খালে গিয়ে পড়ে না।
৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৃণমূলের সুলতানা বানু বলেন, “জল নিকাশির জন্য পুরসভা পরিকল্পনামাফিক নর্দমা তৈরি করেনি। ফলে এই এলাকার জল বেরোচ্ছে না।” ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর উত্তম অধিকারী বলেন, “বিশরপাড়া অতীতে পঞ্চায়েত এলাকা ছিল। তাই এই এলাকা এত অনুন্নত। উন্নয়নের জন্য আসা সরকারি টাকাও যথেষ্টই কম।”

গত কয়েক দিন ধরে একটানা ভারী বৃষ্টিতে সপ্তগ্রাম, উত্তর সপ্তগ্রাম, সাবিত্রী পল্লি এলাকার রাস্তা, বাড়ির উঠোন, ঘরের ভিতর হাঁটু জল জমে আছে। বাসিন্দারা ঘরের মধ্যে খাট ইট দিয়ে উঁচু করে বাস করছেন। কেউ কেউ আবার খাটের উপর সংসারের জিনিসপত্র রেখে অন্যত্র ঠাঁই নিয়েছেন। জলমগ্নতার এই ছবিই দেখা যাবে চার নম্বর ওয়ার্ডের বড় ও ছোট ফিঙে এবং মিলনগড় এলাকায়।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, জল জমে থাকার মূল কারণ অপরিকল্পিত ভাবে নর্দমা তৈরি করা। খাল ও প্রধান নর্দমার গভীরতা সমান হওয়ায় সোদপুর, বিলকান্দা ও নিউব্যারাকপুর এলাকার জল খাল দিয়ে বয়ে যাওয়ার সময় বড় নর্দমা দিয়ে জল উল্টো বিশরপাড়ার নিচু এলাকার জনবসতির মধ্যে ঢুকছে। আর বাসিন্দাদের ভুগতে হচ্ছে। বাসিন্দা সঞ্জীব দে বলেন, “নোংরা দূষিত জলে যাতায়াত করতে হচ্ছে। ফলে পায়ে চর্ম রোগ ছাড়াও জলবাহিত রোগ দেখা দিচ্ছে।”
বাসিন্দাদের অভিযোগ, নলকূপগুলি জলে ঢুবে আছে। পাড়ার ভিতরকার রাস্তা ডুবে থাকার ফলে কেউ কেউ বাড়ি ও রাস্তার মধ্যে বাঁশের সাঁকো তৈরি করেছেন। সেতুর উপর দিয়ে শিশুদের কোলে নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে মহিলাদের।
উত্তর দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান সিপিএমের সুনীল চক্রবর্তী বলেন, “ওই দুই ওয়ার্ডের প্রধান নর্দমাগুলি তৈরির সময় ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে কাউন্সিলররাও ছিলেন। তখন তাঁরা কোনও আপত্তি করেননি। পাশাপাশি ওই দুই ওয়ার্ডের মধ্য দিয়ে একাধিক নর্দমা তৈরি করলে এই অবস্থা হত না। কিন্তু তখন জমি অধিগ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। এখন বাসিন্দারা জানিয়েছেন তাঁরা জমি দিতে ইচ্ছুক।”

ছবি: সুদীপ ঘোষ




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.