|
|
|
|
|
|
সমাধান সুদূর |
বাজারের জটে |
দেবাশিস ঘোষ |
বাজার ছেড়ে বিক্রেতারা রাস্তায় নেমে এসেছেন। ফলে সরু রাস্তা আরও সঙ্কীর্ণ হয়ে পড়েছে। তাই রাস্তায় যানজট লেগেই থাকে। ব্যস্ত সময়ে সমস্যা চরমে ওঠে। এমন অবস্থা হাওড়ার
কালীবাবুর বাজারের।
কালীবাবুর বাজারের পাশের ভ্যাটটি ঠিকমতো পরিষ্কার করা হয় না। ফলে চার পাশে নোংরা ছড়িয়ে থাকে। তাই বাজার সংলগ্ন নেতাজি সুভাষ রোড, সিদ্ধেশ্বরীতলা লেন ও গিরীশ ব্যানার্জি লেন দিয়ে তীব্র দুর্গন্ধের মধ্যে যাতায়াত করতে হয়। স্থানীয় বাসিন্দা ও নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, সব কিছু জেনেও পুর-কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা নেননি।
বাজার সংলগ্ন নেতাজি সুভাষ রোড দিয়ে ৫২ ও ৫৮ নম্বর রুটের বাস, রামরাজাতলা-রাজাবাজার, আমতলা এবং রাজাবাজার রুটের মিনিবাস চলে। চলাচল করে ট্যাক্সি, গাড়ি, মোটরসাইকেল এবং রিকশাও। যানবাহনের গতি বাড়ানোর জন্য রাস্তাটিকে একমুখী করা হয়েছে। কিন্তু রাস্তায় বসা বাজার এবং মূল বাজারের পাশের ভ্যাটটির জন্য যান চলাচলের গতি খুবই কম থাকে। যানজট লেগেই থাকে।
নেতাজি সুভাষ রোড ছাড়াও কালীবাবুর বাজার সংলগ্ন সিদ্ধেশ্বরী তলা লেন, গিরীশ ব্যানার্জি লেনেও ছড়িয়ে পড়েছে। ১৪-১৫ ফুট চওড়া রাস্তায় ত্রেতা-বিক্রেতার ভিড়ের মধ্যে কষ্ট করে যাতায়াত করতে হয়। স্থানীয় বাসিন্দা ইন্দ্রনীল দে বলেন, “সকালে বাজারের জন্য যানজট লেগে যায়। অ্যাম্বুলেন্সও অনেক ক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে। আমরা বহু বার স্থানীয় প্রশাসনের কাছে রাস্তাটি পরিষ্কারে জন্য আবেদন করেছিলাম। কোনও কাজ হয়নি।” কালীবাবুর বাজারের এই বর্ধিত অংশ ১৮, ২৭ এবং ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে পড়ে। |
|
১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কংগ্রেসের সীমা নস্কর বলেন, “গিরীশ ব্যানার্জি লেন ও কৃষ্ণকমল ভট্টাচার্য লেনের দু’পাশে বসা বাজারের জন্য সকালে রিকশা পর্যন্ত ঢুকতে পারে না। রাস্তার পাশের অনেক দোকান নর্দমা দখল করে ছাউনি বাড়িয়ে নিয়েছে। এমনকী ক্লাবও গজিয়ে উঠেছে। এ জন্য নিকাশি নালাগুলিও ভাল করে পরিষ্কার করা যায় না। মেয়রকে বহু বার বলেছি। কিছুই হয়নি।” ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং মেয়র পারিষদের সদস্য (সাফাই) দেবাশিস ঘোষ বলেন, “পুরসভার সাফাই বিভাগে যথেষ্ট সংখ্যক কর্মী নেই। তবুও এখানকার ভ্যাটের ময়লা সকাল ১০টার মধ্যে পরিষ্কার করে নিয়ে যাওয়া হয়। নেতাজি সুভাষ রোডের দোকানগুলির আবর্জনাও পড়ে। নির্দিষ্ট সময়ে ময়লা না ফেললে সমস্যা হয়। সাধারণ মানুষেরও এ ব্যাপারে সচেতন
হওয়া দরকার।”
বাজার সমিতির সচিব প্রভাসকুমার সামন্ত বলেন, “রাস্তায় বসা বাজারের বিষয়ে পুরসভা ও মালিকদের সঙ্গে আগে কথা হয়েছিল। কিন্তু কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।” মালিকপক্ষের অন্যতম রবীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “শরিকি সমস্যার জন্য আপাতত বাজারটির নিয়ে কোনও পরিকল্পনা নেই।”
পুরসভার মেয়র মমতা জয়সওয়াল বলেন, “রাস্তায় বাজার বসার জন্য সমস্যা হয়। অনেক দিন আগে বাজারটির উন্নয়নের জন্য মালিকদের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। কিন্তু শরিকি সমস্যা থাকায় কিছু হয়নি। আশেপাশে ফাঁকা জায়গা না থাকায় রাস্তার ব্যবসায়ীদের অন্যত্র নিয়ে যাওয়া আপাতত সম্ভব হচ্ছে না।” হাওড়ার পুলিশ সুপার রবীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, “বাজারের জন্য ওই অঞ্চলে যানজট হয়। পুলিশ রাস্তা থেকে বাজার উচ্ছেদ করলেও কিছু দিন পরে আবার বাজার বসে যায়। হাওড়ার অনেক জায়গায় এমন সমস্যা আছে। এটি আর্থ-সামাজিক সমস্যা। সবাইকে উদ্যোগী হতে হবে।”
|
ছবি রণজিৎ নন্দী |
|
|
|
|
|